ইমরান-শামীমের বিধ্বংসী ইনিংস ছাপিয়ে দুর্দান্ত জিয়া

ইমরান উজ্জামানের ঝড়ো ফিফটি, শামীম হোসেনের ব্যাটিং তাণ্ডব, তানবীর হায়দারের কার্যকর ইনিংস আর জিয়াউর রহমানের দুর্দান্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্স-ম্যাচে ঘটনার শেষ নেই। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের রোমাঞ্চকর ম্যাচ গড়াল শেষ বলে। শেষ ওভারে ১২ আর শেষ বলে সিঙ্গেল নিয়ে দারুণ জয় পেল শেখ জামাল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2021, 08:27 AM
Updated : 11 June 2021, 08:27 AM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির শিরোপা অভিযানে আবার হোঁচট খেল প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব জিতে নিল ৩ উইকেটে।

বিকেএসপিতে শুক্রবার শেষ ওভারে ১২ রানের সমীকরণে প্রথম বলটি ‘নো’ করে বসেন অভিজ্ঞ ফরহাদ রেজা। প্রায় বুক উচ্চতার সেই বলে বাউন্ডারি মেরে দেন সোহরাওয়ার্দী শুভ। ফ্রি হিটে আসে দুই রান। পরের পাঁচ বলে পাঁচটি সিঙ্গেলে জিতে যায় শেখ জামাল।

শেষ সময়ে উইকেটে থেকে ৩৪ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় নিয়ে ফেরেন তানবীর। জিয়ার সঙ্গে তার জুটিই শেখ জামালকে এগিয়ে নেয় জয়ের কাছে। ৫ ছক্কায় ৩৩ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন জিয়া।

তার আগে বল হাতেও ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রানে ২ উইকেট নেন জিয়া। ম্যাচের সেরা অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডারই।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা প্রাইম দোলেশ্বর ২০ ওভারে ১৬৬ করতে পারে ইমরান ও শামীমের ব্যাটে। আগেও দুই ম্যাচে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ম্যাচ সেরা হলেও ফিফটি ছিল না ইমরানের। সেই আক্ষেপ মিটিয়ে এবার তিনি খেলেছেন ৪৬ বলে ৬৫ রানের ইনিংস। শেষ দিকে শামীম হোসেন করেন ৫ ছক্কায় ২০ বলে ৪৯!

প্রথম ওভারে সোহরাওয়ার্দীর বলে ইমরানের টানা তিন বাউন্ডারিতে শুরু হয় ম্যাচ। কিন্তু আরেক ওপেনার ফজলে মাহমুদ রাব্বি ফেরেন শূন্য রানেই।

২০ বলে ৪৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন শামীম হোসেন।

তিন ও চারে নেমে সাইফ হাসান ও মার্শাল আইয়ুব ভুগতে থাকেন বলপ্রতি রান করতেও। রান বাড়ানোর কাজটি তখন করেন কেবল ইমরানই। টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করেন তিনি ৩২ বলেই।

চারটি করে চার ও ছক্কায় তার ৬৬ রানের ইনিংস শেষ হয় জিয়ার বলে পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে। তার বিদায়ের পর দায়িত্ব নিয়ে নেন শামীম। তরুণ এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের খুনে ব্যাটিংয়ে শেষ ৫ ওভারে দোলেশ্বর তোলে ৬৪ রান।

শেষ ওভারে ইবাদত হোসেনের বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৮ বলে ৪৯ হয়ে গেলেও শেষ দুই বলে রান না পেয়ে ফিফটি হয়নি শামীমের।

শেখ জামালের রান তাড়ার শুরুটা ভালো হয়নি। ওপেনিংয়ে সৈকত আলিকে ১৫ রানে ফেরান এনামুল হক জুনিয়র। সঙ্গে তারা এ দিন ইনিংস শুরু করে নাসির হোসেনকে দিয়ে। এই পরীক্ষা শেষ হয় ১৪ রানে।

একাদশে এ দিন জায়গা হয়নি বাজে ফর্মে থাকা মোহাস্মদ আশরাফুলের। তার জায়গায় কোভিড থেকে সুস্থ হয়ে লিগে প্রথম খেলতে নেমে ইমরুল কায়েস করেন শূন্য।

এরপর নুরুল হাসান সোহান ও ইলিয়াস সানিও যখন বিদায় নেন, ১০ ওভার শেষে শেখ জামালের রান ৫ উইকেটে ৭১।

সেখান থেকে তানবীর ও জিয়ার জুটি ক্রমেই বদলে দিতে থাকে চিত্র। দুজনের ৫১ বলের জুটিতে রান আসে ৮৪।

দোলেশ্বরের কামরুল ইসলাম রাব্বি অবশ্য চেষ্টা করে যান শেষ পর্যন্ত। দারুণ বোলিংয়ে চার উইকেট শিকারের পাশাপাশি আটকে রাখেন তিনি রানও। শেষের আগের ওভারে তিনিই ফেরান জিয়াকে। কিন্তু শেষ ওভারে ফরহাদ রেজার ‘নো’ বলের বাউন্ডারিতেই অনেকটা হয়ে যায় ম্যাচের ফয়সালা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম দোলেশ্বর: ২০ ওভারে ১৬৬/৫ (ইমরান ৬৫, ফজলে মাহমুদ ০, সাইফ ২২, মার্শাল ১২, শামীম ৪৯*, ফরহাদ রেজা ৮, শরিফউল্লাহ ৮*; সোহরাওয়ার্দী ৩-০-৩০-০, ইবাদত ৪-০-৩৪-০, সাকিল ৪-০-৪১-০, জিয়াউর ৪-০-২৬-২, ইলিয়াস সানি ৪-০-২৫-২, তানবীর ১-০-১০-০)।

শেখ জামাল: ২০ ওভারে ১৬৭/৭ (সৈকত ১৫, নাসির ১৪, ইমরুল ০, সোহান ১৭, ইলিয়াস সানি ৮, তানবীর ৪৫*, জিয়াউর ৫৩, এনামুল ০, সোহরাওয়ার্দী ৯*; শফিকুল ৪-০-৩১-০, এনামুল জুনি. ৪-০-৩২-২, কামরুল রাব্বি ৪-০-২৪-৪, তৌকির ৪-০-৩৯-০, ফরহাদ রেজা ৪-০-৪১-১)।

ফল: শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব ৩ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: জিয়াউর রহমান।