জ্যামাইকায় দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাকিস্তানের রান ৪ উইকেটে ২১২। আলোকস্বল্পতায় প্রথম দিনে খেলা হয় কেবল ৭৪ ওভার।
দুর্দান্ত কিছু কাট, ড্রাইভ আর ফ্লিকের প্রদর্শনীতে বাবর খেলেন ৭৫ রানের ইনিংস। টেস্ট ক্যারিয়ারের নতুন অধ্যায়ে অসাধারণ সব গল্প লিখে চলা ফাওয়াদ ৭৬ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন পায়ে ক্র্যাম্প করায়। শতরানের সুযোগ তার আছে এখনও।
চতুর্থ উইকেটে দুজনের জুটিতে আসে ১৫৮ রান।
এই দুজনের দৃঢ়তায় চাপা পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেই চমকপ্রদ শুরু। উইকেটে আগের টেস্টের মতোই ঘাসের ছোঁয়া। স্যাবাইনা পার্কে প্রথম দিনে উইকেটে আর্দ্রতা থাকে বরাবরই। টস জিতে বোলিং নিতে একটুও সময় নেননি পাঁচ পেসার নিয়ে একাদশ সাজানো ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। সাফল্যও ধরা দেয় দ্রুতই।
ম্যাচের তৃতীয় বলেই কেমার রোচের বলে আবিদ আলি ধরা পড়েন স্লিপে। রোচের পরের ওভারেই কিপার জশুয়া দা সিলভার ডাইভিং ক্যাচে আজহার আলি ফেরেন শূন্য রানে। টেস্ট ক্যারিয়ারে তার যা ১৭তম শুন্য।
আরেকপ্রান্তে উইকেট উৎসবে যোগ দেন জেডেন সিলস। অফ স্টাম্প ঘেঁষা ডেলিভারিতে বিদায় করেন ওপেনার ইমরান বাটকে। খেলা শুরুর ৪ ওভারের মধ্যে পাকিস্তানের রান ৩ উইকেটে ২!
নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এর চেয়ে বাজে শুরু তারা করেছে স্রেফ একবারই, ২০০৬ সালে যখন করাচিতে ম্যাচের প্রথম ওভারে ইরফান পাঠানের হ্যাটট্রিকে তাদের রান ছিল ৩ উইকেটে শূন্য।
টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর বাবর ও ফাওয়াদের শুরুটাও ছিল অস্বস্তিময়। রোচ ও সিলস তখন দারুণ বোলিং করছেন। তবে বাবর দ্রুতই অম্বস্তি ঝেরে ফেলেন দারুণ কিছু শট খেলে। বিশেষ করে আলজারি জোসেফের আলগা বোলিংয়ের ফায়দা নেন তিনি। ক্রমে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন ফাওয়াদও।
লাঞ্চ পর্যন্ত দুজন নিরাপদে কাটিয়ে দেন তো বটেই, দ্বিতীয় সেশনেও অটুট থাকে দুজনের জুটি। আলগা বল পেলে কাজে লাগাতে ভুল করেননি দুজন, তাই বাউন্ডারি আসতে তাকে নিয়মিত। ক্যারিবিয়ানদের শুরুর আনন্দ যায় মিলিয়ে।
রোচের বলে বাউন্ডারিতে বাবরের ফিফটি আসে ৯৬ বলে। ফাওয়াদের রান তখন ৩২। পরে দারুণ কিছু শটে ফাওয়াদ পেছনে ফেলেন দেন বাবরকে। জোসেফের বলে দুই বাউন্ডারিতে তিনি পা রাখেন ফিফটিতে।
এই জুটিকে শেষ পর্যন্ত আলাদা করে প্রচণ্ড গরম। শুরুতে পায়ে ক্র্যাম্প করায় মাঠ ছাড়েন ক্যারিবিয়ান কিপার জশুয়া দা সিলভা, মাঠে নামেন বদলি কিপার। এরপর ১১ চারে ৭৬ রান করা ফাওয়াদও ড্রেসিং রুমে ফেরেন পায়ে ক্র্যাম্প নিয়ে।
একটু পরই বাবরকে হারায় পাকিস্তান। রোচের অফ স্টাম্প ঘেঁষা ডেলিভারিটি ছিল ভালো, স্লিপে জেসন হোল্ডারের ক্যাচটি দুর্দান্ত। ১৩ চারে ৭৫ রানে ফেরেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
এরপর মোহাম্মদ রিজওয়ান ও ফাহিম আশরাফ আর কোনো বিপদ হতে দেননি দলের। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে রান এসেছে ৪৪।
আলোর স্বল্পতায় যখন শেষ হলো খেলা, পাকিস্তানের ইনিংস তখন আঁধার কাটিয়ে আলো ঝলমলে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৭৪ ওভারে ২১২/৪ (আবিদ ১, ইমরান ১, আজহার ০, বাবর ৭৫, ফাওয়াদ (আহত অবসর) ৭৬, রিজওয়ান ২২*, ফাহিম ২৩*; রোচ ১৭-৬-৪৯-৩, সিলস ১১-৩-২৫-১, জোসেফ ১২-১-৫৪-০, হোল্ডার ১৫-৭-২৫-০, মেয়ার্স ১১-৫-১৭-০, চেইস ৭-০-২৭-০, বনার ১-০-৬-০)।