ইমরানের বিধ্বংসী শুরু, রিশাদের ঝড়ো সমাপ্তি

শুরুতে ইমরান উজ্জামানের ব্যাটিং ঝড়, শেষ দিকে রিশাদ হোসেনের ক্যামিও। টি-টোয়েন্টির আমেজ বলতে মিলল এটুকুই। ম্যাচের বাকিটুকুতে দেখা গেল ঝিমুনির ক্রিকেট। ওই দুজনের ব্যাটিংয়ের প্রভাবও দুইরকম। ইমরানে ব্যাটে প্রাইম দোলেশ্বর পেল জয়ের ভিত। রিশাদের ব্যাটে খেলাঘর স্রেফ কমাতে পারল পরাজয়ের ব্যবধান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 June 2021, 07:35 AM
Updated : 2 June 2021, 07:35 AM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতির বিপক্ষে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের জয় ১৯ রানে।

ব্যবধান যতটা কাছকাছাছি মনে হচ্ছে, ম্যাচ মোটেও জমেনি ততটা। দোলেশ্বরের জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বেশ আগেই। রিশাদের সৌজন্যেই কেবল খেলাঘরের হারটি হয়েছে ভদ্রস্থ।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার ২০ ওভারে দোলেশ্বরের ১৪৯ রান তাড়ায় খেলাঘর যেতে পারে ১৩০ পর্যন্ত।

দোলেশ্বরের ওপেনার ইমরান ৫ ওভারের মধ্যে আউট হয়ে গেলেও ৪ ছক্কা ও ৩ চারে করেন ১৭ বলে ৪০!

বৃষ্টিতে আগের পুরো দিন ঢেকে রাখা উইকেটে টস জিতে বোলিং নেয় খেলাঘর। কিন্তু আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে উইকেট থেকে তাদের কোনো সুবিধা পেতে দেননি ইমরান। ম্যাচের প্রথম বল থেকেই শুরু হয় তার আক্রমণ। সৈয়দ খালেদ আহমেদের অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বল দারুণ শটে এক্সট্রা কাভার দিয়ে ছক্কায় ওড়ান ইমরান। তৃতীয় বলে বাউন্ডারি মারেন মিড অফের ওপর দিয়ে।

পরের ওভারে স্পিন আক্রমণে আনে খেলাঘর। বাঁহাতি স্পিনার টিপু সুলতানের প্রথম দুই বলেই ছক্কা মারেন ইমরান। দুটিই ঠিক একইরকম স্লগ সুইপে মিড উইকেট দিয়ে। পরের ওভারে তিনি পুল করে ছক্কা মারেন পেসার ইফরান হোসেনকে।

দল না জিতলেও ভালো বোলিং করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ছবি: বিসিবি

পঞ্চম ওভারে আবার খালেদকে পেয়ে বসেন ইমরান। টানা দুই বল পাঠান বাউন্ডারিতে। ওই ওভারেই শেষ হয় ইমরানের অভিযান। লেংথ বল পুল করতে গিয়ে বল আকাশে তুলে দেন তিনি, সহজ ক্যাচ নেন কিপার।

ইমরান যখন ছুটছিলেন, তার ওপেনিং সঙ্গী ফজলে মাহমুদ রাব্বি ছিলেন যেন ঘুমিয়ে। ১০ বলে ৪০ করে ইমরানের বিদায়ের সময় ফজলে মাহমুদের রান ১২ বলে ৪!

পরেও পুষিয়ে দিতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। লেগ স্পিনার রিশাদকে একটি ছক্কা মারলেও মেহেদী হাসান মিরাজের বলে আউট হয়ে যান ২২ বলে ১৪ করে।

খেলাঘরের রানের গতি ক্রমে যায় থমকে। তিনে নেমে সাইফ হাসান ২৮ রান করতে বল খেলেন ৩৩। অভিজ্ঞ মার্শাল আইয়ুব ২০ বলে করেন ২১।

তরুণ শামীম হোসেন পাটোয়ারি থেমে যান ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েও (১২ বলে ১৬)। শেষ দিকে শরিফউল্লাহ ৯ বলে ১৫ করে দলকে নিয়ে যান দেড়শর কাছে।

শুরুর ধাক্কা সামলে খেলাঘরের সফলতম বোলার খালেদ, ৪ ওভারে ৩০ রানে নেন ২ উইকেট। মিরাজ ৩ ওভারে দেন কেবল ৯ রান, উইকেট একটি।

খেলাঘরের রান তাড়া মুখ থুবড়ে পড়ে শুরু থেকেই। দুই ওপেনার ইমতিয়াজ হোসেন ও সাদিকুর রহমান বিদায় নেন প্রথম দুই ওভারেই। তিনে নামা অধিনায়ক জহুরুল ইসলামকে সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট করে দেন শামীম।

মিডল অর্ডারে আরও গতিহীন হয়ে পড়ে ইনিংস। অভিজ্ঞ ফরহাদ হোসেন দীর্ঘসময় একপ্রান্ত আগলে রেখে আউট হন ৩৫ বলে ৩৩ করে। সালমান হোসেন ২৭ বল খেলেও পাননি বাউন্ডারি, ফেরেন ১৪ রানে। একটি ছক্কা মেরে মিরাজ আউট হয়ে যান ১০ বলে ১২ করে।

একসময় ১০০ রানকেই তাদের জন্য মনে হচ্ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। নয় নেমে রিশাদ হোসেন ৩ ছক্কায় ১৯ বলে ৩৭ রান করে দলের পরাজয়কে রাখেন মোটামুটি পর্যায়ে।

দ্বিতীয় ম্যাচে দোলেশ্বরের এটি প্রথম জয়। প্রথম ম্যাচে বৃষ্টির কারণে ব্রাদার্সের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছিল তাদের। খেলাঘর হারল দুই ম্যাচেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম দোলেশ্বর: ২০ ওভারে ১৪৯/৬ (ইমরান ৪০, ফজলে মাহমুদ ১৪, সাইফ ২৮, মার্শাল ২১, শামীম ১৬, ফরহাদ রেজা ৯, শরিফউল্লাহ ১৫*, তাইবুর ২*; খালেদ ৪-০-৩০-২, টিপু ৩-০-২৮-০, ইফরান ৪-০-৩৪-১, মাসুম ৪-০-৩২-২, মিরাজ ৩-০-৯-১, রিশাদ ২-০-১৬-০)।

খেলাঘর: ২০ ওভারে ১৩০ (ইমতিয়াজ ৩, সাদিকুর ৬, জহুরুল ১, ফরহাদ হোসেন ৩৩, সালমান ১৪, মিরাজ ১২, মাসুম ২, টিপু ২, রিশাদ ৩৭, ইফরান ৯, খালেদ ০*; ফরহাদ রেজা ৪-০-২৯-১, শরিফউল্লাহ ২-০-৭-১, কামরুল ৪-০-৩৩-২, রেজাউর ৪-০-২২-২, এনামুল জুনিয়র ৪-০-২২-২, তাইবুর ২-০-১২-১)।

ফল: প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ১৯ রানে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: ইমরান উজ্জামান