অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের আগে জিম্বাবুয়ে সফরেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে ফিরেছিল বাংলাদেশ। তবে ওই সিরিজে মূল ক্রিকেটারদের কয়েকজনকে ছাড়া খেলতে নামা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও হারতে হয়েছিল একটি ম্যাচ এবং সিরিজ জয় শেষ পর্যন্ত সহজে আসেনি। এই সংস্করণে বাংলাদেশ খুব ধারাবাহিক হতে পারেনি কখনোই।
এবার অস্ট্রেলিয়া খর্বশক্তির দল নিয়ে সফরে এলেও তাই বাংলাদেশকে নিয়ে আশার জায়গা খুব বেশি ছিল না। সেই দলটিই একটির পর একটি ম্যাচে গড়ল ইতিহাস!
প্রথমে ধরা দিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম জয়। এরপর সব সংস্করণ মিলিয়েই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবার টানা দুই ম্যাচ জয়। সেই পথ ধরে শুক্রবার ১০ রানের জয়ে তিন ম্যাচেই নিশ্চিত হয়ে গেল সিরিজ জয়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে যে কোনো সংস্করণেই প্রথম সিরিজ জয় এটি।
‘বাংলাদেশ ভালো টি-টোয়েন্টি দল নয়’, সিরিজ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রসঙ্গে বেশ চটে গিয়েছিলেন কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। যদিও রেকর্ড-র্যাঙ্কিং স্বাক্ষ্য দিচ্ছিল বাংলাদেশের ব্যর্থতারই। র্যাঙ্কিংয়ের সেই বাস্তবতাকে মেনে সিরিজ শুরুর আগের দিন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বলেছিলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা আর আত্মবিশ্বাস থাকলে মাঠের ক্রিকেটেও বদলে যাবে দল।
অধিনায়কের সেই কথাকেই একটির পর একটি ম্যাচে সত্যি প্রমাণ করেছে দল। সিরিজ জয়ের পর তাই তিনি স্তুতির জোয়ারে ভাসালেন সতীর্থদেরই।
“কৃতিত্ব পুরো দলের। সবার জয়ের ক্ষুধা, মানসিকতা, সব মিলিয়েই দলীয় প্রচেষ্টা ছিল, কোচিং স্টাফরাসহ। সবাই পরস্পরকে সমর্থন করেছি। আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ ছিল। কারণ টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে হয়তো আমরা নিচে আছি। তবে আমাদের ভেতরে বিশ্বাসটা ছিল যে আমরা দল হিসেবে ভালো, আমাদের আরও ভালো করা উচিত ও ভালো করতে পারি।”
“এই বিশ্বাসটা সবার ভেতরে ছড়ানো সবার ভেতরে ছড়ানোটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ছেলেরা সবাই পরস্পরের পাশে থেকেছে, মন থেকে সমর্থন করেছে। মাঠে সেটির প্রতিফলন পড়েছে। ওদের জন্য আমি খুশি।”
নিজের ওপর বিশ্বাসের সেই ছাপ ছিল সিরিজর প্রতিটি ম্যাচেই। প্রথম ম্যাচে ১৩১ রানের পুঁজি নিয়েও বেশ সহজে জিতে যায় বাংলাদেশ। ম্যাচের মাঝবিরতিতে যদিও ওই রানকে কম বলেই মনে হচ্ছিল, কিন্তু দমে না গিয়ে দারুণ বোলিং-ফিল্ডিংয়ে দল নিশ্চিত করে ম্যাচ জয়।
পরের ম্যাচে ১২২ রান তাড়ায় বাংলাদেশ যখন ৫ উইকেট হারায়, জয় তখনও অনেক দূরে। কিন্তু আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান সোহানের মতো অনভিজ্ঞ দুজন দারুণ পরিণত ও আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে জিতিয়ে দেয় দলকে।
তৃতীয় ম্যাচে শুক্রবার পুঁজি ছিল আরও কম। কিন্তু বিশ্বাস ছিল বেশি। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোয় তাই ছিল বাংলাদেশেরই হাসি।