তৃতীয় হোয়াইটওয়াশ, ৩০ পয়েন্ট
সিরিজ থেকে সম্ভাব্য প্রায় সবকিছুই পেল বাংলাদেশ। দেশের বাইরে প্রতিপক্ষকে তৃতীয়বার হোয়াইটওয়াশ করার স্বাদ মিলল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পঞ্চাশতম ওয়ানডে জয় এলো। এই প্রথম কোনো দলের বিপক্ষে জয়ের ফিফটি করতে পারল বাংলাদেশ।
আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের ৩০ পয়েন্টের সবকটিও পেল বাংলাদেশ। ৮০ পয়েন্ট নিয়ে আরও সংহত হলো পয়েন্ট টেবিলে দ্বিতীয় স্থান।
পেশাদার রান তাড়া
ব্যাটিং উইকেটে ২৯৯ রানের লক্ষ্য ছিল তাড়া করার মতোই। তবে প্রয়োজন ছিল টপ অর্ডারে কারও বড় রান আর কার্যকর জুটি। বাংলাদেশ করেছে ঠিক সেটিই।
ওপেনিংয়ে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। টপ ও মিডল অর্ডারের অন্যরা বড় ইনিংস খেলতে না পারলেও দিয়েছেন সঙ্গ। পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়ে উঠেছে চারটি। শেষটা দারুণ করেছেন নুরুল হাসান সোহান।
পরপর দুই বলে উইকেট হারানোর পর ক্রিজে গিয়ে সত্যিকারের ফিনিশারের মতো ব্যাট করে তিনি ফেরেন দলের জয় সঙ্গে নিয়ে। শেষ সময়ে দারুণ সঙ্গ দিয়ে তার কাজ সহজ করে তোলেন আফিফ হোসেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৪৯.৩ ওভারে ২৯৮ (চাকাভা ৮৪, মারুমানি ৮, টেইলর ২৮, মায়ার্স ৩৪, মাধেভেরে ৩, রাজা ৫৭, বার্ল ৫৯, জঙ্গুয়ে ৪* টিরিপানো ০, চাতারা ১, মুজারাবানি ০; তাসকিন ১০-১-৪৮-১, সাইফ ৮-০-৮৭-৩, মুস্তাফিজ ৯.৩-০-৫৭-৩, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৪৫-২, সাকিব ১০-০-৪৬-১, মোসাদ্দেক ২-০-১৩-০)।
বাংলাদেশ: ৪৮ ওভারে ৩০২/৫ (লিটন ৩২, তামিম ১১২, সাকিব ৩০, মিঠুন ০, মাহমুদউল্লাহ ০, সোহান ৪৫*, আফিফ ২৬*; মুজরাবানি ৮-০-৪৩-০, চাতারা ৮-০-৫৬-০, জঙ্গুয়ে ৭-০-৪৪-১, টিরিপানো ৭-০-৬১-২, মাধেভেরে ১০-০-৪৫-২, রাজা ৫-০-২৩-০, বার্ল ৩-০-২৩-০)।
সোহান-আফিফের জুটিতে জয়
নুরুল হাসান সোহান ও আফিফ হোসেনের জুটি অনায়াসেই লক্ষ্যে পৌঁছে গেল বাংলাদেশ। লুক জঙ্গুয়ের বলে টানা দুই বলে ছক্কা ও চারে জয় ধরা ছিল ১২ বল বাকি রেখেই।
৫ উইকেটে জয়ে ওয়ানডে সিরিজ ৩-০তে জিতে নিল বাংলাদেশ। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগে প্রত্যাশিত ৩০ পয়েন্টও ধরা দিল।
ষষ্ঠ উইকেটে সোহান ও আফিফের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৪.৪ ওভারে ৩৪।
৩৯ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত সোহান, ১৭ বলে অপরাজিত ২৬ আফিফ।
পারলেন না মিঠুন
শুরু থেকে একটুও স্বস্তিতে খেলতে পারছিলেন না মোহাম্মদ মিঠুন। তবু লড়াই করে টিকে ছিলেন। কিন্তু হুট করেই আত্মঘাতী শট খেলে বসলেন।
সমীকরণ যখন খুব সহজ, ৩১ বলে প্রয়োজ ৩১ রান, মাধেভেরের বলে বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারলেন মিঠুন। টাইমিং করতে পারেননি। লং অফে ক্যাচ নেন চাতারা।
৫৭ বলে ৩০ রান করে শেষ হলো মিঠুনের অস্বস্তিময় ইনিংস।
