তালেবানরা ক্রিকেট থমকে দেবে না, ধারণা রশিদ খানের

তালেবানরা কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর বদলে গেছে আফগানিস্তানের অনেক কিছুই। তবে ক্রিকেট খুব বেশি বদলাবে বলে মনে করেন না রশিদ খান। আফগান ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকার ধারণা, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও তার দেশের ক্রিকেট চলবে আপন গতিতে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 August 2021, 06:16 AM
Updated : 21 August 2021, 08:51 AM

আফগানিস্তানে যখন নাটকীয় পালাবদল চলছে, রশিদ তখন খেলছেন ইংল্যান্ডের ১০০ বলের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ‘দা হানড্রেড’-এ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলে বেড়ান বলে নিজ দেশে তার থাকা হয় খুব কম সময়ই। তবে দেশের ঘটনায় প্রবলভাবেই উদ্বিগ্ন ছিলেন তিনি। সপ্তাহখানেক আগে একটি টুইটে তিনি বিশ্ব নেতাদের অনুরোধ করেন আফগানিস্তানে হত্যা ও নৈরাজ্য বন্ধ করায় উদ্যোগ নিতে।

সেসব এখনও বন্ধ হয়নি। বরং বন্ধ হওয়ার শঙ্কায় ছিল দেশের ক্রিকেট। তবে ধীরে ধীরে সেই কালো মেঘ দূর হচ্ছে। শ্রীলঙ্কায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের জন্য আফগানদের অনুশীলন শুরু হয়েছে আবার। সিরিজটি খেলতে দেশ ছাড়ার প্রস্তুতিও চলছে।

এসব দেখে ক্রিকেট নিয়ে অন্তত আশ্বস্ত হতে পারছেন রশিদ। অস্ট্রেলিয়ার এসইএন রেডিওকে শুক্রবার এই লেগ স্পিনার বললেন, তাদের ক্রিকেট ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলেই তিনি মনে করেন।

“ক্রিকেট খুব বেশি প্রভাবিত হবে না। দেশে সবাই ক্রিকেট ভালোবাসে। খেলাটাকে তারা পছন্দ করে, ক্রিকেটারদের পাশে থাকে এবং সেটা দেখাটা দারুণ।”

“গত কিছুদিনে আমরা কিছু সাক্ষাৎকার (তালেবানদের) দেখেছি। তারা খেলা নিয়ে কথা বলেছেন এবং বলেছেন যে, তাদের কোনো সমস্যা নেই। খেলোয়াড়দের তারা বিশ্বজুড়ে খেলতে ও লড়তে দেখতে চান এবং এটা দেখতে ভালোবাসেন। এই মুহূর্তে তারা ক্রিকেটে সমস্যা দেখছেন না।”

আফগান ক্রিকেট বোর্ডের মিডিয়া অপারেশন্সের প্রধান হিকমত হাসান রয়টার্সকে জানান, ক্রিকেট কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার সবুজ সঙ্কেত তারা পেয়েছেন।

“ক্রিকেট নিয়ে তালেবানদের কোনো সমস্যা নেই। তারা আমাদের বলেছে যে আমরা আমাদের কাজ চালিয়ে নিতে পারি পরিকল্পনা অনুযায়ী। (আগামী মাসে পাকিস্তান সিরিজের জন্য) কাবুলে দুটি ট্রেনিং ক্যাম্প করেছি আমরা, স্পন্সর আছে আমাদের, এমনকি পোশাকও প্রস্তুত।”

আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আফগানদের অংশগ্রহণ নিয়ে কোনো দুর্ভাবনাও দেখছেন না হিকমত। তিনি বরং মনে করেন, দেশের বর্তমান অবস্থায় ক্রিকেটই এনে দিতে পারে কিছুটা আনন্দের উপলক্ষ্য।

“আমাদের বিশ্বাস, আমরা এতে অংশ নিতে পারব এবং সামনে প্রস্তুতিও ঠিকঠাক নিতে পারব। আমার মনে হয় না কোনো সমস্যা হবে।”

“আফগানিস্তানের বর্তমান বাস্তবতায়, এটিই একটি সুযোগ মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার, লোকের মুখে হাসি ফোটানোর এবং দারুণ প্রদর্শনী মেলে ধরার।”

আগামী ৩১ অগাস্ট বাংলাদেশ সফরে আসার কথা আফগানদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। সেই সিরিজের জন্য দুই দলেরই প্রস্তুতি চলছে। আগামী মাসে জাতীয় দলের পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের পর দেশে শুরু হবে তাদের নিয়মিত ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট শাগিজা ক্রিকেট লিগ। সেখানে আগের ছয় দলের সঙ্গে নতুন দুটি দল যোগ করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। আগামী ১০ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর চলবে এই টুর্নামেন্ট।

সব মিলিয়ে আফগান ক্রিকেটের অন্তত স্বাভাবিক গতিতে চলার ইঙ্গিত মিলছে।