মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ১৫০, বাংলাদেশ ৪৬৮

দিনের শুরুতে প্রশ্ন ছিল, মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিন আহমেদের জুটি কতক্ষণ টিকবে। সময় যত গড়াল, সেই প্রশ্ন রূপ নিল বিস্ময়ে, আরও কত দূর যাবে এই জুটি! শেষ পর্যন্ত এই জুটি থামল বিশ্বরেকর্ডের কাছাকাছি গিয়ে। মাহমুদউল্লাহ স্পর্শ করলেন দেড়শ। বাংলাদেশ পেরিয়ে গেল সাড়ে চারশ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2021, 12:18 PM
Updated : 8 July 2021, 12:30 PM

হারারের টেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়েছে ৪৬৮ রান করে।

একটা সময় এই স্কোর ছিল কল্পনারও বাইরে। আগের দিন টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দল ১৩২ রানে হারায় ৬ উইকেট। সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহ, লিটন দাস ও তাসকিন আহমেদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে অভাবনীয়ভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।

এই লড়াইয়ের মূল নায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্রায় দেড় বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে তিনি অপরাজিত ক্যারিয়ার সেরা ১৫০ রান করে। আট নম্বরে নেমে এটি বাংলাদেশের হয়ে রেকর্ড গড়া ইনিংস। টেস্ট ইতিহাসে এই পজিশনে যা পঞ্চম সর্বোচ্চ।

ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে খেলেন তাসকিনও। ৭৫ রানের ইনিংসটি স্বীকৃত ক্রিকেটে তার প্রথম ফিফটি।

দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের রেকর্ড ছাপিয়ে একসময় বিশ্বরেকর্ডও ছিল নাগালে। কিন্তু মিল্টন শুম্বার বাঁহাতি স্পিনে তাসকিন স্লগ করতে গিয়ে বোল্ড হলে শেষ হয় সেই সম্ভাবনা। নবম উইকেটে দুজনের জুটি থামে ১৯১ রানে।

১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার মার্ক বাউচার ও প্যাট সিমকক্সের গড়া রেকর্ড টিকে রইল এখনও।

বাংলাদেশের রেকর্ড অবশ্য দুজন গড়েছেন ঠিকই। পেছনে পড়ে গেছে মাহমুদউল্লাহ ও আবুল হাসান জুটির ১৮৪ রান।

দিনের শুরুতে টিভি সাক্ষাৎকারে লিটন দাস বলেছিলেন, শেষ দুই জুটির কাছে দলের চাওয়া আর ৫০-৬০ রান। মাহমুদউল্লাহ ও তাসকিন প্রথম সেশনেই কোনো উইকেট না হারিয়ে তুলে ফেলেন ১১০ রান!

তাসকিন অবশ্য ৩২ রানে বেঁচে যান স্লিপে সহজ ক্যাচ দিয়েও। লাঞ্চের আগেই মাহমুদউল্লাহ স্পর্শ করেন তার সেঞ্চুরি, তাসকিন পেয়ে যান ফিফটি।

লাঞ্চের পর পর তাসকিনকে ৬৬ রানে রান আউট করার সুযোগ হাতছাড়া করে জিম্বাবুয়ে।

শেষ পর্যন্ত তাসকিন থামেন ১১ চারে ১৩৪ বলে ৭৫ করে।

এই জুটি ভাঙার পর শেষ জুটি আর টেকেনি বেশিক্ষণ। মুজারাবানির চতুর্থ শিকার হয়ে শেষ ব্যাটসম্যান ইবাদত হোসেন ফেরেন শূন্য রানে।

মাহমুদউল্লাহ তখন অপরাজিত ২৭৮ বলে ১৭ চার ও ১ ছক্কায় ১৫০ রান করে। টেস্টে তার আগের সর্বোচ্চ ছিল নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪৬।

অনেক আলোচনার জন্ম দিয়ে ৩৫ বছর বয়সে টেস্ট দলে ফেরা, নিজের ৫০তম টেস্টে দেড়শ রানের ইনিংস, দলকে বিপদ থেকে উদ্ধার, ফেরাটা এর চেয়ে স্মরণীয় আর হতে পারত না তার!

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৯৪/৮) ১২৬ ওভারে ৪৬৮ (মাহমুদউল্লাহ ১৫০*, তাসকিন ৭৫, ইবাদত ০; মুজারাবানি ২৯-৪-৯৪-৪, এনগারাভা ২৩-৫-৮৩-১, টিরিপানো ২৩-৫-৫৮-২, নিয়াউচি ১৭-১-৯২-২, মায়ার্স ৩-১-১৩-০, শুম্বা ২১-৪-৬৪-১, কাইয়া ১০-০-৪৩-০)।