বাংলাদেশের রান ৪৩.২ ওভারে ৫ উইকেটে ২৬৮। নতুন ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন।
আরেক জুটির ফিফটি
পরপর দুই বলে তামিম ও মাহমুদউল্লাহকে হারানার ধাক্কা ভালোই সামাল দিয়েছে বাংলাদেশ। মোহাম্মদ মিঠুন ও নুরুল হাসান সোহানের জুটিতে হয়ে গেছে ফিফটি। ইনিংসের চতুর্থ অর্ধশত জুটি এটি।
পঞ্চম উইকেট জুটির ফিফটি এসেছে ৪৮ বলেই।
সাড়ে চার বছর পর ওয়ানডে খেলতে নামা সোহানের দারুণ ব্যাটিংয়েই মূলত এগোচ্ছে বাংলাদেশ। জুটির ফিফটিতে তার অবদান ২৩ বলে ৩০। মিঠুন করেছেন ২৪ বলে ১৫।
এক ইনিংসে চারটি পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি এই নিয়ে চারবার পেল বাংলাদেশ। আগের তিনবার ছিল ২০১৩ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ফতুল্লায়, ২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুরে ও ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ডাবলিনে।
‘গোল্ডেন ডাক’ মাহমুদউল্লাহ
একটি উইকেটের হাত ধরে এলো আরেকটি উইকেট। নিজের ২০০তম ওয়ানডেতে প্রথম বলেই আউট হয়ে গেলেন মাহমুদউল্লাহ।
উইকেট নেওয়ার মতো ডেলিভারি ছিল না এটিও। অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি কাট করে হালকা ঢোকে ভেতরে। মাহমুদউল্লাহ শরীর থেকে দূরে শট খেলার চেষ্টা করেন। বল তার ব্যাটের ভেতরের কানায় লেগে যায় কিপারের গ্লাভসে।
দারুণ অবস্থান থেকে হুট করেই চাপে বাংলাদেশ। ২৯৯ রান তাড়ায় রান ৩৪.২ ওভারে ২০৪। নতুন ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান।
আলসে শটে আউট তামিম
পানি পানের বিরতিতে হয়তো নড়ে গেল তামিম ইকবালের মনোযোগ। বাংলাদেশ অধিনায়ক আলগা শটে ফিরলেন বিরতির পর প্রথম বলেই।
রাউন্ড দা উইকেটে অফ স্টাম্পের বাইরে লেংথ বল করেন ডোনাল্ড টিরিপানো। নিরীহ এক ডেলিভারি। তামিম জায়গায় দাঁড়িয়ে আলতো করে ব্যাট পেতে দেন। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় কিপারের কাছে।
দারুণ সেঞ্চুরিতেও করলেও কাজ শেষ করে ফিরতে পারলেন না তামিম। আউট হলেন ৯৭ বলে ১১২ রান করে।
বাংলাদেশ ৩৪.১ ওভারে ৩ উইকেটে ২০৪।
বাংলাদেশের দুইশ
৩৩.২ ওভারে বাংলাদেশের রান স্পর্শ করল ২০০। তামিম ব্যাট করছেন ৯৪ বলে ১১০ রান নিয়ে, ২৮ বলে ১৩ মিঠুন।
ফিফটি জুটির হ্যাটট্রিক
টানা তৃতীয় জুটিতে ফিফটি পেল বাংলাদেশ। প্রথম দুই জুটির পর এবার তামিম ও মিঠুনের জুটিতেও এলো পঞ্চাশ।
মাত্র ৪৫ বলে এসেছে জুটির ফিফটি। তাতে কৃতিত্ব মূলত তামিমের। তিনি করেছেন ৩০, মিঠুন ১১।
অধিনায়ক তামিমের প্রথম
টেন্ডাই চাতারার ফুল লেংথ বলে সজোরে ড্রাইভ, ফিল্ডারের ভুলে বল চলে গেল বাউন্ডারিতে। তামিম পৌঁছে গেলেন মাইলফলকে। সিরিজের আগের দুই ম্যাচে ব্যর্থ বাংলাদেশ অধিনায়ক এবার করলেন সেঞ্চুরি।
মাত্র ৮৭ বলে এসেছে তার এই সেঞ্চুরি। ইনিংসে চার ৭টি, ছক্কা ৩টি।
ওয়ানডেতে তামিমের ১৪তম সেঞ্চুরি এটি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম, দেশের বাইরে সপ্তম। আর অধিনায়ক হিসেবে ১৫ ইনিংসে প্রথম!
