বাংলাদেশে মন্থর উইকেটের চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে হেনরি

“আমার জন্য এটি চ্যালেঞ্জিং। আমার ব্যাটিং কেমন হচ্ছে, তা দেখানোর সুযোগ। আশা করি, ওপেনিংয়ে ব্যাট করব…”, এটুকু বলেই হাসতে হাসতে হাত দিয়ে মুখ ঢাকলেন ম্যাট হেনরি। ওপেনারের বদলি হিসেবে বাংলাদেশ সফরে সুযোগ পেয়েছেন বটে, তবে তিনি তো ব্যাটসম্যানই নন! মজাটুকু শেষে তাই মন দিলেন তিনি নিজের আসল ভূমিকায়। বাংলাদেশের ধীরগতির উইকেট পেসারদের কাজ কঠিন হলেও নিউ জিল্যান্ডের এই পেসার বললেন, চ্যালেঞ্জটা নিতে তিনি প্রস্তুত।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 August 2021, 07:24 AM
Updated : 27 August 2021, 07:24 AM

ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ওপেনিংয়ে ব্যাট করা নিয়ে যেমন নাটক করলেন খানিকটা, হেনরির দলে ডাক পাওয়াও তেমনি নাটকীয়। নিউ জিল্যান্ড টি-টোয়েন্টি দলে তিনি অনুপস্থিত সাড়ে চার বছর ধরে। ছিলেন না বাংলাদেশ সফরেও। এই সফরের শেষ দিকে তার ঢাকায় আসার কথা ছিল পাকিস্তান সফরের জন্য স্কোয়াডে যোগ দিতে। পাকিস্তানে ওয়ানডে সিরিজের দলে আছেন তিনি আগে থেকেই।

কিন্তু প্রত্যাশার আগেই বাংলাদেশে আসতে হচ্ছে তাকে। ঢাকায় আসার দুই দিন পর কোভিড পজিটিভ হওয়া ওপেনার ফিন অ্যালেনের বদলি হিসেবে শুক্রবার হেনরির নাম জানায় নিউ জিল্যান্ড।

ওপেনারের বদলি একজন পেসার, বেশ বিস্ময়করই। নিউ জিল্যান্ডের কোচ গ্যারি স্টেড জানান, কোভিড টিকার দুই ডোজ নেওয়া, দেশে ফেরার পর এমআইকিউ (ম্যানেজমেন্ট আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন) বেড নিশ্চিত এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে সফরের জন্য তৈরি থাকা, সবকিছু মিলিয়েই হেনরিকে বেছে নেন তারা।

হেনরির অবশ্য তাতে আপত্তির কারণ নেই। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বললেন, এতদিন পর টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পেয়ে তিনি উচ্ছ্বসিত।

“দিন দুয়েক আগে স্টেডির (স্টেড) কাছ থেকে ফোনকল পাই। তিনি আমাকে পরিস্থিতি জানান। ফিনের (অ্যালেন) কথা জেনে অবশ্যই খারাপ লেগেছে। তবে মনে হচ্ছে, সে বেশ ভালো আছে। আমার জন্য এটি রোমাঞ্চকর সুযোগ।”

“…অবশ্যই এটা একইরকম বদলি হয়নি। তবে আমার জন্য ভালো সুযোগ। পাকিস্তান সফরের জন্য যেতামই আমি, এখন আরেকটু আগে বাংলাদেশে যেতে হচ্ছে। আমি আসলে ছেলেদের সঙ্গে যোগ দিতে মুখিয়ে আছি।”

বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১০টি ম্যাচ এখনও পর্যন্ত খেলেছেন হেনরি। কিন্তু কোনোটিই বাংলাদেশে নয়। এই দেশে সফর তার এবারই প্রথম। কন্ডিশন ও উইকেট সম্পর্কে ধারণা তার অবশ্য আছে। নতুন এই চ্যালেঞ্জে ভালো করতে বিশ্বাসের কমতি নেই ২৯ বছর বয়সী পেসারের।

“বাংলাদেশে আগে কখনও যাইনি, এবারই প্রথম। তবে অনেক কথা হয়েছে ওখানে খেলা নিয়ে। ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে খেলেছি। উপমহাদেশের কন্ডিশনের স্বাদ তাই পেয়েছি। অনেক আত্মবিশ্বাস নিয়েই তাই যাচ্ছি। ওদের সবশেষ সিরিজও দেখেছি। লো-স্কোরিং ম্যাচ হয়েছে। অভিজ্ঞতা তাই যথেষ্টই হয়েছে। এখন চ্যালেঞ্জটি নিতে অপেক্ষায় আছি।”

“গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের বিপক্ষে অনেকবারই খেলেছি। তবে সবই আমাদের কন্ডিশনে। এবারের অভিজ্ঞতা অবশ্যই অনেক ভিন্ন হবে। সাম্প্রতিক সিরিজগুলোয় বাংলাদেশ খুব শক্তিশালি দল ছিল। দেশের মাঠে অবশ্য সবসময়ই তারা খুব কঠিন দল হিসেবেই পরিচিত।”

বাংলাদেশ সফরের দলে থাকা ক্রিকেটাররাও বারবারই বলছেন, দেশে তারা খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছেন লিঙ্কনে। প্রস্তুতির সেই তৃপ্তির কথা শোনা গেল হেনরির কণ্ঠেও। জানালেন নিজের বোলিং পরিকল্পনার কথাও।

“লিঙ্কনে ট্রেনিংয়ের বেশ ভালো সুযোগ-সুবিধা পেয়েছি আমরা। মন্থর উইকেটে অনুশীলন করেছি। টার্নিং ও নিচু বাউন্সের উইকেট তৈরি চেষ্টা করে অনুশীলন করা হয়েছে। অবশ্যই গতি বৈচিত্র অনেক ব্যবহার করতে হবে এখানে। স্রেফ বোলিং ও ক্রিকেটের ভিন্ন একটা ধরন। দারুণ চ্যালেঞ্জ হবে।”

বাংলাদেশের কন্ডিশন ও অন্য সব পারিপার্শ্বিকতা নিয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য আদর্শ একজন অবশ্য নিউ জিল্যান্ডে আছেন। বাংলাদেশের সাবেক কোচ শেন জার্গেনসেন অনেকদিন ধরেই কিউইদের বোলিং কোচ। এবারের সফরে অবশ্য নেই জার্গেনসেন। তবে কথা বলে তার কাছ থেকে বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কিছুই জানতে পারছেন হেনরিরা।

“বাংলাদেশের সঙ্গে শেনের (জার্গেনসেন) সম্পর্ক অনেক ঘনিষ্ঠ। এখানে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে, জানাশোনাও অনেক। তার সঙ্গে কথা বলা সবসময়ই দারুণ। তার সঙ্গে সবসময়ই যোগাযোগ হয়, বোলিং পরিকল্পনা নিয়ে কথা হয়। তার কাছ থেকে জানতে পারছি যে এখানে কী আশা করতে পারি, যা দারুণ।”

হেনরিকে অবশ্য সিরিজে প্রথম দিকে পাবে না নিউ জিল্যান্ড। সোমবার নিউ জিল্যান্ড থেকে রওনা হবেন তিনি, ঢাকায় আসবেন মঙ্গলবার। এরপর তিন দিনের কোয়ারেন্টিন। বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ বুধবার ও শুক্রবার।