বাংলাদেশের স্বপ্নময় আর অস্ট্রেলিয়ার দুঃস্বপ্নের সিরিজ

যত দ্রুত সম্ভব, হয়তো বাংলাদেশ সফরের কথা ভুলে যেতে চাইবেন অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা। সিরিজ যেমন কেটেছে, তাতে এটা স্বাভাবিকই। কিন্তু চাইলেও তো সব মুছে দেওয়া যায় না, এই সিরিজের অনেক কিছুই যেমন রেকর্ডের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে। সেগুলো তাদের জন্য যেমন অনাকাঙ্ক্ষিত, তেমন বিব্রতকর।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 August 2021, 05:13 AM
Updated : 10 August 2021, 05:36 AM

মন্থর, নিচু, টার্নিং উইকেট যেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের জন্য ছিল দুঃস্বপ্ন। বিভীষিকার সফর শেষে সোমবার মাঝরাতেই দেশের উদ্দেশে উড়াল দিয়েছেন তারা।

জিম্বাবুয়ে সফর শেষ করে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ মেলেনি বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার বাধ্যবাধকতায় সরাসরি এসে ঢুকেছিলেন হোটেলে। তারা হাসিমুখেই ফিরে যাচ্ছেন বাড়ি। পরিসংখ্যানের পাতায় জায়গা করে নিয়েছে তাদের দারুণ কিছু অর্জন।   

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৬২ রানে গুটিয়ে গিয়ে ৬০ রানে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। তাতে হয়েছে বেশ কিছু রেকর্ড।

৬২

সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার রান ৬২। বাংলাদেশ তো বটেই যেকোনো দলের বিপক্ষেই এই সংস্করণে অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন রান।

আগের সবচেয়ে কম রান ছিল ৭৯, ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাউথ্যাম্পটনে । সেটা ছিল টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার কেবল দ্বিতীয় ম্যাচ।

বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি কোনো দেশের সর্বনিম্ন রান। আগের সবচেয়ে কম রান ছিল আফগানিস্তানের। ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৭২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল তারা।

৮২

সোমবার অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস স্থায়ী হয় কেবল ৮২ বল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন সংস্করণ মিলিয়ে এটা তাদের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ইনিংস।

আগের সবচেয়ে স্বল্পস্থায়ী ইনিংস ছিল ৮৭ বলের, ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ৭৯ রানের ম্যাচে।

১০২

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সাকিব আল হাসানের উইকেট। সবশেষ ম্যাচে চার উইকেট নিয়ে বাঁহাতি এই পেসার পেরিয়ে গেলেন একশ উইকেটের মাইলফলক।

মাত্র দ্বিতীয় বোলার ও প্রথম স্পিনার হিসেবে এই কীর্তি গড়লেন তিনি। শ্রীলঙ্কার পেসার লাসিথ মালিঙ্গা (১০৭) প্রথম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে করেন উইকেটের সেঞ্চুরি।          

৫.৮৫

বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ওভারপ্রতি রান এসেছে ৫.৮৫ করে। একশর বেশি ওভার হয়েছে, এমন ৯৬টি দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে এটাই সর্বনিম্ন।

উইকেট প্রতি গড় কেবল ১৪.৭৩, এই ৯৬ সিরিজে যা দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।

৬০

রানের দিক থেকে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বড় জয়।

সবচেয়ে বড় জয় ছিল ৭১ রানের, ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। বেলফাস্টের সেই ম্যাচে বাংলাদেশ করেছিল ১৯০ রান।

রানের দিক থেকে এটি অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম বড় হার।

নিজেদের সবচেয়ে কম পুঁজি নিয়েও ম্যাচ জয়ের রেকর্ড এই সিরিজে তিনবার ভেঙেছে বাংলাদেশ!

উদ্বোধনী ম্যাচে ১৩১ রান করে জিতেছিল ২৩ রানে। তৃতীয় ম্যাচে ১২৮ রানের লক্ষ্য দিয়ে জিতেছিল ১০ রান। সোমবার ১২২ রান করে পায় ৬০ রানের জয়।

বাংলাদেশের উল্টো অভিজ্ঞতা হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। নিজেদের তিনটি সর্বনিম্ন রান তাড়ায় তারা ব্যর্থ হয়েছে এই সিরিজে।

১০৬.৪

গোটা সিরিজে দুই দলের স্পিনাররা মিলে বল করেছেন ১০৬.৪ ওভার, কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে যা রেকর্ড।

আগের রেকর্ডকে পেছনে ফেলেছে এই সিরিজ চার বলে। গতবছর কুয়ালা লামপুরে মালেয়েশিয়া ও হংকংয়ের ৫ ম্যাচের সিরিজে স্পিনে হয়েছিল ১০৬ ওভার।

এই সিরিজে ৫৭.৪ ওভার স্পিন বোলিং ব্যবহার করেছে বাংলাদেশ, অনায়াসেই যা রেকর্ড। এর আগে ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের স্পিনাররা করেছিল ৪৪ ওভার।

এখানে রেকর্ড গড়েছে অস্ট্রেলিয়াও। এই সিরিজে তারা ৪৯ ওভার বোলিং করেছে স্পিনে। তাদের আগের রেকর্ডটি হয়েছিল এই বছরই। নিউ জিল্যান্ড সফরে গত মার্চে, ৩৭.৩ ওভার।