কার্ডিফে বৃহস্পতিবার বাবর আজমের দলকে ৯ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে এগিয়ে গেছে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। ইংল্যান্ডের হয়ে সীমিত ওভারে প্রথম ম্যাচে অধিনায়কত্ব করতে নেমেই জয়ের দেখা পেলেন স্টোকস।
সাকিব মাহমুদের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে পাকিস্তান ১৪১ রানেই গুটিয়ে যায়। এই পেসার ৪২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে হন ম্যাচ সেরা। তার আগের সেরা ২/৩৬।
মালান ও ক্রলির অবিচ্ছিন্ন ১২০ রানের জুটিতে ইংল্যান্ড লক্ষ্যে পৌঁছায় ১৬৯ বল আগেই। ওয়ানডেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এর চেয়ে বেশি বল বাকি রেখে জয় নেই তাদের।
ইনিংস শুরু করতে নেমে মালান অপরাজিত ছিলেন ৬৮ রানে। অভিষেকে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে ক্রলি মাঠ ছাড়েন দলকে জিতিয়ে।
পুরো নতুন একাদশ নিয়ে ইংল্যান্ডের এই ম্যাচ খেলতে নামার কারণ প্রথমে ঘোষিত দলে করোনাভাইরাসের ছোবল। ওয়েন মর্গ্যানরা আছেন আইসোলেশনে, তাই দ্বিতীয় সারির দল সাজাতে হয়েছে স্বাগতিকদের।
সোফিয়া গার্ডেনে এদিন খেলতে নামা ইংল্যান্ড একাদশের সম্মিলিত ওয়ানডে অভিজ্ঞতা ১২৪ ম্যাচের। যেখানে স্টোকস একাই খেলেছেন ৯৮ ওয়ানডে। আর পাকিস্তানের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানই খেলে ফেলেছেন মোট ১৭৩ ম্যাচ।
কিন্তু মাঠে সফরকারীরা কাজে লাগাতে পারেনি তাদের অভিজ্ঞতার এতটুকুও। টস হেরে ব্যাটিং করতে নামা দলের শুরুটা হয় দুঃস্বপ্নের মতো। দলের খাতায় রান যোগ হওয়ার আগেই নেই তাদের দুই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
ইনিংসের প্রথম বলেই তারা হারায় ইমাম-উল-হককে। এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে বাঁহাতি এই ওপেনারকে ফেরায় ইংল্যান্ড। পেসার সাকিব এক বল পরেই ফিরিয়ে দেন প্রতিপক্ষ অধিনায়ক বাবরকে।
দলের হাল ধরতে পারেননি মোহাম্মদ রিজওয়ান, অভিষিক্ত সৌদ সাকিল। ২৬ রানে ৪ উইকেট হারানো পাকিস্তানকে কিছুক্ষণ টানেন শোয়েব মাকসুদ ও ফখর জামান। ইনিংসের একমাত্র পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি আসে তাদের ব্যাটে।
৫৩ রানের এই জুটি ভাঙে মাকসুদ (১৯) রান আউট হলে। ফখর লড়াই চালান আরও কিছুক্ষণ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লেগ স্পিনার ম্যাট পারকিনসনের বলে ধরা পড়েন পয়েন্টে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন তিনি।
এরপর আর দাঁড়াতেই পারেনি পাকিস্তান। শাদাব খানের ৩০ রানের সুবাদে দেড়শর কাছাকাছি যেতে পারে তারা।
রান তাড়ায় শুরুতে হোঁচট খায় ইংল্যান্ড। পঞ্চম ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে স্লিপে ধরা পড়েন অভিষিক্ত ফিল সল্ট। শুরুর ওই ধাক্কা কাটিয়ে মালান ও ক্রলি খেলতে থাকেন সাবলীলভাবে। ১৬ ওভারে শতরান পূর্ণ করে ফেলে ইংল্যান্ড।
ক্যারিয়ারের চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নামা মালান ৫০ বলে স্পর্শ করেন দ্বিতীয় ফিফটি। ৬৯ বলে ৮ চারে তিনি করেন ৬৮, যা তার ক্যারিয়ার সেরা।
ক্রলি রান বাড়ান আরও দ্রুত। ৪৪ বলে ফিফটি করে তিনি অপরাজিত থাকেন ৫০ বলে ৭ চারে ৫৮ করে।
আগামী শনিবার সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৩৫.২ ওভারে ১৪১ (ইমাম ০, ফখর ৪৭, বাবর ০, রিজওয়ান ১৩, সাকিল ৫, মাকসুদ ১৯, শাদাব ৩০, ফাহিম ৫, হাসান ৬, আফ্রিদি ১২, রউফ ০*; সাকিব ১০-১-৪২-৪, গ্রেগরি ৪-১-১১-১, ওভারটন ৬.২-০-২৩-২, কার্স ৭-০-৩১-০, পারকিনসন ৭-০-২৮-২, স্টোকস ১-০-৬-০)।
ইংল্যান্ড: ২১.৫ ওভারে ১৪২/১ (সল্ট ৭, মালান ৬৮*, ক্রলি ৫৮*; আফ্রিদি ৫-০-২২-১, হাসান ৪-০-৩৩-০, রউফ ৪-০-২৮-০, ফাহিম ৫-০-৩৩-০, শাদাব ৩-০-২২-০, সাকিল ০.৫-০-৩-০)।
ফল: ইংল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে ইংল্যান্ড।
ম্যান অব দা ম্যাচ: সাকিব মাহমুদ।