টেস্ট ইতিহাসের রোমাঞ্চকর ম্যাচগুলির উপাখ্যানে নতুন সংযুক্তি হয় রোববার জ্যামাইকায়। শেষ জুটির বীরোচিত ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানকে ১ উইকেটে হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
শেষের নাটকীয়তায় নায়ক ছিলেন রোচ। তার আসল কাজ বোলিংয়েও তিনি ছিলেন যথেষ্ট সফল। ম্যাচে নেন ৫ উইকেট। তবে ম্যাচের রোমাঞ্চকর এক মোড়ে দলকে ভরসা করতে হয় তার ব্যাটিংয়ে। ৯ নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে যখন উইকেটে যান তিনি, ১৬৮ রান তাড়ায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের তখন প্রয়োজন ৩ উইকেট হাতে নিয়ে ৫৪ রান।
সেখান থেকে ছোট ছোট জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন রোচ। শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান জশুয়া দা সিলভা যখন আউট হন, জয় তখনও ২৬ রান দূরে। শেষ দুই ব্যাটসম্যান জোমেল ওয়ারিক্যান ও জেডেন সিলসকে নিয়ে সেই চ্যালেঞ্জ জিতে যান রোচ।
দুই দফায় যদিও তিনি জীবন পান ৫ ও ১৬ রানে। তবে ইতিহাস তো মনে রাখবে তার ম্যাচ জেতানো কীর্তিই। ৩০ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন তিনি দলকে জিতিয়ে। জয়সূচক রান দুটিও আসে তার ব্যাট থেকে।
ম্যাচের পর রোচ বললেন, জয়ের বিশ্বাস নিয়েই উইকেটে গিয়েছিলেন তিনি।
“চেয়েছি স্রেফ ইতিবাচক থাকতে-আমি এমনই। চেষ্টা করেছি, প্রতিটি বল ধরে এগোতে। অনেকটা ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। আমি স্রেফ চেয়েছি ফাঁকা জায়গায় বল ঠেলে দ্রুত দৌড়াতে। নিজের ওপর বিশ্বাস ও আস্থা রেখেছি।”
শেষ ব্যাটসম্যান জেডেন সিলস যখন উইকেটে যান, জয়ের জন্য তখনও প্রয়োজন ১৭ রান। ক্যারিয়ারের মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা এই তরুণ স্রেফ ২ রান করলেও ১৩ বল খেলে দারুণভাবে সঙ্গ দেন রোচকে।
এর আগে বল হাতে ১৯ বছর বয়সী এই তরুণ রেকর্ড গড়েন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সে ৫ উইকেট নিয়ে। ম্যাচে ৮ উইকেট আর ব্যাটিংয়ে শেষের অবদানে ম্যান অব দা ম্যাচ তিনিই।
সিলস উইকেটে যাওয়ার পর তাকে কি পরামর্শ দিয়েছিলেন রোচ? হাসি মুখে রোচ জানালেন উত্তর।
“স্রেফ স্টাম্প বাঁচাও…! সোজা বলই ছিল সবচেয়ে বড় হুমকি। সেই হুমকি থেকে সে ভালোভাবেই বাঁচতে পেরেছে। নিশ্চিতভাবেই সে ভবিষ্যতের তারকা। তার ৫ উইকেট শিকার জয়গান গাইছে আমাদের ক্রিকেটের। তার জন্য শুভ কামনা, দারুণ এক ক্যারিয়ার হোক।”