ডি ককের ছক্কার রেকর্ড, চাপে উইন্ডিজ

নেতৃত্ব ছাড়ার পর নির্ভার কুইন্টন ডি কক খেললেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের নিয়ে বোলিং সহায়ক উইকেটে এনে দিলেন তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহ। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসে দ্বিতীয় ইনিংসেও ধুঁকতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে এখন ইনিংস ব্যবধানে হার এড়ানোর চ্যালেঞ্জ।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2021, 10:24 PM
Updated : 11 June 2021, 10:26 PM

প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৪ উইকেটে ৮২। দক্ষিণ আফ্রিকাকে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে এখনও ১৪৩ রান চাই তাদের।

৬ রানে জীবন পাওয়া রোস্টন চেইস খেলছেন ২১ রানে। তার সঙ্গী জার্মেইন ব্ল্যাকউডের রান ১০। তৃতীয় দিনে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন পরীক্ষা।

এর আগে ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ১৪১ রানের ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে টানেন ডি কক। এই কিপার-ব্যাটসম্যানের এটি ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি, ২০১৯ সালের অক্টোবরের পর প্রথম।

এই রান করার পথে টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড স্পর্শ করেন ডি কক। ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭ ছক্কায় এতদিন এই পাতায় চূড়ায় ছিলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। 

ডি ককের দেখানো দৃঢ়তা অনুপস্থিত স্বাগতিক ব্যাটসম্যানদের মাঝে। ২২৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাই ভুগছে এবারও। প্রথম ইনিংসে ৯৭ রানে গুটিয়ে যাওয়া দলটি ৫১ রানে হারায় চার উইকেট।

কাগিসো রাবাদার একটু নিচু হওয়া বলে এলবিডব্লিউ হন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। একই বোলারকে লেগে ফ্লিক করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন আরেক ওপেনার কাইরন পাওয়েল।

সাবধানে খেলা শেই হোপ আনরিক নরকিয়ার বলে তৃতীয় স্লিপে ধরা পড়েন ভিয়ান মুল্ডারের হাতে। ক্রিজে গিয়েই পরের তিন বলে তিনটি বাউন্ডারি মারা কাইল মেয়ার্স টিকেননি বেশিক্ষণ। নরকিয়ার বলেই ধরা পড়েন তৃতীয় স্লিপে।

দিনের বাকি সময়টা কোনোমতে কাটিয়ে দেন চেইস ও ব্ল্যাকউড। লুঙ্গি এনগিডের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান চেইস। সেন্ট লুসিয়া টেস্টে লড়াই করতে তাদের দিকেই তাকিয়ে ক্যারিবিয়ানরা।

দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে রাবাদা ও নরকিয়া নেন দুটি করে উইকেট।

ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে শুক্রবার ৪ উইকেটে ১২৮ রান নিয়ে খেলা শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা।

আগের দিনের চেয়ে এদিন ব্যাটিংয়ের কন্ডিশনে কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। তবে হালকা সবুজ ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে অসমান বাউন্স ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়েই ছিল। শুরুতে কিছুটা সিম মুভমেন্টও মিলে, কিন্তু এলোমেলো বোলিং করে সুযোগটা সেভাবে নিতে পারছিলেন না ক্যারিবিয়ানরা।

এর মধ্যেও ভালো করছিলেন জেসন হোল্ডার। তার হাত ধরে প্রথম সাফল্য পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গালিতে ক্যাচ দিয়ে থামেন রাসি ফন ডার ডাসেন।

লাঞ্চ পর্যন্ত টিকে যাওয়া মুল্ডার বিরতির পর টিকেননি বেশিক্ষণ। হোল্ডারকে ব্যাকফুট পাঞ্চের চেষ্টায় ফিরেন কট বিহাইন্ড হয়ে। রাকিম কর্নওয়ালের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন কেশভ মহারাজ।

৮০ ওভার পূরণ হতেই দ্বিতীয় নতুন বল নেয় ক্যারিবিয়ানরা। রোচকে বাউন্ডারি মেরে ডি কক জানিয়ে দেন, চ্যালেঞ্জ সামলাতে তিনি প্রস্তুত। তবে পরে রোচের বলে দ্বিতীয় স্লিপে হোল্ডারের হাতে ধরা পড়েন রাবাদা।

তখনও ডি ককের সেঞ্চুরি দূরের পথ। সে সময় ৬৩ রানে ছিলেন তিনি। আনরিক নরকিয়াকে আড়াল দিয়ে খেলতে থাকেন, রান বাড়ান বাউন্ডারিতে।    

রাবাদা আউট হওয়ার পর জেডন সিলসের ওভারে মারেন দুই ছক্কা ও এক চার। পরে মেয়ার্সকে ছক্কায় উড়িয়ে ১৪৮ বলে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। এরপরও খেলে যান একই রকম আক্রমণাত্মক মেজাজে।

রাকিম কর্নওয়ালকে দুই ছক্কার পর ডি কক হোল্ডারকে মারেন চার ও ছক্কা। সেই ওভারে বিদায় নেন নরকিয়া। ভাঙে নবম উইকেটে ৭৯ রানের জুটি। এরপর বেশিদূর এগোয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।      

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৯৭

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১২৮/৪) ৯৬.৫ ওভারে ৩২২ (ফন ডার ডাসেন ৪৬, ডি কক ১৪১* মুল্ডার ২৫, মহারাজ ০, রাবাদা ৭, নরকিয়া ৭, এনগিডি ০; রোচ ২০-৩-৬৪-২, হোল্ডার ২০.৫-৪-৭৫-৪, সিলস ২১-৬-৭৫-৩, মেয়ার্স ৮-২-২৮-০, কর্নওয়াল ১৮-১-৬১-১, চেইস ৯-৫-১৪-০)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ৩০ ওভারে ৮২/৪ (ব্র্যাথওয়েট ৭, পাওয়েল ১৪, হোপ, চেইস ২১*, মেয়ার্স ১২, ব্ল্যাকউড ১০*; রাবাদা ১০-৪-১৮-২, এনগিডি ৭-২-১৯-০, নরকিয়া ৮-৩-৩৪-২, মুল্ডার ৪-১-৬-০, মহারাজ ১-১-০-০)