অস্ট্রেলিয়াকে গুঁড়িয়ে জিতল বাংলাদেশ

মিলিত চেষ্টায় লড়াই করার মতো একটা সংগ্রহ এনে দিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা। সেটাকে যথেষ্টর বেশি প্রমাণ করলেন বোলাররা। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারল না অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের ইতিহাসে সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে গিয়ে বড় ব্যবধানে হেরেছে সফরকারীরা। ব্যাট-বলে-ফিল্ডিংয়ে নিজেদের মেলে ধরে ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 August 2021, 11:32 AM
Updated : 10 August 2021, 04:42 PM

৬০ রানের জয়

অস্ট্রেলিয়াকে ৬২ রানে থামিয়ে টি-টোয়েন্টি রানের দিক থেকে নিজেদের দ্বিতীয় বড় জয় পেল বাংলাদেশ।

রেকর্ড এখনও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০১২ সালে বেলফাস্টে তাদের ৭১ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

টি-টোয়েন্টিতে রানের দিক থেকে এটি অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম বড় পরাজয়। সবচেয়ে বড় হারটি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ২০০৫ সালে সাউথ্যাম্পটনে অস্ট্রেলিয়া হেরেছিল ১০০ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২২/৮ (মেহেদি ১৩, নাঈম ২৩, সাকিব ১১, সৌম্য ১৬, মাহমুদউল্লাহ ১৯, সোহান ৮, আফিফ ১০, মোসাদ্দেক ৪*, সাইফ ০, মুস্তাফিজ ০*; টার্নার ২-০-১৬-১, অ্যাগার ৪-০-২৮-১, জ্যাম্পা ৪-০-২৪-১, এলিস ৪-০-১৬-২, ক্রিস্টিয়ান ৪-০-১৭-২, সোয়েপসন ২-০-১৪-০)

অস্ট্রেলিয়া: ওভারে ৬২ (ক্রিস্টিয়ান ৩, ওয়েড ২২, মার্শ ৪, ম্যাকডারমট ১৭, কেয়ারি ৩, হেনরিকেস ৩, টার্নার ১, অ্যাগার ২, এলিস ১, সোয়েপসন ১*, জ্যাম্পা ৪; মেহেদি ৩-০-২০-০, নাসুম ২-০-৮-০, সাইফ ৩-০-১২-৩, সাকিব ৩.৪-১-৯-৪, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৯-০)

৯ রানে নেই শেষ ৬ উইকেট

সাকিব আল হাসান ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের জবাব যেন জানা ছিল না অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের। ১৯ বলের মধ্যে মাত্র ৯ রান যোগ করতে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলল সফরকারীরা। তাদের নাটকীয় এই ধসে বড় জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করল বাংলাদেশ।

আগের ম্যাচে খরুচে বোলিং করা সাকিব এবার মাত্র ৯ রান দিয়ে নিলেন ৪ উইকেট। সিরিজে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে সাইফ ৩ উইকেট পেলেন ১২ রানে।

সাকিবের জোড়ায় শেষ অস্ট্রেলিয়া

চতুর্দশ ওভারে ৪ বলের মধ্যে দুই উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ৬২ রানে থামিয়ে দিলেন সাকিব আল হাসান। টি-টোয়েন্টিতে এটাই দলটির সর্বনিম্ন রান।

এই সংস্করণে আগের সর্বনিম্ন রান ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, সেটি ছিল টি-টোয়েন্টির ইতিহাসের দ্বিতীয় ম্যাচ। ২০০৫ সালে সাউথ্যাম্পটনে ৭৯ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া।

প্রথম বলে ন্যাথান এলিসকে বোল্ড করে দেন সাকিব। দুই বল পর শর্ট কাভারে মাহমুদউল্লাহর হাতে ধরা পড়েন অ্যাডাম জ্যাম্পা।

সাইফের তৃতীয় উইকেট অ্যাগার

তিন রানের জন্য চতুর্থ উইকেট হারাল অস্ট্রেলিয়া। আগের ওভারে জোড়া উইকেট নেওয়া মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন পেলেন আরেকটি উইকেট। বোল্ড করে দিলেন অ্যাশটন অ্যাগারকে।

বেরিয়ে এসে বোলারের উপর চড়াও হতে চেয়েছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। বলের লাইন মিস করে ফিরেন বোল্ড হয়ে।

