মুশফিককে ছাড়াই জিতে শীর্ষে আবাহনী

চোট নিয়ে লিগ শেষ মুশফিকুর রহিমের, তবে শেষ হলো না আবাহনীর দাপট। দলের অধিনায়ক ও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের অভাব বুঝতেই দিলেন না অন্যরা। শিরোপা প্রত্যাশী আরেক দল প্রাইম দোলেশ্বরের ট্রফির আশা শেষ করে দিয়ে আবাহনী উঠে গেল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2021, 05:04 PM
Updated : 23 June 2021, 07:03 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির সুপার লিগের গুরুত্বপূর্ণ লড়াইয়ে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে আবাহনী লিমিটেডের জয় ৭ উইকেটে।

১৪ ম্যাচে আবাহনী ও প্রাইম ব্যাংকের পয়েন্ট (২২) ও জয় সংখ্যা (১১) এখন সমান। আগের রাউন্ড শেষে রান রেটে এগিয়ে ছিল প্রাইম ব্যাংক, এই রাউন্ড শেষে ওপরে আবাহনী। দোলেশ্বরের পয়েন্ট ১৯, শেষ দুই ম্যাচ জিতলেও তাদের শিরোপা জয় সম্ভব নয়।

দারুণ ফর্মে থাকা মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন ও বাঁহাতি পেসার মেহেদি হাসান রানার দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রাইম দোলেশ্বরকে ১৩৫ রানেই আটকে রাখে আবাহনী। রান তাড়ায় তারা ৫ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৩৬ রান তোলার পর বৃষ্টিতে বন্ধ হয় খেলা। পরে ১৩ ওভারে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৯১। জিতে যায় তারা ৭ বল বাকি রেখে।

২৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা সাইফ উদ্দিন। এই নিয়ে সবশেষ চার ম্যাচে এই পেসারের শিকার ১১ উইকেট। ৪ ওভারে ১৭ রান দিয়ে মেহেদি রানার শিকার ২টি।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দোলেশ্বরের শুরুটা খারাপ ছিল না। ম্যাচের প্রথম ওভারে সাইফ উদ্দিনকে দুটি বাউন্ডারিতে শুরু করেন সাইফ হাসান। পরের দুই ওভারেও তার ব্যাট থেকে আসে দুটি বাউন্ডারি। থমকে যা তিনি চতুর্থ ওভারেই। আরাফাত সানিকে ইনসাইড আউট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন কাভারে (১৪ বলে ২০)।

এমন শুরুর পর দোলেশ্বরে ইনিংস গতি হারায় দ্বিতীয় উইকেটে। ইমরান উজজামান তুলতে পারেননি প্রত্যাশিত ঝড়। তিন নামা ফজলে মাহমুদ রাব্বি প্রান্ত বদলাতেই ভুগতে থাকেন। দ্বিতীয় জুটিতে দুজনের ৪১ রানের জুটি আসে ৪০ বলে।

৩১ বলে ৩১ করে ইমরান ফেরেন আরাফাত সানির অসাধারণ ক্যাচে। মেহেদি রানার বলে ইমরানের পুল শটে ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে বল যায় পেছনে। শর্ট ফাইন লেগে থেকে পেছন থেকে অনেকটা ছুটে দুর্দান্ত ডাইভিং ক্যাচ নেন সানি।

ইনিংসকে গতি দিতে পারেননি পরের ব্যাটসম্যানরাও। অভিজ্ঞ মার্শাল আইয়ুব ১৭ বলে করেন ১৭। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার দিনে শামীম হোসেন করতে পারেন ৮ বলে ২ রান।

ইনিংসের শুরুর দিকে মোসাদ্দেক হোসেনকে সহজ ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গিয়ে কাজে লাগাতে পারেননি ফজলে মাহমুদ। চতুর্থ ওভারে উইকেটে গিয়ে টিকে থাকেন লম্বা সময়, কিন্তু ছন্দ পাননি একদমই। শেষ ওভারে সাইফ উদ্দিনের দারুণ ইয়র্কারে যখন এলবিডব্লিউ হলেন, তার নামের পাশে রান ৪১ বলে ৩২!

শেষ দিকে অধিনায়ক ফরহাদ রেজার ৭ বলে ১৯ রানের ইনিংস দোলেশ্বরকে নিয়ে যায় ১৩৫ পর্যন্ত।

রান তাড়ায় লিটন দাস ও মুনিম শাহরিয়ারের উদ্বোধনী জুটিই আবাহনীকে এগিয়ে নেয় অনেকটা দূর। ৫২ বলে ৬৬ রানের জুটি গড়েন দুজন।

২৫ বলে ২৭ করে লিটন আউট হন রেজাউর রহমানের বলে শফিকুল ইসলামের দুর্দান্ত ক্যাচে। খানিক পর শরিফউল্লাহকে ফিরতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মুনিমও। চলতি লিগের চমক এই ব্যাটসম্যানের রান এবার ৩৪ বলে ৪৪।

পরে নাজমুল হোসেন শান্ত ফিরে যান শূন্য রানে। তবে জিততে কোনো বেগ পেতে হয়নি আবাহনীকে। মুশফিকের অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব পাওয়া মোসাদ্দেক হোসেনের টানা দুই বাউন্ডারিতে ধরা দেয় জয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম দোলেশ্বর: ২০ ওভারে ১৩৫/৬ (ইমরান ৩১, সাইফ ২০, ফজলে মাহমুদ ৩২, মার্শাল ১৭, শামীম ২, ফরহাদ রেজা ১৯, কামরুল রাব্বি ১*, শরিফউল্লাহ ৩*; সাইফ উদ্দিন ৪-০-২৭-৩, আরাফাত সানি ৩-০-১৭-১, তানজিম ৪-০-৩৯-০, মোসাদ্দেক ৪-০-২৬-০, মেহেদি রানা ৪-০-১৭-২, আমিনুল ১-০-৭-০)।

আবাহনী: (লক্ষ্য ১৩ ওভারে ৯১) ১১.৫ ওভারে ৯৪/৩ (লিটন ২৫, মুনিম ৪৪, শান্ত ০, মোসাদ্দেক ৯*, আফিফ ৩*; শফিউল ২-০-১৬-০, এনামুল জুনি. ৩-০-১৪-০, শরিফউল্লাহ ২-০-১৮-১, কামরুল রাব্বি ২-০-৯-১, রেজাউর ২.৪-০-২৯-১, শামীম ০.১-০-৪-০)।

ফল: আবাহনী লিমিটেড ৭ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন।