দারুণ সেঞ্চুরিতে মাহমুদউল্লাহর ফেরা

এখন তার থাকার কথা ছিল জিম্বাবুয়ে যাওয়ার উড়ানে। অথচ তিনি উড়লেন হারারের ২২ গজে! শুরুতে টেস্ট স্কোয়াডে না থেকেও পরে জায়গা পেয়ে, অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়ে একাদশে ঢুকে দলের বিপর্যয়ে ব্যাটিং করতে নেমে অসাধারণ সেঞ্চুরি। প্রায় দেড় বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে মাহমুদউল্লাহ বুঝি জানিয়ে দিলেন ‘আমি ফিরেছি থাকতেই।’

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 July 2021, 09:45 AM
Updated : 8 July 2021, 09:45 AM

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারারে টেস্টের প্রথম দিনে দলকে বিপদ থেকে টেনে তোলায় মাহমুদউল্লাহর ছিল ভূমিকা। দ্বিতীয় দিনে তিনি পূরণ করলেন সেঞ্চুরি। টেস্ট ক্রিকেটে তার পঞ্চম শতরান এটি।

এই সফরের জন্য প্রথমে ঘোষিত বাংলাদেশের ১৭ জনের দলে ছিল না মাহমুদউল্লাহর নাম। থাকার কথাও ছিল না। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সফরের পর থেকেই তিনি ছিলেন টেস্ট দলের বাইরে। সেটি নিয়ে প্রশ্নও ছিল না। পারফরম্যান্স ছিল বাদ পড়ার মতোই। ওয়ানডে দলের অন্যদের সঙ্গে এখন তার থাকার কথা ছির জিম্বাবুয়ের পথে।

কিন্তু স্কোয়াড ঘোষণার তিন দিন পর আচমকাই টেস্ট দলে যুক্ত করা হয় তাকে। আলোচনা-সমালোচনাও হয় অনেক। বাদ পড়ার পর থেকে বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে কিছুই যে করেননি তিনি! নির্বাচকরা জানান, তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের চোট শঙ্কা ভাবনায় রেখে অভিজ্ঞতার বিবেচনায় ফেরানো হয় মাহমুদউল্লাহকে।

স্কোয়াড থেকে এরপর জায়গা মেলে একাদশে, অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে। অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয় এই সিদ্ধান্তও। কিন্তু প্রথম দিনে যখন ১৩২ রানে দল হারায় ৬ উইকেট, সেই অষ্টম ব্যাটসম্যানই হয়ে ওঠেন ত্রাতা!

লিটন দাসের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর ১৩৮ রানের জুটিতে শুধু বিব্রতকর অবস্থা থেকে রক্ষা নয়, ভালো স্কোরের পথেও এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। সপ্তম উইকেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটি যা।

লিটন তার সেঞ্চুরি হাত থেকে ফেলে আসেন ৯৫ রানে আউট হয়ে। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ হাল ছাড়েননি। প্রথম দিন শেষ করেন ৫৪ রান নিয়ে। দ্বিতীয় দিন তাসকিন আহমেদকে নিয়ে চালিয়ে যান লড়াই। দারুণ ব্যাটিংয়ে তাসকিন জোগান ভরসা।

দিনের শুরুতে তাসকিন ছিলেন অগ্রণী। পরে দুর্দান্ত কয়েকটি শটে মাহমুদউল্লাহ এগিয়ে যান শতরানের পথে। এরপর অনিয়মিত স্পিনার রয় কাইয়ার বলে টানা দুই বাউন্ডারিতে তিন অঙ্কে পা রাখেন ১৯৫ বলে।

আগের দিন তার ফিফটি এসেছিল ১৩৩ বলে। পরের পঞ্চাশে বল লাগল ৬২টি।

বাংলাদেশের হয়ে আট নম্বর ব্যাটসম্যানের পঞ্চম সেঞ্চুরি এটি। এর দুটিই এলো মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে। প্রথমটি ছিল ২০১০ সালে ভারতের বিপক্ষে।

সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পর দুহাত উঁচিতে হুঙ্কার ছুঁড়লেন মাহমুদউল্লাহ। ড্রেসিং রুমের বাইরে তখন তুমুল করতালি দিচ্ছেন সতীর্থরা। সেদিকে তাকিয়ে আঙুল উঁচিয়ে তিনি ইশারা করলেন ওপরের দিকে। হয়তো বোঝাতে চাইলেন, ‘ভাগ্যেই লেখা ছিল এই সেঞ্চুরি।’