মুস্তাফিজ যেন ‘গতিময় রশিদ খান’

মুস্তাফিজুর রহমানকে পেসার হিসেবে খেলতে হবে নাকি জোরের ওপর বল করা বাঁহাতি স্পিনার? অস্ট্রেলিয়ানরা পুরোপুরি বিভ্রান্ত। সিরিজের চার ম্যাচ পেরিয়ে গেছে, এই ধাঁধার কোনো সমাধান তারা বের করতে পারেনি। ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ান অবশ্য তুলনীয় কিছু একটা বের করতে পেরেছেন। চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ঝড় তোলা এই অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডারের মতে, রশিদ খান দ্রুতগতিতে লেগ স্পিন করলে যেমন হবে, মুস্তাফিজের বোলিং অনেকটাই তেমন।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 August 2021, 04:53 AM
Updated : 8 August 2021, 09:37 AM

চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজে অস্ট্রেলিয়ার জন্য একরকম আতঙ্ক হয়ে উঠেছেন মুস্তাফিজ। তার স্লোয়ার-কাটারের সামনে অসহায় অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানরা। প্রথম তিন ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ে বড় অবদান ছিল মুস্তাফিজের। প্রথম ম্যাচে ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রানে নেন তিনি ২ উইকেট, পরের ম্যাচে ২৩ রানে তিনটি। তৃতীয় ম্যাচে উইকেট পাননি, কিন্তু ৪ ওভারে মাত্র ৯ রান দিয়ে তিনিই গড়ে দেন পার্থক্য।

চতুর্থ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া দেখা পায় সিরিজের প্রথম জয়ের। কিন্তু সেই পথেও তাদের কম ভোগান্তি হয়নি মুস্তাফিজের সামনে। ৪ ওভারে আবারও মাত্র ৯ রান দিয়ে তিনি নেন ২ উইকেট। সাকিব আল হাসানের এক ওভারে ৩০ রান নেওয়ার পরও ১০৫ রান তাড়ায় ধুঁকতে ধুঁকতে অস্ট্রেলিয়া জেতে ৩ উইকেটে।

সাকিবের ওভারে ৫ ছক্কার পর মুস্তাফিজের বলেই আউট হন ক্রিস্টিয়ান। পরে তিনি বললেন, এই কন্ডিশনে মুস্তাফিজকে সামলানো ‘অসম্ভবের কাছাকাছি।’ কবজির সুনিপুন ভেল্কিতে মুস্তাফিজের স্লোয়ার ও কাটারগুলো ক্রিস্টিয়ানের মতে, “এটা দারুণ গতিময় রশিদ খানকে খেলার মতো।”

চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে ঝড় তুললেও ক্রিস্টিয়ান অসহায় মুস্তাফিজের সামনে।

মুস্তাফিজকে নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করেও তারা সমাধান বের করতে পারছেন না বলেও জানালেন ক্রিস্টিয়ান।

“এই ম্যাচের (চতুর্থ) আগে আমরা তাকে খেলার নানা পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছি। তাকে সামনের পায়ে খেলব নাকি পেছনের পায়ে, অফ সাইডে খেলব নাকি লেগ সাইডে…। তার বলে এত কিছু হয়, পিচেও বল উঠা-নামা করে… তার বল কেমন হবে, বোঝার উপায় নেই। সামনের পায়ে তাকে খেলা সত্যিই কঠিন, কারণ কোনো বল টার্ন করবে, কোনোটি বাউন্স।”

“অবশ্যই আমরা কোনো সমাধান বের করতে পারিনি। কারণ এই ম্যাচেও সে ওভারপ্রতি মাত্র ২ রান করে দিয়েছে। সত্যিই দুর্দান্ত বোলিং, কন্ডিশনটাকে নিজের পক্ষে দারুণভাবে কাজে লাগাচ্ছে সে।”

চতুর্থ ম্যাচে শনিবার সাকিবের ওভারে ক্রিস্টিয়ানের ৫ ছক্কা ও ১৫ বলে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংস ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে অনেকটা। আগের ম্যাচে শেষ সময়ে এই ক্রিস্টিয়ানই কিছু করতে পারেননি। কারণ, সামনে ছিলেন মুস্তাফিজ!

সেদিন দুই ওভারে যখন প্রয়োজন ২৩ রান, ১৯তম ওভারে মুম্তাফিজ অবিশ্বাস্য বোলিংয়ে দেন কেবল ১ রান। এই বাঁহাতি পেসারের চার বল খেলে ক্রিস্টিয়ান কোনো রানই করতে পারেননি। দুই দিনের ব্যাটিংয়ে কেন এত পার্থক্য, ক্রিস্টিয়ান বলে দিলেন সরাসরিই।

“ওভারপ্রতি ৬ করে করতে পারলেই এখানে জয়ের মতো স্কোর। সেখানে যখন কালকে (শুক্রবার) উইকেটে গেলাম, পুরনো বলে ওভারপ্রতি ১২ করে লাগত। ৫ জন ফিল্ডার ছিল সীমানায়, মাঠও বড়। আর মুস্তাফিজকে খেলা ছিল খুবই কঠিন। এই কন্ডিশনে এই ধরনের বোলিং খেলার চেয়ে কঠিন কিছু বিশ্বের কোথাও কোনো পর্যায়ে হয় না।”