তার এটি ক্যারিয়ারের দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরিও। আগেরটি ছিল ৯৪ বলে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে ২০১০ সালে।
হতাশায় বিদায় সাকিবের
তামিম-সাকিবের জুটি ফিফটির পর এগোতে পারল না বেশিদূর। ৪২ বলে ৩০ রান করে আউট হলেন সাকিব।
লুক জঙ্গুয়ের বলটি ছিল অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে, লেংথ বল। একটু স্লোয়ারও ছিল। সাকিব হুট করে হারিয়ে ফেলেন নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ। জায়গায় দাঁড়িয়েই চালিয়ে দেন ব্যাট। বল গ্লাভসে নিয়েই কিপার উল্লাসে মাতেন। সাকিব হাত ইশারায় ওয়াইডের মতো ভঙ্গি করেন। তবে আম্পায়ার তুলে দেন আঙুল।
সাকিব হতাশা প্রকাশ করেন ভঙ্গিতে। সেটা নিজের শটে নাকি আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে, তা স্পষ্ট নয়। তবে রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে, ব্যাটের নিচের কানায় লেগেছিল বল।
সাকিবের বিদায়ে ভাঙল ৬৯ বলে ৫৯ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি।
২৯৯ রান তাড়ায় বাংলাদেশ ২৫.২ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৭। নতুন ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন।
দ্বিতীয় জুটির ফিফটি
ফিফটির পর থেকে এক-দুই নিয়েই এগোচ্ছিলেন তামিম। হুট করে ওয়েসলি মাধেভেরের বলে ক্রেজ ছেড়ে বেরিয়ে ছক্কা মারলেন এক্সট্রা কাভারের ওপর দিয়ে। ওই শটে এলো জুটির ফিফটি।
৫৯ বলে এসেছে জুটির পঞ্চাশ। তামিম-সাকিবের এটি ওয়ানডেতে ষোড়শ ফিফটি জুটি, সঙ্গে শতরানের জুটি আছে তিনটি।
স্বস্তিতে শতরান বাংলাদেশের
উইকেটে যাওয়ার পরপরই দারুণ এক ছক্কা মেরেছেন সাকিব আল হাসান। লিটনকে আউট করা মাধেভেরের খানিকটা শর্ট বলে পুল করে উড়িয়েছেন লং অন দিয়ে।
১৬.৩ ওভারে এসেছে বাংলাদেশের শতরান। উইকেট পড়েছে ১টি।
বাংলাদেশের জন্য এটা বড় স্বস্তি। এই ম্যাচের আগে টানা ছয় ম্যাচে ১০০ তুলতেই চার উইকেটে হারাতে হয়েছিল দলকে।
থিতু হয়ে লিটনের বিদায়
দারুণ শুরুর পর বাংলাদেশ হারাল প্রথম উইকেট। স্পিন আক্রমণে এনে প্রথম ওভারেই সাফল্য পেল জিম্বাবুয়ে।
অফ স্পিনার ওয়েসলি মাধেভেরের ডেলিভারিটি এমন কিছু ছিল না। অফ স্টাম্পের বাইরে সাধারণ ডেলিভারি। লিটন চাইলেন লম্বা পা বাড়িয়ে সুইপ করতে। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে সহজ ক্যাচ শর্ট ফাইন লেগে।
শুরুটা ভালো করেও বড় ইনিংস খেলার সুযোগ হারালেন লিটন। ফিরলেন ৩৭ বলে ৩২ রান করে।
২৯৯ রান তাড়ায় বাংলাদেশ ১৩.৫ ওভারে ১ উইকেটে ৮৮। নতুন ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান।
তামিমের পঞ্চাশ
তামিম ইকবালের শুরুটা ছিল মন্থর। কিন্তু ফিফটিতে পৌঁছে গেলেন তিনি বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই। ২৫ বল খেলে তার রান ছিল ১৬। সেখান থেকে পঞ্চাশ করলেন ৪৬ বলেই। তার ইনিংসে চার চারটি, ছক্কা দুটি।
বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটসম্যানের এটি ওয়ানডেতে ৫২তম ফিফটি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দশম।
ফিফটি জুটিতে শুরু
২৯৯ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে স্বস্তিতে। তামিম ইকবাল ও লিটন কুমার দাস উদ্বোধনী জুটিতে ৫২ তুলেছেন ৮ ওভারেই।
ওয়ানডেতে ১১ ম্যাচ পর উদ্বোধনী জুটিতে অর্ধশত পেল বাংলাদেশ। সবশেষ গত বছরের মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৯২ রানের জুটি গড়েছিলেন এই দুজনই।
লিটন শুরু থেকেই খেলছেন সাবলীলভাবে। তামিম শুরুটা করেন সাবধানী ব্যাটিংয়ে। পরে টেন্ডাই চাতারাকে টানা তিন বলে এক ছক্কা ও দুই বাউন্ডারিতে তিনিও কাটান জড়তা।
২৮ বলে ৩০ রানে ব্যাট করছেন তামিম, ২০ বলে ২২ লিটন।
বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য
দ্রুত রানের চেষ্টায় শেষ দিকে হুড়মুড়িয়ে উইকেট হারিয়ে তিনশ ছোঁয়া হলো না জিম্বাবুয়ের। তবে যা হলো, সেটিও কম নয়। বাংলাদেশকে ২৯৯ রানের লক্ষ্য দিতে পারল তারা।
সিরিজের সেরা ব্যাটিং উইকেটে শুরুটা ভালো করেও এক পর্যায়ে তারা অস্বস্তিতে ছিল ১৭২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে। ষষ্ঠ উইকেটে সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্লের দারুণ জুটি দলকে এগিয়ে নেয় বড় স্কোরের পথে। ৮০ বলে ১১২ রানের জুটি গড়েন দুজন।
শেষ তিন ওভারে প্রত্যাশিত রান না উঠলেও শেষ ১০ ওভারে জিম্বাবুয়ে তুলেছে ৯৪ রান।
সিরিজের আগের দুই ম্যাচ বাংলাদেশের বোলিং দুর্দান্ত হলেও এ দিন ছিল একদমই বিবর্ণ। তাসকিন ছিলেন অধারাবাহিক, সাইফ উদ্দিন এলোমেলো। দলে ফিরে মুস্তাফিজ ছিলেন ভালো-মন্দ মিলিয়ে। সাকিব খারাপ করেননি। তবে দলের সেরা বোলার ছিলেন সম্ভবত মাহমুদউল্লাহ।
বাংলাদেশের ব্যাটিং এই ম্যাচে অনেক লম্বা। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য দারুণ। তার পরও লক্ষ্য তাড়া করতে হলে অনেক ভালো খেলতে হবে তাদের।
তিনশর আগে থামল জিম্বাবুয়ে
শেষ দিকে দ্রুত কিছু উইকেট হারিয়ে জিম্বাবয়ে পারল না তিনশ ছুঁতে। অল আউট তারা ২৯৮ রানে। মুস্তাফিজুর রহমানের দারুণ স্লোয়ারে স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড শেষ ব্যাটসম্যান ব্লেসিং মুজরাবানি।
১২ বলের মধ্যে ১৪ রানে জিম্বাবুয়ে হারাল শেষ ৫ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
জিম্বাবুয়ে: ৪৯.৩ ওভারে ২৯৮ (চাকাভা ৮৪, মারুমানি ৮, টেইলর ২৮, মায়ার্স ৩৪, মাধেভেরে ৩, রাজা ৫৭, বার্ল ৫৯, জঙ্গুয়ে ৪* টিরিপানো ০, চাতারা ১, মুজারাবানি ০; তাসকিন ১০-১-৪৮-১, সাইফ ৮-০-৮৭-৩, মুস্তাফিজ ৯.৩-০-৫৭-৩, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৪৫-২, সাকিব ১০-০-৪৬-১, মোসাদ্দেক ২-০-১৩-০)।
সাইফের তৃতীয়
খরুচের বোলিংয়ের দিনে এক ওভারেই তিন উইকেটের দেখা পেলেন সাইফ উদ্দিন। তার তৃতীয় শিকার টেন্ডাই চাতারা। ফুল লেংথ বলটিতে জায়গায় দাঁড়িয়ে ব্যাট চালান চাতারা। ব্যাটে লেগে বল আসে স্টাম্পে।
১ রানে আউট হলেন চাতারা। জিম্বাবুয়ের রান ৯ উইকেট ২৯৬।
৮ ওভারে ৮৭ রান দিয়ে সাইফের উইকেট ৩টি।
সাইফের আরেকটি
বার্ল আউট হওয়ার পরের বলেই আরেকটি উইকেটের দেখা পেলেন সাইফ। এবার স্টাম্পের বাইরের লেংথ বল সজোরে মারতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে আনলেন ডোনাল্ড টিরিপানো। আউট হলেন তিনি শূন্য রানেই।
সাইফের কিছুটা স্বস্তি
বাজে বোলিং আর জিম্বাবুয়ের দারুণ ব্যাটিং মিলিয়ে তুলাধুনা হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি পেলেন সাইফ উদ্দিন। তাকে ম্যাচে প্রথম উইকেট উপহার দিলেন রায়ান বার্ল।
৪৯তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা মারার পর দ্বিতীয় বলে আবার সেই ছক্কার চেষ্টা করে বার্ল। উড়িয়ে মারেন সোজা ব্যাটে। তবে টাইমিং ঠিকমতো হয়নি। লং অনেক ক্যাচ নেন লিটন দাস।
৩৪ বলে ৫৯ রান করে আউট হলেন বার্ল। ওয়ানডেতে তার দ্বিতীয় ফিফটি এটি। আগেরটি ছিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৫৩।
জিম্বাবুয়ে ৭ উইকেটে ২৯৪।
ফিরলেন রাজা
অবশেষে সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্লের জুটি ভাঙতে পারল বাংলাদেশ। ৪৮তম ওভারে রাজাকে থামালেন মুস্তাফিজুর রহমান।
মুস্তাফিজের অফ স্টাম্পের বাইরের স্লোয়ার বল উড়িয়ে মারার চেষ্টায় টাইমিং করতে পারেননি রাজা। বল উঠে যায় কেবল ওপরে। বৃত্তের ভেতরই পয়েন্ট থেকে ছুটে ক্যাচ নেন মোসাদ্দেক।
৫৪ বলে ৫৭ রানের দারুণ ইনিংস খেলে আউট হলেন রাজা। জিম্বাবুয়ে ৪৭.৩ ওভারে ৬ উইকেটে ২৮৪।