৪ বলে অ্যাগার করেন ২।

১৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ৮ উইকেটে ৫৮।

সাকিবের শততম শিকার টার্নার

ম্যাথু ওয়েডকে ফিরিয়ে মাইল ফলকের দুয়ারে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাকিব আল হাসান। পরের উইকেটের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বাঁহাতি এই স্পিনারকে। অ্যাশটন টার্নারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে পেলেন একশ উইকেটের স্বাদ।

অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে আরও বেরিয়ে যাওয়া বল কাট করেন টার্নার। ক্যাচ যায় সোজা কাভারের ফিল্ডার মাহমুদউল্লাহর হাতে।

সবার আগে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে একশ উইকেট পেয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা। সাকিব এই তালিকায় দ্বিতীয়।

১২ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৭ উইকেটে ৫৪।

সাইফের জোড়া শিকার

প্রথম বলে হতে পারতো চার, শর্ট থার্ড ম্যানে দারুণ ফিল্ডিংয়ে তিনটি রান বাঁচান নাসুম আহমেদ। পরের বলে হতে পারতো দুই, দ্রুত গতিতে বলের কাছে গিয়ে সিঙ্গেলেই থামিয়ে রাখেন আফিফ হোসেন। পরের বলেই মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন পেলেন উইকেট, বোল্ড হয়ে গেলেন অ্যালেক্স কেয়ারি।

মিডিয়াম পেসারের অফ কাটার বুঝতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। কাট করার চেষ্টায় ফিরেন বোল্ড হয়ে।

এক বল সাইফ পান উপহার, সাদামাটা এক ডেলিভারিতে কিপার নুরুল হাসান সোহানকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মোইজেস হেনরিকেস।

দুই ব্যাটস্যমানই খেলেন ৭টি করে বল, রানও সমান ৩।

১১ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৬ উইকেটে ৫৪। ক্রিজে এখন দুই অ্যাশটন, অ্যাগার ও টার্নার।

ছক্কার পর অক্কা ম্যাকডারমট

আক্রমণে এসে তৃতীয় বলে ছক্কা হজম করেন মাহমুদউল্লাহ। তবে দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়ান বাংলাদেশ অধিনায়ক। এক বল পরেই ফিরিয়ে দেন বেন ম্যাকডারমটকে।

নিজে যেভাবে আউট হয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ, উইকেট পেলেন অনেকটা সেভাবেই। বল লেগে ঘুরাতে চেয়েছিলেন ম্যাকডারমট, ঠিক মতো পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে সহজ ফিরতি ক্যাচ যায় বোলারের কাছে। অনায়াসেই তালুবন্দি করেন মাহমুদউল্লাহ।

এক ছক্কায় ১৬ বলে ১৭ রান করেন ম্যাকডারমট।

৯ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৪ উইকেটে ৪৯। ক্রিজে অ্যালেক্স কেয়ারির সঙ্গী মোইজেস হেনরিকেস।

এসেই সাকিবের উইকেট

আগের ম্যাচে খরুচে বোলিং করা সাকিব আল হাসান আক্রমণে এসেই পেলেন উইকেট। বোল্ড করে দিলেন ম্যাথু ওয়েডকে।

অষ্টম ওভারে বল হাতে পান সাকিব। প্রথম বলে বেন ম্যাকডারমট নেন একটি সিঙ্গেল। পরের বলে জায়গা করে নিয়ে পুল করেছিলেন ওয়েড। ব্যাটে খেলতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। বল আঘাত আনে অফ স্টাম্পে।

দুই ছক্কায় ২২ বলে ২২ রান করেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক।

৮ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ৩ উইকেটে ৪০। ক্রিচে ম্যাকডারমটের সঙ্গী অ্যালেক্স কেয়ারি।

পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট

প্রথম ৬ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দুইজন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। দুটি উইকেটই নিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।

৬ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ২ উইকেটে ৩১। ১৮ বলে ম্যাথু ওয়েডের রান ২০। ৬ বলে ৪ রানে খেলছেন বেন ম্যাকডারমট।

৩ ওভার বোলিং করে ২০ রান দিয়েছেন অফ স্পিনার মেহেদি হাসান। তাকে দুটি ছক্কা মেরেছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক ওয়েড। পাওয়ার প্লেতে বাউন্ডারি এই দুই দুটিই।

২ ওভারে ৮ রান দিয়ে ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান ও মিচেল মার্শের উইকেট নিয়েছেন নাসুম। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারটি করেছেন মুস্তাফিজুর রহমান, বাঁহাতি এই পেসার দিয়েছেন ৩ রান।

