শামীমের ১৮ বলে ২৫ রানের ইনিংস দোলেশ্বরের ইনিংসে শেষের দিকে এনে দেয় গতি। পরে বোলিংয়ে তিনি নেন টপ অর্ডারের দুই উইকেট। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে ৩৬ রানে হারায় প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব।
মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শুক্রবার প্রাইম দোলেশ্বর ২০ ওভারে করে ৬ উইকেটে ১৪৪ রান। গাজী গ্রুপ ধুঁকতে ধুঁকতে যেতে পারে ১০৮ পর্যন্ত।
ম্যাচের শুরুটা গাজী গ্রুপের খারাপ ছিল না। টস জিতে বোলিংয়ে নামা দলকে পাওয়ার প্লের মধ্যে দুই উইকেট এনে দেন নাসুম আহমেদ। এই বাঁহাতি স্পিনারের শিকার প্রাইম দোলেশ্বরের দুই ওপেনার ইমরান উজ্জামান ও তৌফিক খান। দুই ব্যাটসম্যান দুটি করে বাউন্ডারি মেরে থেমে যান দুই অঙ্ক ছুঁয়ে।
তৃতীয় উইকেটে সাইফ হাসান ও ফজলে মাহমুদ রাব্বি গড়েন ৫৫ বলে ৬৫ রানের জুটি। এত বল লেগে যাওয়ার কারণ সাইফের ব্যাটিং। ৩৭ রান করতে তিনি খেলেন ৩৭ বল।
তুলনায় ফজলে রাব্বির ব্যাট ছিল বেশ সচল। তার ৩৯ রান আসে ৩১ বলে, ৩ ছক্কার সঙ্গে ইনিংসে চার ৩টি।
এই দুজনকে নিজের পরপর দুই ওভারে ফেরান মাহমুদউল্লাহ। বাকি সময়টায় রান যা আসে, তা কেবল শামীম হোসেনের ব্যাট থেকে।
শেষ ৫ ওভারে দোলেশ্বর করতে পারে কেবল ৩৩ রান। এর মধ্যে শামীম করেন ১৮ বলে ৩ চারে ২৫ রান।
চ্যালেঞ্জিং রান তাড়ায় গাজী গ্রুপের প্রয়োজন ছিল ভালো শুরু। ২ ওভারে ১৯ রান তুলে ভালো কিছুর ইঙ্গিতও দেন শাহাদাত হোসেন ও সৌম্য সরকার। কিন্তু এরপরই তাদের চেপে ধরেন শরিফউল্লাহ ও শামীম।
শাহাদাতকে ফিরিয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু দেন শামীম। পরের ওভারে শরিফউল্লাহ এনে দেন জোড়া উইকেট। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে সৌম্য লং অফে ধরা পড়েন ক্যাচিং অনুশীলন করিয়ে। মাহমুদউল্লাহ উইকেট ছুঁড়ে আসেন ভীষণরকম বাজে শটে। দ্বিতীয় বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন গাজী গ্রুপ অধিনায়ক।
সেই ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগেই আরেকটি উইকেট উপহার। এবার শামীমকে ডাউন দা উইকেট খেলতে গিয়ে বোল্ড মুমিনুল হক।
এরপর দ্রুত উইকেট ধরা দিতে থাকে আরও। জাকির হাসান রান আউট সরাসরি থ্রোয়ে। আকবর আলি ২ রানে ফেরেন শর্ট ফাইন লেগে শরিফউল্লাহর অসাধারণ ক্যাচে। তৌফিকের দারুণ ক্যাচে বিদায় নেন মেহেদি হাসান। বোলার দুবারই এনামুল হক।
এরপর নাসুম আহমেদ যখন বিদায় নেন নিজের বলে রেজাউর রহমানের দুর্দান্ত রিফ্লেক্স ক্যাচে, গাজী গ্রুপ তখন ধুঁকছে ৬৬ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে।
এরপর আরিফুল হকের লড়াইয়ে কিছুটা কমে ব্যবধান। অনেকটা সময় উইকেটে কাটিয়ে শেষ দিকে কামরুল ইসলাম রাব্বির এক ওভারে ৩ ছক্কা ও ১ চারে দলের রান একশ পার করান তিনি। তবে ৩৪ বলে ৩৭ করে আউট হয়ে যান এরপরই। ওই ওভারেই শেষ হয় ম্যাচ।
তিন ম্যাচে দোলেশ্বরের এটি দ্বিতীয় জয়, পরিত্যক্ত হয়েছে একটি। আপাতত তারা পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। গাজী গ্রুপ হারল তিন ম্যাচের দুটিতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
প্রাইম দোলেশ্বর: ২০ ওভারে ১৪৪/৬ (ইমরান ১০, তৌফিক ১৫, সাইফ ৩৭, ফজলে মাহমুদ ৩৯, শামীম ২৫, ফরহাদ রেজা ৪, শরিফউল্লাহ ১*, মার্শাল ০*; মেহেদি ৪-০-২৪-০, নাহিদ ২-০-২৭-০, নাসুম ২-০-১১-২, মুকিদুল ৪-০-২৩-২, আরিফুল ৩-০-১৭-০, মাহমুদউল্লাহ ৪-০-২৯-২, সৌম্য ১-০-১২-০)।
গাজী গ্রুপ: ১৮.৫ ওভারে ১০৮ (শাহাদাত ১৩, সৌম্য ৯, মুমিনুল ৭, মাহমুদউল্লাহ ০, জাকির ১৪, আরিফুল ৩৭, আকবর ২, মেহেদি ৩, নাসুম ২, মুকিদুল ১০*, নাহিদ ৬; ফরহাদ রেজা ১.৫-০-১৮-১, শরিফউল্লাহ ৪-০-২১-২, শামীম ৪-০-১৭-২, এনামুল জুনিয়র ৩-০-১০-২, রেজাউর ৪-০-১১-১, কামরুল রাব্বি ২-০-২৮-০)।
ফল: প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ৩৬ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: শামীম হোসেন।