জীবন পেয়ে ফিফটি
সাইফ উদ্দিনের এক ওভারে দুটি ছক্কার পর আরেকটির চেষ্টায় আউট হতে বসেছিলেন রায়ান বার্ল। কিন্তু ক্যাচটি নিতে পারেননি সাকিব। বরং হয়ে যায় বাউন্ডারি। তাতেই বার্ল স্পর্শ করেন ফিফটি।
ক্যাচটি অবশ্য ছিল বেশ কঠিন। লং লেগে সামনে এগিয়ে ডাইভ দিয়েও ক্যাচ নিতে পারেননি সাকিব। বার্ল ফিফটি করেন ৩৮ বলেই।
সাইফের ওই ওভার থেকে আসে ২২ রান।
শতরানের জুটি
ষষ্ঠ উইকেটে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে একশ রানের জুটি গড়লেন সিকান্দার রাজা ও রায়ান বার্ল। সাইফ উদ্দিনের ওভারে বার্লের দুটি ছক্কায় জুটির শতরান আসে কেবল ৭৪ বলেই।
রাজার ফিফটি
দারুণ খেলে সিকান্দার রাজা পা রাখলেন পঞ্চাশে। ছয়ে নেমে জিম্বাবুয়ের ইনিংস এগিয়ে নেওয়া ব্যাটসম্যান ফিফটি করলেন ৪৯ বলে।
৬ চারের সঙ্গে তার ইনিংসে আছে সাকিবের বলে একটি ছক্কা।
অসুস্থতার কারণে বাইরে থাকার পর এই সিরিজ দিয়েই ফিরেছেন রাজা। ওয়ানডেতে এটি তার ১৭তম ফিফটি, বাংলাদেশের বিপক্ষে চতুর্থ।
৪৫ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ৫ উইকেটে ২৪৪।
জিম্বাবুয়ের দুইশ
মোসাদ্দেক হোসেনের বলে সিকান্দার রাজার বাউন্ডারিতে জিম্বাবুয়ের রান স্পর্শ করল দুইশ, ৩৯.৫ ওভারে।
ওই ওভার পরে আরেকটি বাউন্ডারি মারেন রাজা। ৪০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের রান ৫ উইকেটে ২০৪। রাজা খেলছেন ৩০ রানে।
মাহমুদউল্লাহর ১০
একজন বোলার ঘাটতি থাকার দিনে ১০ ওভার বোলিং করলেন মাহমুদউল্লাহ। ২ উইকেট নিয়ে এখনও পর্যন্ত দলের সফলতম বোলার তিনিই। ১০ ওভারে ৪৫ রানে ২ উইকেট।
১০ ওভারে বাউন্ডারি হজম করেছেন কেবল একটি, সেটিও শেষ ওভারে।
এই ম্যাচের আগে ওয়ানডেতে সবশেষ ১০ ওভার বোলিং করেছিলেন ২০১৮ সালের অক্টোবরে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রামে।
ছক্কার পর অক্কা চাকাভা
রেজিস চাকাভার ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ছিল ৭৮। এবার সেই রানে দাঁড়িয়েই তাসকিন আহমেদের বলে দারুণ এক আপার কাটে ছক্কা মেরে নিজেকে ছাড়িয়ে গেলেন তিনি। কিন্তু সেঞ্চুরিতে যেতে পারলেন না। আউট হলেন তাসকিনের পরের ওভারে।
সেই আউটও বিস্ময়কর। মুহূর্তের জন্য হয়তো মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছিলেন চাকাভা। তাসকিনের ফুল লেংথ স্টাম্প সোজা বলটিতে বাজেভাবে ক্রস ব্যাটে ফ্লিকের মতো করার চেষ্টা করেন তিনি। ব্যাটের ধারেকাছে ছিল না বল, উপড়ে যায় স্টাম্প।
ওপেনিং থেকে দারুণ ব্যাট করে ৯১ বলে ৮৪ রান করে থামলেন চাকাভা। তাসকিন পেলেন ম্যাচে তার প্রথম শিকারের দেখা।
৩৪.১ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ৫ উইকেটে ১৭২। নতুন ব্যাটসম্যান রায়ান বার্ল।
মুস্তাফিজের প্রথম
মায়ার্সের উইকেটের রেশ না কাটতেই জিম্বাবুয়ের জন্য আরেকটি ধাক্কা। দ্রুত জোড়া উইকেটে ম্যাচে ফিরল বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমান ধরলেন প্রথম শিকার।
মুস্তাফিঝের স্লোয়ার ডেলিভারিতে পুরোপুরি বিভ্রান্ত হয়ে যান ওয়েসলি মাধেভেরে। ডিফেন্স করতেই চেয়েছিলেন তিনি, ব্যাট বাড়ান অনেক আগে। একদমই সহজ ক্যাচ উঠে যায় শর্ট মিড উইকেট।
আগের ম্যাচে ফিফটি করা মাধেভেরে এবার আউট ৪ বলে ৩ করে।
৩০.৫ ওভারে জিম্বাবুয়ে ৪ উইকেটে ১৫৬। নতুন ব্যাটসম্যান সিকান্দার রাজা।
ঝলকেই শেষ মায়ার্স
বাংলাদেশের এই সফরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাব ডিওন মায়ার্সের। প্রতিভার ঝলক তিনি প্রতি ম্যাচেই দেখিয়েছেন দারুণ কিছু শটে। ব্যাটিংয়ে ভয়ডরহীন মানসিকতাও আছে। তবে বারবার আউট থিতু হয়ে।
একমাত্র টেস্টে ২৭ ও ২৬ রান করার পর তিন ওয়ানডেতে করলেন ১৮, ৩৪ ও ৩৪।