মার্শকে থামালেন নাসুম

পরপর দুই ওভারে উইকেট নাসুম আহমেদ। বাঁহাতি এই স্পিনার ফিরিয়ে দিলেন সফরে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান মিচেল মার্শকে।

অফের দিকে সরে গিয়ে বাঁহাতি স্পিনারকে স্লগ করতে চেয়েছিলেন মার্শ। ব্যাটে খেলতে পারেননি। জোরালো আবদনে সাড়া দিয়ে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। রিভিউ নষ্ট করে ফিরে যান টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।

৯ বলে মার্শ করেন ৪।

৪ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার স্কোর ২ উইকেটে ১৯। ক্রিজে ম্যাথু ওয়েডের সঙ্গী বেন ম্যাকডারমট।

এবার পারলেন না ক্রিস্টিয়ান

আগের ম্যাচে তিনে নেমে ঝড় তুললেও এবার ওপেন করে তা পারলেন না ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান। বিপজ্জনক ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে দিলেন নাসুম আহমেদ।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বল সেটি, ম্যাচে নাসুমের প্রথম। একটু খাটো  লেংথের বল দেখে পুল করার চেষ্টা করেন ক্রিস্টিয়ান। কিন্তু স্কিড করে বল ছোবল দেয় অফ স্টাম্পে।

৩ বলে ৩ রানে বিদায় নিলেন ক্রিস্টিয়ান। অস্ট্রেলিয়া ১.১ ওভারে ১ উইকেটে ৩।

ওপেনিংয়ে ক্রিস্টিয়ান

আগের ম্যাচে তিনে নেমে সাকিব আল হাসানের এক ওভারে ৫ ছক্কাসহ ১৫ বলে ৩৯ রানের ইনিংস খেলা ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানকে এবার ওপেনিংয়ে নামিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তার সঙ্গী অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ওপেন করলেন ক্রিস্টিয়ান।

শেষ ৫ ওভারে মন্থর বাংলাদেশ

১৫ ওভারে রান ছিল ১০২। শেষ ৫ ওভারে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে কেবল ২০ রান! এই সময়ে এসেছে কেবল একটি বাউন্ডারি।

তাই এক সময়ে ১৪০ এর কাছাকাছি যাওয়ার সম্ভাবনা জাগালেও স্বাগতিকরা থেমেছে ১২২ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
 
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২২/৮ (মেহেদি ১৩, নাঈম ২৩, সাকিব ১১, সৌম্য ১৬, মাহমুদউল্লাহ ১৯, সোহান ৮, আফিফ ১০, মোসাদ্দেক ৪*, সাইফ ০, মুস্তাফিজ ০*; টার্নার ২-০-১৬-১, অ্যাগার ৪-০-২৮-১, জ্যাম্পা ৪-০-২৪-১, এলিস ৪-০-১৬-২, ক্রিস্টিয়ান ৪-০-১৭-২, সোয়েপসন ২-০-১৪-০)

শেষ ওভারে ২ উইকেট

ন্যাথান এলিসের করা শেষ ওভারে তৃতীয় বলে স্কুপ করার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফিরেন আফিফ হোসেন। এক ছক্কায় ১১ বলে তিনি করেন ১০।

‘ডায়মন্ড ডাক’ এর তেতো স্বাদ পান মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। দ্রুত সিঙ্গেলের আশায় কিপার ম্যাথু ওয়েডের সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে যান তিনি। খেলতে পারেননি কোনো বল।

বোল্ড সোহান

শেষ দিকে এসে যেন থমকে গেছে রানের চাকা। ১৬ ও ১৭তম ওভার মিলিয়ে এসেছে কেবল ৪ রান। রানের গতিতে দম দেওয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ নুরুল হাসান সোহান ফিরে গেলেন বোল্ড হয়ে।

ন্যাথান এলিসের অফ স্টাম্পের বাইরের বল ঠিক মতো খেলতে পারেননি সোহান। ব্যাটের কানায় লেগে বল লাগে মিডল স্টাম্পে। ১৩ বলে কিপার-ব্যাটসম্যান করেন ৮।

১৮ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৬ উইকেটে ১১০। ক্রিজে আফিফ হোসেনের সঙ্গী মোসাদ্দেক হোসেন।

ছক্কার চেষ্টায় সৌম্যর অক্কা

ওপেনিংয়ে ব্যর্থ সৌম্য সরকার চারে নেমে সিরিজে প্রথমবার গেলেন দুই অঙ্কে। কিন্তু ব্যর্থ হলেন ইনিংস গড়তে। ছক্কার চেষ্টায় ফিরে গেলেন লং অফে ক্যাচ দিয়ে।

ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানের আগের ওভারেই কাট করে চার মেরেছিলেন সৌম্য। আগের ওভারে মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পর কিছুক্ষণ ঝুঁকি না নিলেও চলতো। তবুও নিলেন, লং অফ দিয়ে উড়িয়ে সীমানা পারের চেষ্টায় ধরা পড়লেন সীমানায়।

১৮ বলে একটি করে ছক্কা ও চারে ১৬ রান করেন সৌম্য। সেই ওভারেই ছক্কায় রানের খাতা খোলেন আফিফ হোসেন।

১৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৫ উইকেটে ১০২। ক্রিজে আফিফের সঙ্গী নুরুল হাসান সোহান।

টিকলেন না মাহমুদউল্লাহ

দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় থাকা মাহমুদউল্লাহ টিকলেন না বেশিক্ষণ। অ্যাশটন অ্যাগারকে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

বাঁহাতি স্পিনারের শর্ট বল লেগে ঘুরাতে চেয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু থেমে আসা বলে টাইমিং করতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। একটু পিছিয়ে গিয়ে সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমান অ্যাগার।

এক ছক্কায় ১৪ বলে ১৯ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। সেই ওভারে অ্যাগারকে ছক্কায় ওড়ান সৌম্য সরকার।

১৪ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেটে ৯১। ক্রিজে সৌম্যর সঙ্গী নুরুল হাসান সোহান।

প্রথমবার টি-টোয়েন্টিতে এলবিডব্লিউ সাকিব

অ্যাডাম জ্যাম্পার সোজা বলের লাইন মিস করে শেষ হলো সাকিব আল হাসানের ভোগান্তি। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথমবার এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরলেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার।

লেগ স্পিনারের বল লেগে ঘুরাতে চেয়েছিলেন সাকিব। কিন্তু লেগ-মিডল স্টাম্পে পড়ে সোজা যাওয়া বল ব্যাটে খেলতে পারেননি। জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দিলে রিভিউ না নিয়েই ফিরে যান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ২০ বলে তিনি করেন ১১।

১০ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৩ উইকেটে ৬০। ক্রিজে সৌম্য সরকারের সঙ্গী মাহমুদউল্লাহ।

উইকেট ছুঁড়ে এলেন নাঈম

সিরিজে প্রথমবার তিন স্পিনার নিয়ে খেলছে অস্ট্রেলিয়া কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ভোগাচ্ছেন পেসাররা। তাদের বলে রান আসছে সহজে। এ কারণেই হয়তো বাড়তি কিছু করার চেষ্টায় উইকেট ছুড়ে এলেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ।

আগের ওভারে ২ রান দেওয়া ড্যান ক্রিস্টিয়ান পরের ওভারে পেলেন উইকেটের দেখা। তাকে রিভার্স হিটের চেষ্টায় পয়েন্টে সহজ ক্যাচ দিলেন নাঈম। বাঁহাতি এই ওপেনার একটি করে ছক্কা ও চারে ২৩ বলে করেন ২৩ রান।

চারে নেমে পরের চারটি বল ডট খেলেন সৌম্য সরকার।

৯ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ৫৭।

পাওয়ার প্লেতে ১ উইকেট

পাওয়ার প্লের দুই অর্ধ দুই রকম কেটেছে বাংলাদেশের। প্রথম তিন ওভারে আসে ৩৩ রান, পরের ৩ ওভারে মেহেদি হাসানের উইকেট হারিয়ে যোগ করে ১৩ রান।

পাওয়ার প্লেতে ৬ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ৪৬। ১৮ বলে ২০ রানে খেলছেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ৬ বলে সাকিব আল হাসানের রান ৩।

চার ওভার করেছেন অস্ট্রেলিয়ার স্পিনাররা, দুটি পেসার। দলে ফেরা পেসার ন্যাথান এলিস ২ ওভারে দিয়েছেন মোটে ৫ রান।   

ভালো শুরুর পর ফিরলেন মেহেদি

দলকে ভালো শুরুর এনে দিয়ে ফিরলেন মেহেদি হাসান। অ্যাশটন টার্নারের বলে অ্যাশটন টার্নারকে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার।

শর্ট লেংথের বল পিছিয়ে গিয়ে পুল করতে চেয়েছিলেন মেহেদি। বল একটু থেমে আসায় টাইমিং করতে পারেননি। আকাশে উঠে যায় ক্যাচ, হাত থেকে ছুটে যায় ব্যাট। মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ মুঠোয় জমান অ্যাগার। ভাঙে ৪২ রানের শুরুর জুটি।

