বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান মঙ্গলবার বোর্ড সভা শেষে জানান ‘বাংলাদেশ টাইগার্স’ গঠনের কথা। মূলত জাতীয় দলের বাইরের ১৬ থেকে ২০ জন বা প্রয়োজনে আরও বেশি ক্রিকেটার নিয়ে গড়া হবে এই স্কোয়াড, যাদের বছরজুড়ে অনুশীলন করানো হবে এবং জাতীয় দলের জন্য তৈরি রাখা হবে। এটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কাজী ইনাম ও আরেক বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদকে।
এই দল গঠনের পেছনে জাতীয় দলের বাইরের ক্রিকেটারদের অপ্রতুল অনুশীলন সুযোগ-সুবিধার কথা বলেন বিসিবি সভাপতি। বুধবার এই ছায়া জাতীয় দল নিয়ে আরেকটি সংবাদ সম্মেলনে কাজী ইনামের কণ্ঠেও উঠে এলো একই কথা।
“অনেক সময় আমাদের ফ্যাসিলিটিজের স্বল্পতা আছে, আমাদের তা ভালো করেই জানা। কোনো ক্রিকেটার যদি জাতীয় দলের বাইরে থাকে, অনেক সময় ফ্যাসিলিটিজ ব্যবহার করতে পারছে না। ক্ল্যাসিক উদাহরণ ইমরুল কায়েস, অনেক সময় জাতীয় দলে খেলেছে, অনেক সময় বাইরে গেছে। যখন বাইরে যায়, তখন তারা এমন একটি প্রোগ্রামে যেন থাকে, জাতীয় দলের মতোই যেন ফ্যাসিলিটিজ পায়। ঢাকার বাইরেও আমাদের ফ্যাসিলিটিজ আছে, সিলেটে আছে, কক্সবাজারে আছে। সেই ফ্যাসিলিটিজ যেন ব্যবহার করা যায়।”
সম্পূরক প্রশ্ন এসে যায় এখানেই। নাজমুল হাসানের নেতৃত্বে বর্তমান এই বোর্ড দায়িত্বে আছে ৮ বছরের বেশি সময় ধরে। ভারপ্রাপ্ত মেয়াদে বছরখানেক ও এরপর টানা দুই মেয়াদে তারা দায়িত্ব পালন করছেন। এই লম্বা সময়ে অবকাঠামোর উন্নতি কতটা হয়েছে?
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ইনডোরে ও একাডেমি মাঠে গাদাগাদি করে অনুশীলন করতে হয় দলগুলিকে। ঢাকা লিগ ও বিপিএলের সময় একসঙ্গে চার দলের অনুশীলনও হয়ে থাকে। ক্রিকেট মৌসুমে জাতীয় দল, এইচপি স্কোয়াড, অনূর্ধ্ব-১৯ দল, মেয়েদর দলকে পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করতে হয় মিরপুরের জিমনেসিয়াম। ভালো মানের জিমনেসিয়াম গোটা দেশে বিসিবির এই একটিই। ঢাকার বাইরে কয়েকটি জায়গায় ইনডোর থাকলেও মান খুব ভালো নয়। অন্যান্য অনেক মৌলিক সুবিধাও নেই ঢাকার বাইরে বেশির ভাগ ভেন্যুতে।
এই বোর্ড টানা লম্বা সময় বিসিবির দায়িত্বে থাকার পরও কেন সুযোগ-সুবিধা ও অবকাঠামোর খুব বেশি উন্নতি নেই? এই প্রশ্নে আগের কথা থেকে সুর একটু বদলে গেল কাজী ইনামের।
“অবকাঠামো বিষয়ে প্রধান নির্বাহীকে (পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন যিনি) কথা বলতে দেই… অন্য বিষয়… তবে গত কয়েক বছরের মধ্যে সিলেটে, কক্সবাজারে অনেক কাজ করা হয়েছে। অবকাঠামো ও ফ্যাসিলিটিজ একটা ধারাবাহিক কাজ। কিছু উন্নতি আমাদের হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এটা চালিয়ে যেতে হবে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
ছায়া জাতীয় দল নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক তথ্য অবশ্য এ দিন জানালেন কাজী ইনাম, এই দল গঠনে বড় ভূমিকা থাকবে জাতীয় অধিনায়কদের।
“আমাদের ইচ্ছা আছে তিন সংস্করণের তিন অধিনায়কে এখানে সম্পৃক্ত করা। গতকাল ও আজকে তামিম, মুমিনুল, মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা সব জানে। এই ব্যাপারটি নিয়ে যখন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাপ হয়েছে, তারা ছিল। তারা সবাই খুব রোমাঞ্চিত ও তাদের খুব ভালো কিছু পরামর্শও আছে। তারা সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারে। যেমন, সাদা বলের ক্রিকেটে ছয়-সাত নম্বরে হিটার পাচ্ছি না আমরা। তখন আমরা এখানে বছরজুড়ে প্রোগ্রাম ও পরিকল্পনা করতে পারি বের করে আনতে।”
কাজী ইনাম জানালেন, চলতি ঢাকা লিগ শেষ হলেই বাংলাদেশ টাইগার্স দল গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে।