ব্যাটিংয়ে দারুণ গতিতে ছুটতে থাকা মোহামেডানকে শেষ দিকে দমিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। নিজের শেষ দুই ওভারেই বাঁহাতি পেসার নেন ৫ উইকেট। কিন্তু রান তাড়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে প্রাইম ব্যাংকের ব্যাটিং। মোহামেডান ম্যাচ জিতে নেয় ২৭ রানে।
পারভেজ হোসেন ইমনের ফিফটিতে মোহামেডান ২০ ওভারে তোলে ১৫০ রান। প্রাইম ব্যাংক যেতে পারে ১২৩ পর্যন্ত।
ম্যাচের ফলে যা ফুটে উঠছে, বাস্তবে দুই দলের ব্যবধান ছিল আরও বেশি। ত্রয়োদশ ওভারে ৭৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে প্রাইম ব্যাংক ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে আগেই। শেষের ব্যাটসম্যানরা কেবল কমান ব্যবধান।
মোহামেডানের এটি তিন ম্যাচে তৃতীয় জয়, প্রাইম ব্যাংকের প্রথম হার।
মোহামেডানের দাপটের শুরু ম্যাচের শুরু থেকেই। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দলকে ৪ ওভারে ৪০ রান এনে দেন মাহমুদুল হাসান ও পারভেজ। ১৮ বলে ২৩ রান করে মাহমুদুলের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি।
দ্বিতীয় উইকেটে শামসুর রহমানের সঙ্গে জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন পারভেজ। একটা সময় যদিও রানের গতি কমে গিয়েছিল বেশ। তবে মুস্তাফিজকে ছক্কা মারার পর নাঈম হাসানের এক ওভারে দুই ছক্কা ও এক চারে ঝড় তোলেন পারভেজ।
৩৭ বলে পারভেজ স্পর্শ করেন ফিফটি। তবে ৩ চার ও ৪ ছক্কার ইনিংস শেষ হয় ফিফটি ছুঁয়েই।
শামসুর অবশ্য লম্বা সময় উইকেটে থেকেও টাইমিং করতে পারছিলেন না ঠিকঠাক। সাকিব নেমে চেষ্টা করেন রানের গতি বাড়াতে।
ওই ওভারে শুভাগত হোম ও শামসুরকেও (৩৪ বলে ৩৩) ফেরান মুস্তাফিজ। পরের ওভারে শরিফুল ইসলামের শিকার ইরফান শুক্কুর। শেষ ওভারে মুস্তাফিজ বিদায় করেন আবু জায়েদ ও তাসকিন আহমেদকে।
নিজের প্রথম দুই ওভারে যিনি ছিলেন ১৩ রানে উইকেটশূন্য, ৪ ওভার শেষে সেই মুস্তাফিজের প্রাপ্তি ২২ রানে ৫ উইকেট। স্পর্শ করেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের সেরা বোলিং পারফরম্যান্স।
শেষ তিন ওভারে মোহামেডান করতে পারে কেবল ১৬ রান, উইকেট হারায় ৬টি।
তবে রান ততক্ষণে যা হয়েছে, সেটিই প্রাইম ব্যাংকের জন্য হয়ে ওঠে দূরের পথ। দারুণ বোলিংয়ে দলকে জয়ের পথ তৈরি করে দেন মোহামেডানের বোলাররা।
অধিনায়ক এনামুল হক বিদায় নেন দ্বিতীয় ওভারেই। আগের দুই ম্যাচে ৫ ও ৫ রানের পর এবার তার সংগ্রহ ৩ রান।
দ্বিতীয় উইকেটে তামিম ইকবাল ও রনি তালুকদার উইকেটে থাকার সময় কেবল একটু উঁকি দেয় তাদের সম্ভাবনা। তবে তামিম থমকে যান ২০ বলে ২০ করে। সাকিবকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলার চেষ্টায় রনি বোল্ড হন ১৯ বলে ১৯ করে। প্রাইম ব্যাংক এরপর আর পথের দিশাই পায়নি।
মিডল অর্ডারে ব্যর্থ অলক কাপালী, নাহিদুল ইসলাম, রকিবুল হাসানরা। মোহাম্মদ মিঠুন দুই ছক্কায় ২৫ করে এলবিডব্লিউ আবু জায়েদের দারুণ ইনসুইঙ্গারে।
শেষ দিকে নাঈম হাসানের ১৯ ও মনির হোসেনের ১৭ রানে কিছুটা কমে ব্যবধান। টানা দুটি ইয়র্কারের গোলায় মনির ও মুস্তাফিজকে বোল্ড করে ম্যাচ শেষ করেন তাসকিন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মোহামেডান: ২০ ওভারে ১৫০/৮ (মাহমুদুল ২৩, পারভেজ ৫০, শামসুর ৩৩, সাকিব ২০, শুভাগত ৪, ইরফান ০, নাদিফ ৫*, আবু হায়দার ১, তাসকিন ০, ইয়াসিন ২*; নাহিদুল ৪-০-১৬-১, শরিফুল ৪-০-৪৪-১, মুস্তাফিজ ৪-০-২২-৫, মনির ২-০-১৬-০, নাঈম ৪-০-৩৩-০, অলক ২-০-১১-১)।
প্রাইম ব্যাংক: ১৯.৩ ওভারে ১২৩ (তামিম ২০, এনামুল ৫, রনি ১৯, মিঠুন ২৫, অলক ০, নাহিদুল ৫, রকিবুল ৬, নাঈম ১৯*, শরিফুল ০, মনির ১৭, মুস্তাফিজ ০; ইয়াসিন ১-০-১০-০, তাসকিন ৩.৩.-১-১৫-৩, আবু জায়েদ ৪-১-৩৩-২, সাকিব ৪-০-১৬-২, শুভাগত ৩-১-১৪-১, আবু হায়দার ৪-০-২৯-১)।
ফল: মোহামেযান স্পোর্টিং ক্লাব ২৭ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: পারভেজ হোসেন ইমন।