ব্রেসনানের অভিজ্ঞতায় আর্চারের ভয়

কনুইয়ের চোট শেষ করে দিয়েছিল টিম ব্রেসনানের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। একই সমস্যার সঙ্গে লড়ছেন জফ্রা আর্চারও। কেমন ছিল ইংলিশ অলরাউন্ডারের সেই অধ্যায়, শুনে কিছুটা ঘাবড়ে যান আর্চার। দানা বাঁধে দুশ্চিন্তা। তবে নিজেকে নিয়ে এখনই আশা ছাড়ছেন না ডানহাতি এই পেসার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2021, 03:05 PM
Updated : 25 August 2021, 03:21 PM

২০০৬ সালে টি-টোয়েন্টি দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রেখেছিলেন ব্রেসনান। ওই বছরই হয়ে যায় তার ওয়ানডে অভিষেক। সাদা পোশাকে দেশের হয়ে প্রথম খেলেন তিন বছর পর।

ভালোই চলছিল ক্যারিয়ার। ২০১১ সালে টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে ওঠা ইংল্যান্ড দলের সদস্য ছিলেন তিনি। কিন্তু ভালো সময় বেশিদিন সঙ্গী হলো না তার। বেঁকে বসল কনুই। ওই বছরই করাতে হলো অস্ত্রোপচার। দুই বছর পর শল্যবিদের ছুরিকাঁচির নিচে যেতে হয় আবারও। ২০১৩ সালের পর আর টেস্ট ক্রিকেটে ফেরাই হয়নি ব্রেসনানের।

ক্যারিয়ারে মোট তিনবার অস্ত্রোপচার করানো ব্রেসনান পরে বেশ ভুগেছেন আগের গতিতে বল করতে। সীমিত ওভার ক্রিকেট খেলেছেন আরও দুই বছর। ইংল্যান্ডের হয়ে তার সবশেষ ম্যাচ ২০১৫ সালে, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে।

ব্রেসনানের অভিজ্ঞতা শুনে নিজেকে নিয়ে চিন্তায় পড়লেও আর্চার ফিরে আসতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ডেইলি মেইলে নিজের কলামে এই পেসার লিখেছেন, ২০২২ সালের মার্চে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দিয়ে ফিরতে আশাবাদী তিনি।

“টিম ব্রেসনানের একই সমস্যা ছিল। আমরা এই বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। স্বীকার করতেই হবে এই আলোচনা আমাকে দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল। তবে আমি নিশ্চিত, দীর্ঘমেয়াদে ঠিক হয়ে যাব। আমি কৃতজ্ঞ যে, এই চোট আমাকে দৈনন্দিন কাজ করতে বাধা দেয় না। এটা এমন নয় যে, আমি খোঁড়া হয়ে যাচ্ছি বা ওইরকম কিছু।”

“কনুইয়ে আরেকটি স্ট্রেস ফ্র্যাকচারের কারণে ২০২১ সালের বাকি সময় আমাকে বাইরে থাকতে হবে, যখন খবরটি পেয়েছিলাম সেটা নিতে বেশ কষ্ট হয়েছে। তবে আমি সবসময় মনে করি, সব কিছুই কোনো না কোনো কারণে ঘটে। আর এই চোট ক্যারিয়ার নিয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিচ্ছে না।”

কনুইয়ের এই চোট শেষ করে দিয়েছে আর্চারের ২০২১ সালের বাকি অংশ। চলতি বছর আর মাঠে ফিরতে পারবেন না তিনি।

গত মে মাসে তার ডান কনুইয়ে অস্ত্রোপচার করানো হয়। এরপর গত জুলাইয়ে আবারও মাঠে ফেরেন আর্চার। সাসেক্সের হয়ে খেলেন টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টের একটি ম্যাচ, যেখানে বল করেন তিন ওভার। পরে ওয়ানডে কাপের একটি প্রস্তুতি ম্যাচে ছয় ওভার বোলিং করেন এই পেসার।

আবারও বেঁকে বসে তার কনুই। বেশ অস্বস্তি অনুভব করার কথা জানান আর্চার। পরে স্ক্যানে স্ট্রেস ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে। আর তা এই পেসারকে ছিটকে দেয় পুরো বছরের জন্য।

ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠে চলমান টেস্ট সিরিজ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও বছরের শেষ দিকে অ্যাশেজ সিরিজ খেলতে পারবেন না আর্চার। দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে না পারার হতাশা কাজ করছে তার মাঝে। তবে নিজেকে আরও সময় দিতে চান তিনি।  একই সঙ্গে জানিয়েছেন, এখনই টেস্ট ক্রিকেট থেকে মনোযোগ সরাচ্ছেন না ২৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।

“আমি এর আগেও অনেকবার বলেছি, টেস্ট ক্রিকেট আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্করণ এবং সে জায়গায় কিছুই বদলায়নি। ভারতের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ সিরিজে বসে থাকা, এই শীতে অস্ট্রেলিয়া সফরে যেতে না পারা, বলার অপেক্ষা রাখে না সংযুক্ত আরব আমিরাতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে না পারা হতাশার।”

“যদি আরেকটি স্ট্রেস ফ্র্যাকচারে পড়ি, তাহলে ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গি সম্ভবত বদলাতে হতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি কেবল ২৬ বছর বয়সী এবং আমি মনে করি, টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে আমার সেরা বছর সামনে আসছে।”