লন্ডনের কেনিংটন ওভালে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৮ উইকেটে জিতেছে ওয়েন মর্গ্যানের দল। জেসন রয়, জো রুট ও মর্গ্যানের ফিফটিতে ২৪২ রানের লক্ষ্য স্বাগতিকরা পেরিয়ে যায় ৪২ বল বাকি থাকতে।
প্রথম ম্যাচ জিতে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের পয়েন্ট টেবিলে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে চূড়ায় উঠেছিল ইংল্যান্ড। আরও ১০ পয়েন্ট পেয়ে তারা মজবুত করল শীর্ষস্থান। আরেকটি হারে তলানিতেই থেকে গেল শ্রীলঙ্কা।
ইংল্যান্ডের জয়ের মূল কারিগর স্যাম কারান ৪৮ রানে নেন ৫ উইকেট। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবার পেলেন এই স্বাদ। ওয়ানডেতে এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারে আগের সেরা বোলিং ছিল ৩৫ রানে ৩ উইকেট। তার নতুন বলের সঙ্গী আরেক বাঁহাতি পেসার উইলির প্রাপ্তি ৪টি, ৬৪ রানে।
এই সংস্করণে বোলিং ইনিংস শুরু করে বাঁহাতি পেসারদের যৌথভাবে সর্বোচ্চ উইকেট এটি (৯)। ২০১৯ বিশ্বকাপে লর্ডসে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার দুই বাঁহাতি পেসার জেসন বেহরেনডর্ফ ৫টি ও মিচেল স্টার্ক নিয়েছিলেন ৪টি।
২১ রানে ৪ উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কা আড়াইশর কাছাকাছি যেতে পারে মূলত ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও দাসুন শানাকার ব্যাটে। ৯ রানের জন্য সেঞ্চুরি পাননি ধনাঞ্জয়া, শানাকা ৩ রানের জন্য পাননি ফিফটি। আর কেউ যেতে পারেনি ত্রিশ পর্যন্ত।
পরের ওভারে স্যাম কারান চার বলের মধ্যে ফিরিয়ে দেন কুসল পেরেরা ও আভিশকা ফার্নান্দোকে। দুজনই এলবিডব্লিউ। ঊরুর মাংসপেশির চোটে প্রাথমিকভাবে সিরিজ থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন আভিশকা। অপ্রত্যাশিতভাবে ফেরেন তিনি।
স্যাম কারান আঘাত হানেন তার পরের ওভারেও। দারুণ এক ইনসুইঙ্গারে বোল্ড করে দেন নিসানকাকে। উইলির শর্ট বলে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন চারিথ আসালঙ্কা।
সাত ওভারের মধ্যে চার ব্যাটসম্যানকে হারানো দলকে পথ দেখান চোট কাটিয়ে ফেরা ধনাঞ্জয়া। প্রথমে ভানিন্দু হাসারাঙ্গার সঙ্গে গড়েন ৬৫ রানের জুটি। ৪৯ বলে ২৬ রান করে স্যাম কারানের চতুর্থ শিকার হয়ে ফেরেন হাসারাঙ্গা।
এরপর শানাকার সঙ্গে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ (৭৮) জুটির পথে ধনাঞ্জয়া ফিফটি পূরণ করেন ৫৮ বলে। প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরির পথেই ছিলেন তিনি। কিন্তু উইলির শর্ট বল পুল করার চেষ্টায় ডিপ স্কয়ার লেগে ধরা পড়েন ৯১ রানে। ঠিক ৯১ বলেই ১৩ চারে সাজানো তার ইনিংসটি।
দলের স্কোর দুইশ পার করে বিদায় নেন শানাকা। ৬৭ বলে ২ চার ও একটি ছক্কায় করেন ৪৭ রান। এরপর লেজের ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় ২৪১ পর্যন্ত যেতে পারে সফরকারীরা। চামিকা করুনারত্নেকে ফিরিয়ে স্যাম কারান পূর্ণ করেন ৫ উইকেট।
রান তাড়ায় রয় ও জনি বেয়ারস্টোর ব্যাটে দারুণ সূচনা পায় ইংল্যান্ড। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে দুই ওপেনার তোলেন ৬৫ রান। লেগ স্পিনার হাসারাঙ্গাকে কাট করার চেষ্টায় বেয়ারস্টো বোল্ড হলে ভাঙে ৭৬ রানের জুটি। ৩৬ বলে ৩ চার ও একটি ছক্কায় তিনি করেন ২৯ রান।
ওয়ানডে সিরিজে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা রয় ফিফটি তুলে নেন ৪৭ বলে। এরপর বেশিদূর এগোতে পারেননি। ধনাঞ্জয়ার দারুণ ক্যাচে বিদায় নেন ৬০ রানে। তার ৫২ বলের ইনিংস গড়া ১০টি চারে।
সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হওয়া শ্রীলঙ্কার সামনে এবার ওয়ানডেতে এই তেতো স্বাদ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ। আগামী রোববার ব্রিস্টলে হবে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৪১/৯ (নিসানকা ৫, পেরেরা ০, আভিশকা ২, ধনাঞ্জয়া ৯১, আসালঙ্কা ৩, হাসারাঙ্গা ২৬, শানাকা ৪৭, চামিকা ২১, বিনুরা ১৭, চামিরা ১৪*, আসিথা ১*; উইলি ১০-১-৬৪-৪, স্যাম কারান ১০-১-৪৮-৫, টম কারান ১০-০-৪৩-০, উড ১০-১-৩৫-০, রশিদ ১০-০-৫০-০)
ইংল্যান্ড: ৪৩ ওভারে ২৪৪/২ (রয় ৬০, বেয়ারস্টো ২৯, রুট ৬৮*, মর্গ্যান ৭৫*; চামিরা ৯-০-৪৬-০, বিনুরা ৯-০-৫৩-০, আসিথা ১০-০-৫৪-০, হাসারাঙ্গা ৭-০-৪৬-১, চামিকা ৬-০-৪৬-১, ধনাঞ্জয়া ২-০-১০-০)
ফল: ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজের দুটি শেষে ২-০ তে এগিয়ে ইংল্যান্ড
ম্যান অব দা ম্যাচ: স্যাম কারান।