২০০তম ম্যাচে মাহমুদউল্লাহর দুই
নিজের দুইশতম ওয়ানডেতে আবারও বাংলাদেশের ত্রাতা মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠা জুটি ভাঙলেন তিনি ডিওন মায়ার্সকে ফিরিয়ে।
একটু জোরের ওপর করা বল কাট করতে চেয়েছিলেন মায়ার্স। কিন্তু যথেষ্ট শর্ট ছিল না বলটি, মায়ার্সের শরীরের অনেক কাছেও ছিল। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে আঘাত করে স্টাম্পে।
এতে থামল তৃতীয় উইকেটে ৭০ বলে ৭১ রানের জুটি। মায়ার্স ফিরলেন ৩৮ বলে ৩৪ রান করে।
জিম্বাবুয়ের রান ২৯.২ ওভারে ৩ উইকেটে ১৪৯। নতুন ব্যাটসম্যান ওয়েসলি মাধেভেরে। ৬৮ রানে খেলছেন চাকাভা।
দারুণ জুটির পঞ্চাশ
ব্রেন্ডন টেইলরকে হারানোর ধাক্কা সামলে ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে জিম্বাবুয়ে। রেজিস চাকাভা ও ডিওন মায়ার্স তৃতীয় উইকেটে ৫২ রানের জুটি গড়ে ফেলেছেন ৪৪ বলেই।
এই দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের আলগা বোলিংও আছে। বিশেষ করে তাসকিন আহমেদ ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন একদমই ধারাবাহিক নন। তা কাজে লাগাচ্ছেন চাকাভা ও মায়ার্স।
২৫ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ে ২ উইকেটে ১৩০। চাকাভা খেলছেন ৬৮ বলে ৫৮ রানে, মায়ার্স ২৪ বলে ২৫।
চাকাভার পঞ্চাশ
২৪তম ওভারে মাহমুদউল্লাহর বলে সিঙ্গেল নিয়ে পূর্ণ হলো রেজিস চাকাভার পঞ্চাশ। ৬২ বল খেলে তিনি পা রাখলেন ফিফটিতে। ওয়ানডেতে তার তৃতীয় ফিফটি, এই সিরিজে দ্বিতীয়।
প্রথম ম্যাচে ৫১ বলে ৫৪ করেছিলেন তিনি পাঁচে নেমে। এবারের ফিফটি ওপেন করে।
ক্যারিয়ারের প্রথম ৩৫ ওয়ানডে শেষে কোনো ফিফটিই ছির না তার। পরের ৯ ম্যাচের মধ্যে করলেন ৩টি।
জিম্বাবুয়ের একশ
মাহমুদউল্লাহর বলে রেজিস চাকাভার সিঙ্গেলে জিম্বাবুয়ের একশ হলো ঠিক ২২ ওভারে।
দীর্ঘদিন পর মাহমুদউল্লাহ
ব্রেন্ডন টেইলরের উইকেট নিয়ে আড়াই বছর পর ওয়ানডে উইকেটের স্বাদ পেলেন মাহমুদউল্লাহ।
সবশেষ ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে কেন উইলিয়ামসনের উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এরপর চোট আর নানা কারণ মিলিয়ে তার বোলিংই করা হয়েছে কম। মাঝের এই লম্বা সময়ে কেবল ৮ ইনিংসে বোলিং করেছেন তিনি, সেটিও কেবল এক-দুই ওভার। অবশেষে প্রায় ভুলে যাওয়া স্বাদ পেলেন আবার।
জুটি ভাঙলেন মাহমুদউল্লাহ
নিজের ২০০তম ওয়ানডেতে দলকে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত উইকেটটি এনে দিলেন মাহমুদউল্লাহ। ফিরিয়ে দিলেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলরকে।
পাওয়ার প্লের মধ্যে একটি ওভার করার পর মাহমুদউল্লাহ দ্বিতীয় ওভার করতে আসেন ১৮তম ওভারে। ফিরেই পান সাফল্য। উইকেটে অবশ্য বোলারের কৃতিত্বের চেয়ে টেইলরের আয়েশি শটের ব্যর্থতাই বেশি। অফ স্টাম্পে থাকা একটি সাধারণ ডেলিভারিতে লফটেড ড্রাইভ খেলতে গিয়ে তিনি সহজ ক্যাচ তুলে দেন, মিড অফে বল হাতে জমান তামিম ইকবাল।
৩৯ বলে ২৮ রানে ফিরলেন টেইলর। রেজিস চাকাভার সঙ্গে তার দ্বিতীয় উইকেট জুটি থামল ৪২ রানে।
১৭.৪ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান ২ উইকেটে ৭৮।
‘জীবন’ নয়, সুযোগ
চতুর্দশ ওভারে আউট হতে পারতেন ব্রেন্ডন টেইলর। মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের শর্ট বল পুল করে টাইমিং ঠিকমতো করতে পারেননি জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। বল উড়ে যায় স্কয়ার লেগের দিকে। ফিল্ডার মোহাম্মদ মিঠুনের হাতে পর্যাপ্ত সময় ছিল বলের নিচে যাওয়ার। কিন্তু যথেষ্ট ক্ষীপ্রতা দেখা গেল না তার শরীরী ভাষায়। যেতে পারলেন না বলের কাছে।
প্রথাগত অর্থে জীবন পাওয়া এটি নয়, অবশ্যই একটি সুযোগ। টেইলরের রান তখন ১৫।
জিম্বাবুয়ের ফিফটি
১২ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের রান ৪৮। পঞ্চাশও হয়ে গেল সেখানেই! ১৩ ওভারের প্রথম বলটি তাসকিন আহমেদ করলেন বাউন্সার। বল ব্যাটসম্যানের ওপর দিয়ে কিপারে মাথারও ওপর দিয়ে চলে গেল বাউন্ডারিতে। ওয়াইড ও বাই চার মিলিয়ে ৫ রান।
পাওয়ার প্লে
পাওয়ার প্লের ১০ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের রান ১ উইকেটে ৩৮। রেজিস চাকাভা অপরাজিত ২৮ রানে, ব্রেন্ডন টেইলর ১।
আগের দুই ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে জিম্বাবুয়ে করেছিল ৪৬ ও ৪৭। তবে দুই ম্যাচেই উইকেট হারিয়েছিল তারা দুটি করে।
বোলিংয়ে এসেই সফল সাকিব
জিম্বাবুয়ের উদ্বোধনী জুটি ভাঙতে মরিয়া তামিম ইকবাল ৯ ওভারের মধ্যেই আক্রমণে আনলেন পঞ্চম বোলার। সাফল্য ধরা দিলল সেই পথেই। নিজের প্রথম ওভারেই বাংলাদেশকে উইকেট এনে দিলেন সাকিব আল হাসান।
সাকিবের প্রথম ওভারের সেটি চতুর্থ বল। মিডল স্টাম্পে থাকা লেংথ বল সুইপ করার চেষ্টা করেন বাঁহাতি টাডিওয়ানাশে মারুমানি। ব্যাটে-বলে হয়নি। বল লাগে প্যাডে। আবেদনে সাড়া দিতে খুব একটা সময় নেননি আম্পায়ার।
মারুমানি ফিরলেন ১৯ বলে ৮ রান করে। ৩৬ রানে থামল উদ্বোধনী জুটি।
শুরুর দিকেই আক্রমণে মাহমুদউল্লাহ
১০ ওভারের ভেতরেই আক্রমণে স্পিন নিয়ে এলো বাংলাদেশ। তবে সাকিব আল হাসান নন, বল পেলেন মাহমুদউল্লাহ।
বাড়তি ব্যাটসম্যান খেলানোয় এই ম্যাচে পঞ্চম বোলারের কাজটি করতে হবে মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক, আফিফদের। তবু ১০ ওভারের মধ্যেই মাহমুদউল্লাহর আক্রমণে আসা একটু চমকপ্রদই।
অবিশ্বাস্য কিন্তু সত্যি
উদ্বোধনী জুটিতে ৩০ রান এমন কিছু নয়। কিন্তু জিম্বাবুয়ের জন্য এটিই ছিল প্রায় পরম কাঙ্ক্ষিত!
এই ম্যাচের আগে সবশেষ ৩০ ছোঁয়া ওপেনিং জুটি পেয়েছে তারা ২০১৯ সারের এপ্রিলে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ৪৪ রানের জুটি গড়েছিলেন ব্রায়ান চারি ও রেজিস চাকাভা। এরপর পেরিয়ে গেছে ১৩ ম্যাচ। অবশেষে আরেক জুটি ছাড়াল ৩০ রান।
৭ ওভার শেষে চাকাভা ও মারুমানি জুটির রান ৩৩।
৫ ওভারে উইকেট নেই
সতর্ক ব্যাটিংয়ে শুরু করেছে জিম্বাবুয়ে। রান খুব বেশি না এলেও প্রথম পাঁচ ওভারে উইকেট হারাতে দেননি রেজিস চাকাভা ও টাডিওয়ানাশে মারুমানি।
বাংলাদেশের হয়ে বোলিং সূচনা করেন তাসকিন আহমেদ। প্রথম ওভারটি দুর্দান্ত করেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনকে দারুণ দুটি শটে বাউন্ডারি মারেন চাকাভা। সাইফকে এক ওভারেই থামিয়ে ওই প্রান্তে মুস্তাফিজুর রহমানকে আক্রমণে আনেন অধিনায়ক।
প্রথম চার ওভারে রান না পেয়ে মারুমানি রানের খাতা খোলেন ছক্কায়। তবে সেই ছক্কার খুব বেশি কিছু তিনি নিজে জানতেন বলে মনে হয় না! তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে পুল করার চেষ্টা করেন তিনি। টাইমিং, পজিশন ঠিক ছিল না একদমই। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে থার্ড ম্যানের ওপর দিয়ে পেরিয়ে যায় সীমানা।
৫ ওভারে জিম্বাবুয়ের রান কোনো উইকেট না হারিয়ে ২০। মারুমানি খেলছেন ৬ রানে, চাকাভা ১৩।
কিপিংয়ে সোহান
একাদশের অফিসিয়াল তালিকায় বাংলাদেশ কিপার হিসেবে উল্লেখ করেছে লিটন দাসকে। তবে কিপিং করছেন একাদশে ফেরা নুরুল হাসান সোহান। একাদশে কিপার আছেন মোহাম্মদ মিঠুনও।
ভিন্ন উইকেট
প্রথম দুই ওয়ানডেতে যে দুই উইকেটে খেলা হয়েছে, তৃতীয় ওয়ানডের উইকেট সেসব থেকে আলাদা। নতুন উইকেট ম্যাচ, উইকেটের ধরনও খানিকটা আলাদা। টস রিপোর্টে ধারাভাষ্যকার আতহার আলি খান বললেন, উইকেটের লেংথ এলাকায় ঘাস নেই। একদমই ব্যাটিং উইকেট। তবে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ক্রিজের কাছাকাছি জায়গায় আছে ঘাসের ছোঁয়া। বাঁহাতিদের জন্য তাই কাজটা কঠিন করে তুলতে পারেন পেসাররা, বিশেষ করে শুরুর দিকে।
