তামিমকে ছাপিয়ে নায়ক মুনিম শাহরিয়ার

লিটন দাসের চোটে সুযোগ মিলছে নিয়মিত। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে পারছিলেন না মুনিম শাহরিয়ার। আগের ম্যাচে বাদই পড়ে গিয়েছিলেন। এবার ফিরে সুযোগ কাজে লাগালেন দুই হাতে। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে গড়ে দিলেন ব্যবধান। তামিম ইকবালের ঝড়ো ইনিংসের পরও পারেনি প্রাইম ব্যাংক। মুনিমের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে জয়ে ফিরল আবাহনী।  

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 June 2021, 12:31 PM
Updated : 13 June 2021, 12:31 PM

ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৩০ রানে হারিয়েছে মুশফিকুর রহিমের দল। 

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩ উইকেটে ১৮৩ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে আবাহনী। প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসের ১৬ ওভার শেষে বৃষ্টি নামলে ম্যাচের দৈর্ঘ্য নেমে আসে ১৯ ওভারে। দলটি পায় ১৭৪ রানের নতুন লক্ষ্য, করতে পারে ৬ উইকেটে ১৪৩।  

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির চূড়ায় থাকা প্রাইম ব্যাংক হারাল ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়ার সুযোগ। আগের ম্যাচে মোহামেডানের বিপক্ষে হেরে যাওয়া আবাহনী পয়েন্টের দিক থেকে ধরে ফেলল তামিম-এনামুল হকদের দলকে। 

জাতীয় দলের সাবেক-বর্তমান অনেকেই আছেন এই দুই দলে। তার মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল ২৩ বছর বয়সী মুনিম। ৫০ বলে এই ওপেনার পাঁচ ছক্কা ও ৯ চারে খেলেন ৯২ রানের ইনিংস।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারে নাহিদুল ইসলামকে চার মেরে শুরু করেন মোহাম্মদ নাঈম শেখ। পরের ওভারে রুবেল হোসেনকে মারেন টানা তিন চার। ঝড়ো শুরু অবশ্য ধরে রাখতে পারেননি নাঈম।

পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪৯ রান তোলে আবাহনী। বোলিংয়ে এসেই সাফল্য পান শরিফুল ইসলাম। দারুণ এক ডেলিভারিতে নাঈমকে বোল্ড করে দেন বাঁহাতি পেসার। ৫ চারে নাঈম করেন ২৯।

অষ্টম ওভারে মনির হোসেনের বলে একটি সুযোগ আসে মুনিমকে ফিরিয়ে দেওয়ার। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান বেরিয়ে এসে খেলার চেষ্টায় বলের নাগাল পাননি। বল গ্লাভসে জমাতে গড়বড় করে দেরি করে ফেলেন কিপার এনামুল হক। স্টাম্পিংয়ের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। বারবার রিপ্লে দেখেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি ব্যাটসম্যান ফেরার আগে কিপার বেলস ফেলতে পেরেছেন কি না।

সে সময় ২০ রানে থাকা মুনিমের সঙ্গে দ্রুত জমে যায় নাজমুল হোসেন শান্তর জুটি। বাড়তে থাকে রানের গতি। অলক কাপালীকে ওড়ানোর চেষ্টায় শান্ত ক্যাচ দিলে ভাঙে জুটি। ২০ বলে ৩৩ রান করেন বাঁহাতি এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।

অলককে ছক্কার চেষ্টায় সীমানায় নাঈম হাসানকে ক্যাচ দেন মুনিম। ক্যাচ ছেড়ে উল্টো ছক্কা বানান নাঈম। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি স্পর্শ করেন মুনিম।

এরপর রানের গতি আরও বাড়ান তিনি। রুবেল হোসেনকে পরপর দুই বলে চার মারার পর শরিফুলকে দুবার ওড়ান ছক্কায়। ৯০ রানে আবার জীবন পাওয়া মুনিম ফেরেন একটু পরই। টি-টোয়েন্টিতে আগের ছয় ম্যাচে তার মোট রানের চেয়েও এবার করলেন ২০ বেশি। 

এক চারে ১৬ বলে ১৪ রান করেন মুশফিক। একটি করে ছক্কা ও চারে ৬ বলে ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন আফিফ।

বড় রান তাড়ায় শুরুতেই রনি তালুকদারকে হারায় প্রাইম ব্যাংক। অন্য প্রান্তে তামিমের ব্যাট ছিল উত্তাল। দ্রুত রান তুলছিলেন বাঁহাতি এই ওপেনার। মোসাদ্দেক হোসেনের বলে শর্ট কাভারে ৪৩ রানে তার সহজ ক্যাচ ছাড়েন আমিনুল ইসলাম।

তবে এর জন্য খুব একটা মাশুল দিতে হয়নি তাদের। ৩৭ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে তামিম ফিরেন ৫৫ রান করে। আরাফাত সানির বলে এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ জমান আফিফ। ৪১ বলে খেলা তামিমের ইনিংসে আট চারের পাশে ছক্কা একটি।

গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পেতে যাচ্ছিলেন ছন্দে থাকা মোহাম্মদ মিঠুন। ফিরতি ক্যাচ মুঠোয় নিতে পারেননি আমিনুল। মিঠুন শেষ পর্যন্ত করেন ২৭ বলে ৩৪। ভালো করতে পারেননি পরের ব্যাটসম্যানরা। সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আবাহনী।

৮ ম্যাচে এটি আবাহনীর ষষ্ঠ জয়, প্রাইম ব্যাংকের দ্বিতীয় হার। রান রেটে এগিয়ে চূড়ায় প্রাইম ব্যাংক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আবাহনী: ২০ ওভারে ১৮৩/৩ (মুনিম ৯২*, নাঈম ২৯, শান্ত ৩০, মুশফিক ১৪, আফিফ ১৩*; নাহিদুল ৪-০-২৮-০, রুবেল ৪-০-৪২-০, নাঈম ২-০-১৯-০, শরিফুল ৪-০-৩৮-২, মনির ৩-০-২০-০, অলক ৩-০-৩২-১)

প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: ১৯ ওভারে ১৪৩/৬ (তামিম ৫৫, রনি ৪, এনামুল ১১, মিঠুন ৩৪, অমিত ৪, নাহিদুল ১৬, অলক ১১, মনির ২*; সাইফ ৪-০-২১-১, সানি ৪-০-৩২-১, তানজিম ৪-০-৩৫-২, মোসাদ্দেক ৩-০-১৯-০, স্বাধীন ১-০-১৫-০, আমিনুল ৩-০-২০-২)

ফল: ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ৩০ রানে জয়ী আবাহনী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মুনিম শাহরিয়ার