রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জিতে সিরিজ ইংল্যান্ডের

ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে আদিল রশিদ লক্ষ্যটা রাখলেন নাগালে। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে জেসন রয় জাগালেন সহজ জয়ের আশা। তাকে বিদায় করে ম্যাচ জমিয়ে তুলল পাকিস্তান। কিন্তু শেষরক্ষা করতে পারেনি সফরকারীরা। নখ কামড়ানো উত্তেজনার ম্যাচে জিতে সিরিজ ঘরে তুলেছে ইংল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 July 2021, 09:25 PM
Updated : 20 July 2021, 09:25 PM

তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে মঙ্গলবার ৩ উইকেটে জিতেছে ওয়েন মর্গ্যানের দল। ১৫৪ রানের লক্ষ্য দুই বল বাকি থাকতে পেরিয়ে গেছে দলটি। হার দিয়ে শুরুর পর সিরিজ জিতেছে ২-১ ব্যবধানে।  

ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের দুই ওপেনারের শুরুটা ছিল দুই রকম। এক প্রান্তে তরতর করে এগিয়ে যান মোহাম্মদ রিজওয়ান, আরেক প্রান্তে সংগ্রাম করেন বারর আজম।

পাকিস্তান অধিনায়ককে দ্রুত ফেরান রশিদ। তার গুগলি বুঝতে না পেরে এগিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় স্টাম্পড হন বাবর।

রশিদকেই ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় লং অনে ক্যাচ দেন সোহেব মাকসুদ। এই লেগ স্পিনারের বলে ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন মোহাম্মদ হাফিজ।

সতীর্থদের আশা-যাওয়ার মিছিলে অবিচল রিজওয়ানকে কিছুটা সঙ্গ দেন ফখর জামান। তবে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। একটি করে ছক্কা ও চারে ফিরেন মইন আলির অফ স্পিনে এলবিডব্লিউ হয়ে।

নিজের কোটার শেষ বলে শাদাব খানকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টিতে চার উইকেটের স্বাদ পান রশিদ। ৩৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে তিনিই ইংল্যান্ডের সফলতম বোলার।

শেষের দিকে হাসান আলিকে নিয়ে দলের রান দেড়শ পার করেন রিজওয়ান। এই কিপার-ব্যাটসম্যান ৫৭ বলে তিন ছক্কা ও পাঁচ চারে অপরাজিত থাকেন ৭৬ রানে। 

জেসন রয়ের ব্যাটে শুরুটা ভালো করে ইংল্যান্ডও। পাওয়ার প্লেতে ৬ ওভারে আসে ৪৫ রান। রয়ের মতো সাবলীল ছিলেন না জস বাটলার। টাইমিং করতে ভুগছিলেন বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান।

লেগ স্পিনার শাদাবের বলে একবার সুযোগ দিয়ে বেঁচে গেলেও সেই ওভারেই বাবরের হাতে ধরা পড়ে শেষ হয় বাটলারের ইনিংস। ভাঙে ৬৭ রানের উদ্বোধনী জুটি।

চালিয়ে যেতে থাকেন রয়। ৩০ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর হয়ে ওঠেন আরও আক্রমণাত্মক। অতিরিক্ত শট খেলাই তার জন্য কাল হয়। উসমান কাদিরের বলে ধরা পড়েন লং অফে। রয়ের ৩৬ বলে খেলা ৬৪ রানের ইনিংসে ১২ চারের পাশে ছক্কা একটি। 

জনি বেয়ারস্টো ও মইন আলির দ্রুত বিদায়ে জমে ওঠে ম্যাচ। দাভিদ মালানকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নেন মর্গ্যান। ১৯তম ওভারে মালানকে বোল্ড করে দেন হাফিজ।

পরের বলে ছক্কা হাঁকান লিয়াম লিভিংস্টোন। হাফিজকে আবার ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ শেষ করার চেষ্টায় ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তিনি।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৬ রান। প্রথম বলেই আকাশে তুলে দিয়েছিলেন মর্গ্যান। ছুটে গিয়ে হাত ছোঁয়ালেও ক্যাচ মুঠোয় জমাতে পারেননি বোলার হাসান। লিভিংস্টোনের মতো পরের বলে ইংলিশ অধিনায়কও ছক্কায় ম্যাচ শেষ করার চেষ্টায় সীমানায় ক্যাচ দেন।

ক্রিস জর্ডান পরপর দুই বলে দুটি ডাবলস নিয়ে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৫৪/৬ (রিজওয়ান ৭৬*, বাবর ১১, মাকসুদ ১৩, হাফিজ ১, ফখর ২৪, শাদাব ২, ইমাদ ৩, হাসান ১৫*; উইলি ২-০-১০-০, মাহমুদ ৩-০-৩৩-০, জর্ডান ৪-০-৩০-০, রশিদ ৪-০-৩৫-৪, লিভিংস্টোন ৩-০-২১-০, মইন ৪-০-১৯-১)

ইংল্যান্ড: ১৯.৪ ওভারে ১৫৫/৭ (রয় ৬৪, বাটলার ২১, মালান ৩১, বেয়ারস্টো ৫, মইন ১, মর্গ্যান ২১, লিভিংস্টোন ৬, জর্ডান ৪*, উইলি ০*; ইমাদ ৪-০-২৫-১, আফ্রিদি ১-০-১৬-০, হাসান ৩.৪-০-২৮-১, কাদির ৪-০-৩৫-১, শাদাব ৩-০-২২-১, হাফিজ ৪-০-২৮-৩)

ফল: ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী ইংল্যান্ড

ম্যান অব দা ম্যাচ: জেসন রয়

ম্যান অব দা সিরিজ: লিয়াম লিভিংস্টোন