অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে আরও এগিয়ে হেটমায়ার-রাসেলরা

ব্যাটে বড় রান নেই, চার-ছক্কার ঝড় নেই। সিরিজ শুরুর আগে শিমরন হেটমায়ারকে নিয়ে কত সমালোচনা! তরুণ ব্যাটসম্যানের পাশে দাঁড়ালেন অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। হেটমায়ার দিলেন সেটির প্রতিদান। চোট পাওয়া অধিনায়কের অনুপস্থিতিতে করলেন ঝড়ো ফিফটি। সঙ্গে ডোয়াইন ব্রাভো, আন্দ্রে রাসেলদের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে পাত্তাই পেল না অস্ট্রেলিয়া।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 July 2021, 04:20 AM
Updated : 11 July 2021, 04:20 AM

সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ৫৬ রানে। টানা দুই দিনের জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ক্যারিবিয়ানরা এগিয়ে ২-০তে।

সেন্ট লুসিয়ায় হেটমায়ারের বিধ্বংসী ফিফটির সঙ্গে ব্রাভো-রাসেলের কার্যকর ইনিংসে ২০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তোলে ১৯৬ রান। স্মিথ-ওয়ার্নার-ম্যাক্সওয়েলদের দেশে রেখে আসা অস্ট্রেলিয়া করতে পারে কেবল ১৪০।

ড্যারেন স্যামি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে শুরু ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে ক্যারিবিয়ানরা। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে পোলার্ডের চোটে নেতৃত্ব দেন নিকোলাস পুরান।

এভিন লুইসের বিশ্রামে সুযোগ পাওয়া আন্দ্রে ফ্লেচার ছক্কা মারেন মিচেল স্টার্কের করা প্রথম ওভারেই। আউটও হন ফ্লেচারই (৯) আগে।

রান খরায় থাকা ক্রিস গেইল এই ম্যাচেও ফিরতে পারেননি ফর্মে (১৬ বলে ১৩)। তিন ছক্কায় লেন্ডল সিমন্সের ইনিংস থামে ২১ বলে ৩০ করে।

১১ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ছিল ৩ উইকেটে ৭৮। পরের ভাগে পেশী আর সাহসের জোরে ইনিংসের চিত্র বদলে দেন হেটমায়ার, ব্রাভো, রাসেলরা। চার-ছক্কা আসতে থাকে প্রতি ওভারেই।

স্টার্ককে চোখধাঁধানো স্কুপে ছক্কা মেরে হেটমায়ার ফিফটিতে পা রাখেন ২৯ বলে।

সাম্প্রতিক সময়ে আট-নয়ে ব্যাট করা ব্রাভো এ দিন পাঁচ বছর পর সুযোগ পান পাঁচ নম্বরে ব্যাট করার। শুরুটা হয় তার একটু ধীরে, জীবনও পান দুই দফায়। পরে পুষিয়ে দেন।

অস্ট্রেলিয়ার আরেকটি উইকেট, ক্যারিবিয়ানদের উল্লাস। ছবি: উইন্ডিজ ক্রিকেট।

চার ছক্কায় হেটমায়ারের ৩৬ বলে ৬১ রানের ইনিংস রান আউটে শেষ হয় ১৮তম ওভারে। টি-টোয়েন্টিতে তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস এটি। ব্রাভোর সঙ্গে তার জুটিতে আসে ৬১ বলে ১০৩।

শেষ দিকে তাণ্ডব চালান রাসেল। স্টার্ককে টানা দুই বলে মারে চার-ছক্কা। শেষ ওভারে ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানকে বাউন্ডারির পর ছক্কায় শেষ করেন ইনিংস।

৮ বলে ২৪ করে অপরাজিত থাকেন রাসেল, ৩৪ বলে অপরাজিত ৪৭ ব্রাভো।

উইকেট ম্যাচের পরের ভাগেও থেকে গেছে ব্যাটিং সহায়ক। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া কোনো রকম চ্যালেঞ্জই জানাতে পারেনি রান তাড়ায়। আগের ম্যাচের ৪ উইকেট শিকারি পেসার ওবেড ম্যাককয়কে বিশ্রাম দিয়েও ক্যারিবিয়ানরা জিতে যায় অনায়াসে।

প্রথম ওভারেই ম্যাথু ওয়েডকে ফেরান শেলডন কটরেল। পরের ওভারে অ্যারন ফিঞ্চকে বিদায় করেন ফিদেল এডওয়ার্ডস। নিজের দ্বিতীয় ওভারে চোট নিয়ে মাঠ ছাড়েন এডওয়ার্ডস। দলকে তাতে ভুগতে হয়নি।

প্রথম ম্যাচে ফিফটি করা মিচেল মার্শ কেবল একটু লড়াই চালিয়ে যান। সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি আর কেউ। দু অঙ্ক স্পর্শ করেন কেবল আর জশ ফিলিপি (১৩) ও মোইজেস হেনরিকেস (১৯)। টানা দ্বিতীয় ফিফটিতে মার্শ করেন ৪২ বলে ৫৪।

মার্শেরটিসহ দুর্দান্ত বোলিংয়ে তিন উইকেট নেন হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র। আগের ম্যাচেও ৩ উইকেট নিয়েছিলেন এই লেগ স্পিনার।

দারুণ ব্যাটিংয়ে ম্যাচ সেরা হয়ে হেটমায়ার বলেন, টি-টোয়েন্টিতে এটিই তার সেরা ইনিংস।

এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ জয়ের আর অস্ট্রেলিয়ার টিকে থাকার লড়াই বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার ভোরে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২০ ওভারে ১৯৬/৪ (সিমন্স ৩০, ফ্লেচার ৯, গেইল ১৩, হেটমায়ার ৬১, ব্রাভো ৪৭*, রাসেল ২৪*; স্টার্ক ৪-০-৪৯-০, হেইজেলউড ৪-০-৩৯-১, অ্যাগার ৪-০-২৮-১, জ্যাম্পা ৪-০-৩৬-০, মিচেল মার্শ ২-০-১৮-১, ক্রিস্টিয়ান ২-০-২২-০)।

অস্ট্রেলিয়া: ১৯.২ ওভারে ১৪০ (ওয়েড ০, ফিঞ্চ ৬, মার্শ ৫৪, ফিলিপি ১৩, হেনরিকেস ১৯, ম্যাকডারমট ৭, ক্রিস্টিয়ান ৯, অ্যাগার ১, স্টার্ক ৮*, জ্যাম্পা ৩, হেইজেলউড ৪; কটরেল ৩-০-২২-২, এডওয়ার্ডস ১.৫-০-৮-১, সিমন্স ০.১-০-১-০, রাসেল ৩-০-২২-১, ব্রাভো ৩-০-২৯-১, অ্যালেন ৪-০-২২-০, ওয়ালশ ৪-০-২৯-৩, গেইল ০.২-০-১-১)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫৬ রানে জয়ী।

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০তে এগিয়ে।

ম্যান অব দা ম্যাচ: শিমরন হেটমায়ার।