দুই চারে ১২ বলে ১৩ রান করেন মেহেদি।

৫ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ১ উইকেটে ৪৩। ক্রিজে মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গী সাকিব আল হাসান। প্রথম বলে বোল্ড হতে হতে বেঁচে গেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

ওপেনিংয়ে মেহেদি, স্পিনে শুরু অস্ট্রেলিয়া

টানা চার ম্যাচে ব্যর্থ সৌম্য সরকার জায়গা ধরে রেখেছেন দলে। তবে ওপেনিংয়ে তাকে খেলাচ্ছে না বাংলাদেশ। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানের জায়গায় মোহাম্মদ নাঈম শেখের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করছেন মেহেদি হাসান।

দুই প্রান্তেই স্পিন দিয়ে বোলিং শুরু করেছে অস্ট্রেলিয়া। অ্যাশটন টার্নারের অফ স্পিনে প্রথম ওভারে সুইপ করে চার মেরেছেন মেহেদি। বাঁহাতি স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগারকে ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে ছক্কায় স্বাগত জানিয়েছেন নাঈম।

২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর বিনা উইকেটে ১৯। ৩ বলে মেহেদির রান ৬। ৯ বলে ১২ রানে খেলছেন নাঈম।

তিন স্পিনার নিয়ে অস্ট্রেলিয়া

আগের ম্যাচ শেষে যে আভাস দিয়েছিলেন মিচেল সোয়েপসন, সেটাই সত্যি হয়েছে। সিরিজে প্রথমবার তিন স্পিনার নিয়ে খেলছে অস্ট্রেলিয়া। টিকে গেছেন সোয়েপসন, বিশ্রাম কাটিয়ে ফিরেছেন আরেক লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা।

অভিষেকে হ্যাটট্রিক করার পরও বাদ পড়েছিলেন ন্যাথান এলিস। ফিরেছেন এই পেসার। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে দুই পেসার জশ হেইজেলউড ও অ্যান্ড্রু টাইকে। এই ম্যাচেও নেই মিচেল স্টার্ক।

অস্ট্রেলিয়া একাদশ: বেন ম্যাকডারমট, অ্যালেক্স কেয়ারি, মিচেল মার্শ, মোইজেস হেনরিকেস, ম্যাথু ওয়েড (অধিনায়ক), অ্যাশটন টার্নার, অ্যাশটন অ্যাগার, ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান, মিচেল সোয়েপসন, অ্যাডাম জ্যাম্পা, ন্যাথান এলিস।

বাংলাদেশ দলে দুই পরিবর্তন

টানা চার ম্যাচ একই একাদশ নিয়ে খেলা বাংলাদেশ এনেছে দুটি পরিবর্তন। এর একটি বাধ্য হয়ে। চোটের জন্য নেই শরিফুল ইসলাম। বাঁহাতি এই পেসারের জায়গায় দলে এসেছেন অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। শামীম হোসেনের জায়গায় খেলছেন মোসাদ্দেক হোসেন।

বাংলাদেশ একাদশ: সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ নাঈম শেখ, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ (অধিনায়ক), আফিফ হাসান, নুরুল হাসান সোহান, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মুস্তাফিজুর রহমান, নাসুম আহমেদ।

টস জিতল বাংলাদেশ

টানা দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস জিতলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। অনুমিতভাবে তিনি নিয়েছেন ব্যাটিং।

জয় দিয়ে শেষের দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ

সিরিজ খোয়ানোর পর ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ ম্যাচে জিতে পেয়েছে প্রথম জয়ের স্বাদ। ওই হারের ধাক্কা সামাল দিয়ে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে চায় বাংলাদেশ।

পাঁচ ম্যাচ সিরিজের শেষ ম্যাচে সোমবার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়।

প্রথম চার ম্যাচে রানের জন্য লড়াই করতে হয়েছে ব্যাটসম্যানদের। ওভার প্রতি রান এসেছে কেবল ৫.৮৬। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে তিন বা এর বেশি ম্যাচের কোনো সিরিজে যা মন্থরতম।

সিরিজ জুড়েই দাপট দেখাচ্ছেন বোলাররা। শেষ ম্যাচেও ব্যাটসম্যানদের সামনে অপেক্ষা করছে আরেকটি কঠিন পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় জিতে শেষটা ভালো করার দিকে তাকিয়ে বাংলাদেশ।