২২ গজের সঙ্গীর হয়ে বাইরেও ব্যাট করলেন হেইডেন

ক্রিকেট মাঠে অনেক লড়াইয়ের সহযোদ্ধা দুজন। ম্যাচের পর ম্যাচ দুজন মিলে অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিয়েছেন দুর্দান্ত শুরু। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গুঁড়িয়েছেন প্রতিপক্ষের বোলিং। দুজনের জুটি হয়ে আছে কিংবদন্তি। সময়ের পালায় এখন আর ২২ গজের সঙ্গী নন জাস্টিন ল্যাঙ্গার ও ম্যাথু হেইডেন। তবে আজ যখন ল্যাঙ্গারের কিছুটা দুঃসময়, ঠিকই তাকে সঙ্গ দিলেন হেইডেন। সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার তার ব্যাটিংয়ের মতোই আক্রমণাত্মক ভাষায় উড়িয়ে দিলেন ল্যাঙ্গারের সমালোচকদের।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2021, 07:32 AM
Updated : 21 August 2021, 08:56 AM

ক্রিকেটের সঙ্গে হেইডেনের সংযোগ এখন ধারাভাষ্যকার ও বিশ্লেষক হিসেবে। ল্যাঙ্গার বেছে নিয়েছেন কোচিংয়ের চ্যালেঞ্জিং পথ। তবে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলের কোচ হিসেবে সময়টা ভালো যাচ্ছে না তার।

সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশে বাজেভাবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। মাঠের পারফরম্যান্সে খুব ধারাবাহিকতা তাদের নেই। র‌্যাঙ্কিংয়ে বরাবরই যাদের লক্ষ্য থাকে শীর্ষস্থান, তারা সেরা দুইয়ে নেই কোনো সংস্করণেই।

তবে ল্যাঙ্গারকে নিয়ে মূল সমালোচনা তার কোচিংয়ের ধরন, ক্রিকেটারদের সামলানো ও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে। তার ধরন নিয়ে সিনিয়র ক্রিকেটারদের অসন্তোষের খবর নানা সময়েই উঠে এসেছে খবরে। বাংলাদেশে হারার পর নতুন করে আবার আলোচিত হচ্ছে সেসব।

এসব দেখেই বেজায় চটেছেন হেইডেন। এসইএন রেডিওতে তিনি বললেন, ল্যাঙ্গারকে এসবে কাবু করা যাবে না।

“অনেক ব্যাপার যেগুলো বেরিয়ে আসছে, একশর বেশি টেস্ট খেলা একজনের প্রতি যা পুরোপুরি অসম্মানের। আমি তাকে চূড়ান্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে দেখেছি। প্রচণ্ড গরমে কিংবা সময়ের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বোলিং আক্রমণের সামনে এবং আরও কঠিন অবস্থায়। কিন্তু সে অদম্য।”

“মানসিকভাবে সে অনেক শক্ত। স্ত্রী ও দারুণ চারটি বাচ্চা রেখে সে দলের দায়িত্ব পালন করছে। তার পরও এসব ফালতু কথা শুনতে হচ্ছে তাকে।”

অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট অধিনায়ক টিম পেইন অবশ্য বলেছেন, তাদের সঙ্গে ল্যাঙ্গারের জরুরি অনলাইন বৈঠকের পর সমস্যা আপাতত কেটে গেছে। ক্রিকেটারদের অসন্তোষের পর আগেও এরকম আলোচনা হয়েছে তাদের। হেইডেন এসব দেখে অবাক। কোচের ক্ষেত্রে ক্রিকেটারদের এমন সম্পৃক্ততা তিনি মানতেই পারছেন না।

“জাস্টিন ল্যাঙ্গারের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিনিয়র ক্রিকেটারদের মধ্যে আলোচনাও হাস্যকর। তোমরা টেস্ট ক্রিকেটে তিন নম্বর দল, ওয়ানডেতেও তিন নম্বর, টি-টোয়েন্টিতে ৬ নম্বর। এসব নিয়ে আলোচনা করলে কেমন হয়?”

“খেলাটার একজন কিংবদন্তি, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট ও সংস্কৃতির প্রতি যার আবেগ তীব্র, তার পেছনে লাগার চেয়ে খেলার উন্নতির পেছনে শক্তি ও সময় ব্যয় করো।”

হেইডেন মনে করিয়ে দিয়েছেন ২০১৮ সালের সেই বল টেম্পারিং কেলেঙ্কারির কথাও। তখন দায়িত্ব নিয়ে কতটা শক্ত হাতে পরিস্থিতি সামলেছেন ল্যাঙ্গার।

“আমাদের চক্রে ছেদ পড়েছিল যখন আমাদের জাতীয় দল ধরা পড়েছিল ও লজ্জা উপহার দিয়েছিল এবং ওই সময়টায় অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটের চারপাশে ছিল আঁধার। এরপর আগমন ল্যাঙ্গারের, যে ওই অবস্থা বদলে দিয়েছিল, সংস্কৃতি ফিরিয়ে এনেছিল এবং আমরা জয়ও পেয়েছি।”

“ল্যাঙ্গার দায়িত্ব নেওয়ার পর দল অনেক পথ পেরিয়ে এসেছে, কারণ সে ব্যাগি গ্রিনের জন্য খেলার মূল্যবোধে সবাইকে আবার উজ্জীবিত করতে পেরেছে।”