বৃষ্টি আর আলোক স্বল্পতা মিলিয়ে সাউথ্যাম্পটনে তৃতীয় দিনেও খেলা হয়নি পুরোপুরি। তবে লড়াই হয়েছে বেশ। প্রথম ইনিংসে ভারত অলআউট ২১৭ রানে। নিউ জিল্যান্ডের রান ২ উইকেটে ১০১।
৩ উইকেটে ১৪৬ রান নিয়ে শনিবার দিন শুরু করে ভারত আর যোগ করতে পারে কেবল ৭১ রান। শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কিউই নায়ক জেমিসন। মাত্র অষ্টম টেস্টেই দীর্ঘদেহী এই পেসার পেয়ে যান পঞ্চম ৫ উইকেটের স্বাদ।
কনওয়ে ব্যাট হাতে ভারতীয় বোলিংয়ের চ্যালেঞ্জ সামলে নিউ জিল্যান্ডকে দেন ভালো শুরু। শেষ বিকেলে তাকে ফিরিয়েই আবার লড়াইয়ে ফেরে ভারত। অভিষেক টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি, দ্বিতীয় টেস্টে ৮০ রানের ইনিংসের পর এবার কনওয়ে করেন ৫৪।
দিনের শুরুতে বৃষ্টিতে খেলা শুরু হয় দেরিতে। ব্যাটিংয়ে নামার পরপরই বড় ধাক্কা খায় ভারত। ভেতরে ঢোকা দুর্দান্ত ডেলিভারিতে জেমিসন এলবিডব্লিউ করে দেন বিরাট কোহলিকে। আগের দিনের ৪৪ রানের সঙ্গে আর কোনো রান যোগ করতে পারেননি ভারতীয় অধিনায়ক।
ভারত আরেকটা জোর ধাক্কা খায় দ্বিতীয় নতুন বলের একটু আগে। অজিঙ্কা রাহানের জন্য শর্ট বলের কৌশল নিয়ে সফল হন নিল ওয়্যাগনার। অনেক বল ছেড়ে দিয়ে হুট করে একটি শর্ট বলে আলতো পুল করে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন তিনি ৪৯ রানে।
এরপর রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা খানিকটা লড়াই করলেও ভারতের লেজ দ্রুতই ছেটে দেন কিউই পেসাররা। ইশান্ত শর্মা ও জাসপ্রিত বুমরাহকে পরপর দুই বলে ফিরিয়ে জেমিসন পূর্ণ করেন ৫ উইকেট।
অশ্বিনকে ২২ রানে থামিয়ে একমাত্র উইকেটের দেখা পান সাউদি। ট্রেন্ট বোল্টের বলে বিজে ওয়াটলিংয়ের দারুণ ক্যাচে জাদেজার বিদায়ে শেষ ভারতের ইনিংস। শেষ ৪ উইকেট হারায় তারা ১২ রানে।
উইকেট পেস বোলিংয়ে জন্য দারুণ সহায়ক। আকাশ মেঘলা। ভারতীয় পেসারদের সামনে কিউইদের কাজটা সহজ ছিল না। তবে ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে দলকে ভালো শুরু এনে দেন কনওয়ে ও ল্যাথাম। ভারতীয় পেসাররা, বিশেষ করে মোহাম্মদ শামি বেশ পরীক্ষা নেন তাদের। সাবধানী ব্যাটিংয়ে সেই চ্যালেঞ্জ উতরে যান দুই ওপেনার।
৭০ রানের এই উদ্বোধনী জুটি ভাঙে স্পিনে, ৩৫তম ওভারে। অশ্বিনের গতিবৈচিত্র বুঝতে না পেরে ড্রাইভ করে শর্ট কাভারে ধরা পড়েন ল্যাথাম (১০৪ বলে ৩০)।
দারুণ টেকনিকের ছাপ রেখে কনওয়ে ফিফটি স্পর্শ করেন ১৩৭ বলে। তবে ফিফটির পরপর আউট হয়ে যান তিনি প্রিয় ফ্লিক শটে। টানা ২৪ বলে রান না দিয়ে বেশ চাপ তৈরি করেছিলেন ভারতীয় বোলাররা। সেই চাপেই ধরা দেয় উইকেট। ইশান্ত শর্মাকে ফ্লিক করে স্কয়ার লেগে খেলতে গিয়ে কনওয়ে ক্যাচ দেন মিড অনে।
ওই ওভার শেষেই আলোকস্বল্পতায় দিনের খেলা শেষ হয় আধঘণ্টা আগে। চতুর্থ দিনের লড়াই শুরু করবেন কিউই ব্যাটিংয়ের মূল দুই স্তম্ভ কেন উইলিয়ামসন ও রস টেইলর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ভারত ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১৪৬/৩) ৯২.১ ওভারে ২১৭ (কোহলি ৪৪, রাহানে ৪৯, পান্ত ৪, জাদেজা ১৫, অশ্বিন ২২, ইশান্ত ৪, বুমরাহ ০, শামি ৪*; সাউদি ২২-৬-৬৪-১, বোল্ট ২১.১-৪-৪৭-২, জেমিসন ২২-১২-৩১-৫, ডি গ্র্যান্ডহোম ১২-৬-৩২-০, ওয়্যাগনার ১৫-৫-৪০-২)।
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪৯ ওভারে ১০১/২ (ল্যাথাম ৩০, কনওয়ে ৫৪, উইলিয়ামসন ১২*, টেইলর ০*; ইশান্ত ১২-৪-১৯-১, বুমরাহ ১১-৩-৩৪-০, শামি ১১-৪-১৯-০, অশ্বিন ১২-৫-২০-১, জাদেজা ৩-১-৬-০)।