‘গড়পড়তা বোর্ড, গড়পড়তা দল, লজ্জাজনক ফল’

অফিসিয়ালি সিরিজটি খেলেছে ইংল্যান্ডের ‘বি’ দল। তবে অনেকের চোখে এটা তাদের ‘সি’ দল। কেউ কেউ স্রেফ ‘কাউন্টি’ দলও বলছেন। সেই দলের কাছেই হোয়াইটওয়াশড পূর্ণশক্তির পাকিস্তান। দলের এমন হারের পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতার। যথারীতি তার ক্ষোভের ভাষা তার গতিময় বাউন্সারগুলোর মতোই আক্রমণাত্মক।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2021, 04:57 AM
Updated : 14 July 2021, 04:57 AM

করোনাভাইরাস সঙ্কটে মূল দলের সবাই আইসোলেশনে যাওয়ার পর এই সিরিজ শুরুর মাত্র দুই দিন আগে জোড়াতালি দিয়ে পুরো দল সাজায় ইংল্যান্ড। সেই দলই পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল।

প্রথম দুই ম্যাচে পাকিস্তান সেভাবে লড়াই করতেই পারেনি। তৃতীয় ম্যাচে মঙ্গলবার ৩৩২ রানের বড় স্কোর গড়ে অন্তত একটা জয়ের আশা তারা জাগায়। কিন্তু ১৬৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়েও শেষ পর্যন্ত অসাধারণ রান তাড়ায় জিতে যায় ইংল্যান্ড।

ম্যাচের পর নিজের ইউটিউব চ্যানেলে শোয়েব কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন পাকিস্তানের বোর্ডকে। তার মতে, বোর্ডের কারণেই সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় এত দুর্বলতা।

“লজ্জাজনক পারফরম্যান্স এটি। আমাদের বোর্ড গড়পড়তা। তারা গড়পড়তা লোকদেরই নিয়ে আসে। ম্যানেজমেন্ট তো অবশ্যই গড়পড়তা। কাজেই তারা গড়পড়তা দলই গড়বে। গড়পড়তা লোকজনের কাছ থেকে অসাধারণ কিছু আশা করা যায় না। তাদের কাছে প্রত্যাশা করাই ভুল।”

সর্বকালের সবচেয়ে গতিময় ফাস্ট বোলারদের একজন এই তারকার মতে, পাকিস্তানের ক্রিকেট পড়ে আছে পাঁচ দশক আগের মানসিকতায়।

“এই ইংল্যান্ড দল কেন আমাদের চেয়ে এত ভালো করছে? কারণ আমাদের মানসিকতা হলো, দুটি উইকেট পড়লে ধীরেসুস্থে ব্যাট করে জুটি গড়া ও পরে দেশ ১০ ওভারে আগ্রাসী খেলা। এটা তো সত্তুরের দশকের ক্রিকেট।”

“ইংল্যান্ডের মানসিকতা হলো, ৪০ ওভারে অলআউট হলেও ৩০০ করবে। ইংল্যান্ডের প্রতিটি ব্যাটসম্যান উইকেটে গিয়েই রান তোলে। তার মানে এই নয় যে তারা স্লগ করছে। মেথডিকাল হিটিং করে তারা, এক-দুই নিয়ে রান বাড়ায়। আমরা সত্তুরের দর্শকের ক্রিকেট খেলছি কারণ আমাদের মানসিকতা এরকমই। আমরা উন্নতি করতে চাই না।”

তারকা তৈরি করতে না পারাও পাকিস্তান ক্রিকেটের একটি সঙ্কট বলে মনে করেন শোয়েব।

“লোকে খেলা দেখতে মাঠে আসছে। কিন্তু এই ধরনের পাফরম্যান্সের পর দর্শক কখনোই বাড়বে না। তরুণদের প্রেরণা জোগানোর মতো তারকাই তো নেই। তাহলে পরবর্তী শোয়েব আখতার, শহিদ আফ্রিদি, ওয়াসিম আকরাম কোত্থেকে আসবে? ব্র্যান্ড গড়ে তুলতে হবে।”

পাকিস্তান ক্রিকেটে অবশ্য একটি প্রচলিত কথা আছে। বোর্ড ও ক্রিকেটারদের এভাবে তুলাধুনা করে যারা, তারা মূলত বোর্ডের কোনো চাকরি চায় বলেই ধরে নেওয়া হয়। এভাবে তুমুল সমালোচনার পর বোর্ডের চাকরি নেওয়ার নজির আছে অসংখ্য। তবে শোয়েব সেই দলে নন বলেই দাবি করলেন।

“পাকিস্তান ক্রিকেট খুব বাজে অবস্থায় আছে। আমার চাকরি প্রয়োজন বলে বকবক করছি না। এসব বলছি, কারণ আমি আহত হয়েছি। দেশের হয়ে এই খেলাটা আমি খেলেছি। আমি মাঠে ছুটেছি এটার জন্য, লোকের যেন পয়সা উসুল হয় এবং সেটা হয়েছেও।”

“দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এখন এই দল আমাকে সেই তৃপ্তি দিচ্ছে না। এই অবস্থা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, অপ্রত্যাশিত। এসব খতিয়ে দেখা দরকার।”