দুই পরিবর্তন জিম্বাবুয়েরও
বাংলাদেশের মতো একাদশে দুটি পরিবর্তন এনেছে জিম্বাবুয়েও। বাদ পড়েছেন ওপেনার টিনাশে কামুনহুকামউই, চোট কাটিয়ে ফিরেছেন রায়ান বার্ল। বিশ্রাম পেয়েছেন বাঁহাতি পেসার রিচার্ড এনগারাভা। দলে ফিরেছেন আরেক পেসার ডোনাল্ড টিরিপানো, ব্যাট হাতেও যিনি মাথাব্যথার কারণ হতে পারেন প্রতিপক্ষের জন্য।
জিম্বাবুয়ে একাদশ: ব্রেন্ডন টেইলর (অধিনায়ক), টিমাইসেন মারুমানি, রায়ান বার্ল, রেজিস চাকাভা, ডিওন মায়ার্স, ওয়েসলি মাধেভেরে, সিকান্দার রাজা, ডোনাল্ড টিরিপানো, লুক জঙ্গুয়ে, ব্লেসিং মুজারাবানি, টেন্ডাই চাতারা। |
একাদশে মুস্তাফিজ-সোহান
আগের ম্যাচের একাদশ থেকে দুটি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ। ওই ম্যাচে চার উইকেট শিকারী তরুণ বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম পেয়েছেন বিশ্রাম। তার জায়গায় চোট কাটিয়ে ফিরেছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান।
আরেকটি পরিবর্তন বাধ্য হয়েই করতে হয়েছে বলে টসের সময় জানালেন অধিনায়ক তামিম। আগের ম্যাচে নিজের বলে ফিল্ডিং করতে গিয়ে আঙুলে চোট পেয়েছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারের জায়গায় ব্যাটিংয়ে শক্তি বাড়িয়েছে বাংলাদেশ। একাদশে এসেছেন কিপার ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান সোহান।
ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ওয়ানডেতে ২৪ ও ৪৪ রান করার সাড়ে চার বছর পর আরেকটি ওয়ানডে খেলার সুযোগ পেলেন সোহান।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মোসাদ্দেক হোসেন, মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদউল্লাহ, আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান। |
এবার টসে তামিমের হাসি
প্রথম দুই ম্যাচে টসে হারার পর এবার মুদ্রা নিক্ষেপে ভাগ্যকে পাশে পেয়েছেন তামিম ইকবাল। আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
টস জয়ের পর তামিম বললেন, উইকেট আগের ম্যাচের মতোই ব্যাটিং সহায়ক মনে হচ্ছে তার কাছে। তবে পেসারদের যা একটু সহায়তা থাকবে, তা প্রথম ঘণ্টায়। সেই সুবিধা কাজে লাগাতে চায় বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক ব্রেন্ডন টেইলর বললেন, টস জিতলে আগে ব্যাটিংই নিতেন।
মাহমুদউল্লাহর ডাবল সেঞ্চুরি
বাংলাদেশ ক্রিকেটে ‘ক্রাইসিস ম্যান’, দলের বিপদে বরাবরের ভরসা মাহমুদউল্লাহর জন্য এটি দারুণ এক মাইলফলেক ম্যাচ। ওয়ানডে ক্রিকেটে ১৪ বছরের পথচলায় খেলতে নামছেন তিনি ২০০তম ম্যাচ।
বাংলাদেশের হয়ে এই স্বাদ আগে পেয়েছেন কেবল চারজন, মুশফিকুর রহিম, মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল।
৩০ পয়েন্টের পূর্ণতার খোঁজে
আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করে পরের ম্যাচ বা ম্যাচগুলিতে একটু নির্ভার থাকার দিন আর নেই। আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপ বাছাই বলে কথা!
প্রথম দুই ম্যাচে সিরিজ জিতে গেলেও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ম্যাচেও আরও ১০ পয়েন্টের অভিযানে নামবে বাংলাদেশ। গত এপ্রিলে দেশের মাঠে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জিতলেও শেষ ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর অধিনায়ক তামিম ইকবাল আক্ষেপ করেছিলেন ওই ১০ পয়েন্টের জন্য। এবার কোনো পয়েন্ট হাতছাড়া না করতে মরিয়া থাকবে দল।
দেশের বাইরে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেছে কেবল ২০০৬ সালে কেনিয়াকে ও ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে।