আলাউদ্দিন বাবুর হ্যাটট্রিকে গড়ে দেওয়া মঞ্চে মিজানুর রহমান ছড়ালেন দারুণ সব স্ট্রোকের ছটা। ব্যাটে-বলে অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার সেরা পারফরম্যান্সে লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে উড়িয়ে দিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন।
Published : 03 Jun 2021, 12:53 PM
কাগজে-কলমে শক্তি-সামর্থ্যে এগিয়ে ছিল রূপগঞ্জ। কিন্তু মাঠের লড়াইয়ে তাদের পাত্তা না দিয়ে ব্রাদার্সের জয় ৮ উইকেটে।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে বৃহস্পতিবার রূপগঞ্জকে ১১১ রানেই গুটিয়ে দেয় ব্রাদার্স। শুরুর উইকেটের পর শেষ তিন উইকেট টানা তিন বলে নেন আলাউদ্দিন।
ব্রাদার্স রান তাড়ায় জিতে যায় ২৭ বল বাকি রেখে। অধিনায়ক মিজানুর খেলেন ৫২ বলে ৭৪ রানের ইনিংস।
সকাল ৯টায় শুরু ম্যাটে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই বিপাকে পড়ে রূপগঞ্জ। প্রথম ওভারেই উইকেট নেন আলাউদ্দিন। লেংথ থেকে আচমকা লাফ দিয়ে ভেতরে ঢোকা বল আজমির আহমেদের গ্লাভসে ছোবল দিয়ে যায় স্লিপ ফিল্ডারের হাতে।
আরেক ওপেনার সাদমান ইসলাম বোল্ড হন মিডিয়াম পেসার সুজন হাওলাদারের স্টাম্প সোজা বল দৃষ্টিকটুভাবে কাট করার চেষ্টায়।
বাঁহাতি স্পিনার সাকলাইন সজিবকে দারুণ এক সুইপে চার মারার পরই বাইরের বল স্টাম্পে টেনে আনেন আল আমিন। রূপগঞ্জের রান তখন ৩ উইকেটে ৩৪।
উইকেট যে ভয়ঙ্কর কিছু নয়, সেটি প্রমাণ করে দেন নাঈম ইসলাম। রূপগঞ্জ অধিনায়ক উইকেটে যাওয়ার পরপরই টানা দুই বলে চার-ছক্কা মারেন আলাউদ্দিনকে। সানজামুল ইসলামের সঙ্গে জুটিও গড়ে তোলেন তিনি। তাতে ভিতটা খারাপ পায়নি রূপগঞ্জ। রান ছিল তাদের এক পর্যায়ে ৩ উইকেটে ৬৭।
বড় ভরসা সাব্বির রহমান আশার ঝলক দেখান কিছুটা। কিন্তু থাকতে পারেননি শেষ পর্যন্ত। সাকলাইনকে স্লগ করে ছক্কার পরের বলে একই প্রচেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়েন ১৮ বলে ২৩ রান করে।
ইনিংসের শেষ তিন উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করেন আলাউদ্দিন। সেখানে তার প্রথম শিকার মুক্তার আলি। অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল উড়িয়ে পুল করেন তিনি। ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে বল ওঠে আকাশে। মিড উইকেট সীমানা থেকে অনেকটা ভেতরে দৌড়ে দারুণ ডাইভিং ক্যাচ নেন নাঈম জুনিয়র। পরের দুই শিকার সোহাগ গাজী ও নাবিল সামাদ। এই দুজনও ক্যাচ দেন শর্ট বলে।
টি-টোয়েন্টিতে হ্যাটট্রিকের স্বাদ পাওয়া বাংলাদেশের পঞ্চম বোলার তিনি। এই সংস্করণে ৪ উইকেটের স্বাদ পেলেন প্রথমবার।
রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতেই কাজ প্রায় অর্ধেক সেরে ফেলেন মিজানুর ও জুনায়েদ সিদ্দিক। ৮ ওভারে ৫৩ রানের জুটি গড়েন দুজন।
সানজামুলের বলে স্লগ সুইপে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে জুনায়েদ আউট হন ১৯ বলে ২১ রান করে। তবে মিজানুরের দৃষ্টিনন্দন সব শটে জিততে কোনো বেগ পেতে হয়নি ব্রাদার্সকে। ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৪ করে তিনি যখন আউট হন, দল তখন জয়ের দুয়ারে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
রূপগঞ্জ: ১৯.১ ওভারে ১১১ (আজমির ১, সাদমান ৭, নাঈম ৩৮, আল আমিন ৪, সানজামুল ১৩, সাব্বির ২৩, জাকের ১২, সোহাগ ২, মুক্তার ৬, শহীদ ০*, নাবিল ০; আলাউদ্দিন ৩.১-০-২১-৪, মানিক ৪-১-১১-১, সুজন ৩-০-১৪-২, সাকলাইন ৩-০-২২-২, রাহাতুল ২-০-১৯-০, নাঈম জুনিয়র ৪-০-২৩-১)।
ব্রাদার্স: ১৫.৩ ওভারে ১১২/২ (মিজানুর ৭৪, জুনায়েদ ২১, জাহিদুজ্জামান ১১*, মাইশুকুর ৬*; নাবিল ৪-১-১৮-০, শহীদ ২-০-২৪-১, সানজামুল ৪-০-২৬-১, সোহাগ ৪-০-৩১-০, মুক্তার ১.৩-০-১৩-০)।
ফল: ব্রাদার্স ইউনিয়ন ৮ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: আলাউদ্দিন বাবু।