বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ দেখে ‘শিক্ষা নিয়েছে’ নিউ জিল্যান্ড

বাংলাদেশের কন্ডিশনে মুখ থুবড়ে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। কোনোমতে এড়াতে পারে হোয়াইটওয়াশ। প্রতিবেশী দেশটির পরিণতি দেখেছে নিউ জিল্যান্ড। এবার তাদের সামনেও একই চ্যালেঞ্জ। কঠিন সেই চ্যালেঞ্জ জিততে নিজেদের প্রস্তুত মনে করছেন নিউ জিল্যান্ড টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান হেনরি নিকোলস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 August 2021, 04:44 PM
Updated : 23 August 2021, 05:57 PM

চলতি মাসের শুরুতে বাংলাদেশ সফরে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। ৭ দিনের মধ্যে তারা খেলে পাঁচটি টি-টোয়েন্টি। যেখানে একদমই লড়াই করতে পারেনি সফরকারীরা। সিরিজটি হেরে যায় তারা ৪-১ ব্যবধানে।

সফরের আগে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে স্বাভাবিকভাবেই নজর রেখেছে নিউ জিল্যান্ড। ঘরের মাঠে প্রতিপক্ষের এমন দাপট কিছুটা ভাবাচ্ছে তাদেরও, বলছেন লম্বা সময় পর টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা পাওয়া নিকোলস।

“আসলে তাদের (অস্ট্রেলিয়া) সেখানে (বাংলাদেশে) খেলতে দেখা আমাদের জন্য ভালো হয়েছে। আমরা এখানে (নিউ জিল্যান্ডে) যে টি-টোয়েন্টি খেলি, সম্ভবত সেখানের ক্রিকেট ভিন্ন। কম রানের ম্যাচ হয় ও উইকেট কিছুটা চ্যালেঞ্জিং।”

২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে কলকাতায় এই সংস্করণে অভিষেক হয় নিকোলসের। এরপর গত পাঁচ বছরে কেবল আর ৪ ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছে তার, সবশেষ ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে।

অভিষেক ম্যাচে মুস্তাফিজুর রহমানের দারুণ এক স্লোয়ার কাটারে বোল্ড হয়ে গিয়েছিলেন নিকোলস। ওই ম্যাচে বল হাতে জ্বলে উঠেছিলেন বাংলাদেশের বাঁহাতি এই পেসার। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং তিনি করেছিলেন ওই ম্যাচেই, ২২ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও দুর্দান্ত ছিলেন মুস্তাফিজ। সফরকারী ব্যাটসম্যানদের জন্য তিনি হয়ে উঠেছিলেন ভয়ঙ্কর। বারবার তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ানদের অনেকে। পাঁচ ম্যাচে ওভার প্রতি মাত্র ৩.৫২ রান দিয়ে নিয়েছেন ৭ উইকেট।

নিজের বোলিং স্কিলের সঙ্গে মুস্তাফিজ পেয়েছিলেন কন্ডিশনের সহায়তা। নিকোলস জানিয়েছেন, বাংলাদেশের কঠিন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে লিঙ্কন ও মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে ক্যাম্প করেছেন তারা। যেখানে স্পিনাররা পেয়ে থাকে কিছুটা সহায়তা।

“হ্যাঁ, এটাই মাউন্ট ও লিঙ্কনের সৌন্দর্য। ছেলেরা ঘরের বাইরে সফরের আগে এখান থেকে তৈরি হয়ে যেতে পারে। আগে সফরে গেলে নতুন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তিন-চার দিন সময় পাওয়া যেত। এখন আমরা সেটার জন্য দুই সপ্তাহ সময় পাই। বোলারদের জন্যও ওইসব কন্ডিশনে সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া সুযোগ এটি।”

বাংলাদেশের বিপক্ষে বাজেভাবে হেরে যাওয়া সিরিজে অস্ট্রেলিয়া সর্বোচ্চ রান করতে পেরেছিল কেবল ১২১। মিরপুরের মন্থর উইকেটে রান তোলা কতটা কঠিন, এখান থেকে টের পাচ্ছে নিউ জিল্যান্ড।

নিকোলস জানালেন, অস্ট্রেলিয়া সিরিজ দেখা তাদের জন্য বড় একটা শিক্ষা। আর সেটা কাজে লাগিয়ে এবং নিজেদের সামর্থ্যের পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ কিছু করতে চান তারা।

“সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার দিকে তাকালে, আমার মনে হয় তাদের সর্বোচ্চ রান ছিল ১৩০ (১২১), আর এখানে (নিউ জিল্যান্ডে) ১৮০ রান হচ্ছে মানদণ্ড। তাই, ব্যাটসম্যান হিসেবে মাথায় রাখতে হবে সেটা এবং মনে রাখতে হয়, এই কন্ডিশন কিছুটা কঠিন।”

“আমরা এই সিরিজের জন্য ভালোভাবেই প্রস্তুত। আর বাড়তি পাওয়া হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার খেলা দেখা। আমার মনে হয়, তারা যেভাবে খেলার চেষ্টা করেছে, যেমনটা তারা খেলেছে, সেটা সফল হয়নি। দল হিসেবে এটা আমাদের জন্য ভালো একটি শিক্ষা। যেমনটা আমি বলেছি, উড়াল দেওয়ার আগে গত দুই সপ্তাহে আমরা ভালো ক্যাম্প করেছি।”

মঙ্গলবার ঢাকায় এসে পৌঁছাবে নিউ জিল্যান্ড দল। এরপর তিন দিন থাকতে হবে কোয়ারেন্টিনে। এরপর মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন করবে তারা। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মতো এই মাঠেই হবে নিউ জিল্যান্ডের সবগুলো ম্যাচ।

আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে মাঠের লড়াই। সিরিজের বাকি চার টি-টোয়েন্টি ৩, ৫, ৮ ও ১০ সেপ্টেম্বর।