‘সাকিব-তামিম-মুশফিকদের দুই বছর পর নাও পেতে পারি’

২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়ে বাংলাদেশ দলের পরিকল্পনা এখনও পর্যন্ত এগোচ্ছে সিনিয়র ক্রিকেটারদের ঘিরেই। তবে রাসেল ডমিঙ্গোর প্রশ্ন, বিশ্বকাপের পথে ছুটতে ছুটতে যদি ছিটকে পড়েন সিনিয়রদের কেউ? বাংলাদেশের প্রধান কোচের তাই চাওয়া এমন কিছু ক্রিকেটার গড়ে তোলা, প্রয়োজনে যারা হতে পারেন উপযুক্ত বিকল্প।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 May 2021, 11:11 AM
Updated : 22 May 2021, 01:56 PM

ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালকে যদিও নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা দেওয়া হয়নি, তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তার দায়িত্ব লম্বা সময়ের জন্যই বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। সাকিব আল হাসান তো এখনও দলের প্রাণভ্রোমরা। এই চিত্র সহসা বদলানোর সম্ভাবনা সামান্যই। ব্যাটিং লাইনআপে মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর দায়িত্বও গুরুত্বপূর্ণ।

দলে তাদের যা ভূমিকা, সেখানে এখনও পর্যন্ত তাদের বিকল্প সেভাবে গড়ে ওঠেনি। অনেক সময়ই অভিযোগ ওঠে, তরুণদের গড়ে তোলার সুযোগও সেভাবে নেয়নি বা দেয়নি দল।

সেই সুযোগ নেওয়ার তাড়না এবার শোনা গেল ডমিঙ্গোর কণ্ঠে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ শুরুর আগের দিন শনিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ উদাহরণ দিয়েই বললেন, তরুণদের কাকে তিনি দেখতে চান।

“মুশফিক, তামিম, সাকিব ও রিয়াদের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আমাদের আছে। তবে দু-একজন তরুণকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করা ও সুযোগ দেওয়া সবসময় গুরুত্বপূর্ণ। এবার যেমন, আফিফ হোসেনের মতো তরুণ কেউ আসতে পারে এবং প্রভাব রাখতে পারে।”

“সিনিয়র ক্রিকেটার থাকার পাশাপাশি তরুণদের উন্নতিও গুরুত্বপূর্ণ। ওই ক্রিকেটাররা তো চিরদিন থাকবে না। চোট আসবে, ফর্মহীনতা থাকবে। এটা তাই নিশ্চিত করতে হবে যেন ক্রিকেটারদের সংখ্যার পরিধি বড় হয়।”

আফিফ হোসেনের মতো তরুণদের পরখ করতে চান কোচ ডমিঙ্গো। ছবি : বিসিবি।

তবে ভাবনায় রাখতে হচ্ছে আরও পারিপার্শ্বিকতাও। তরুণদের গড়ে তোলার কাজ করতে গিয়ে যদি সরাসরি বিশ্বকাপ খেলার সুযোগই না হয়! শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এই সিরিজের মতো সামনের বেশির ভাগ সিরিজই আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ সুপার লিগের অংশ, যা আদতে বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব।

ডমিঙ্গোও জানেন সেই বাস্তবতা। তাই তার চাওয়া, বর্তমান ও ভবিষ্যতের মধ্যে সমন্বয়ের সেতুবন্ধন গড়া।

“এই ব্যাপারটি একটু জটিল (সমন্বয়)। জয়টা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ, একই সঙ্গে ভবিষ্যতে একটি চোখ রাখাও জরুরি। কখনও কখনও তাই এই ব্যাপারটি মাথায় রাখতে হবে এবং সবসময়ই সাম্প্রতিক সময় বা অতীতে খুব বেশি পড়ে থাকলে চলবে না। সামনেও তাকাতে হবে।”

“আমরা জানি, এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি সিরিজ এবং পয়েন্ট পাওয়ার হাতছানি আছে। তাই দুটির সমন্বয় জরুরি। এখনকার পারফরম্যান্স যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ভবিষ্যতের জন্য দলের গড়ে ওঠাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। কে জানে, দুই বছর পর সাকিব, তামিম, রিয়াদ বা মুশফিককে হয়তো পাওয়া যাবে না! আরও কিছু ক্রিকেটার গড়ে তোলা তাই নিশ্চিত করতে হবে, যারা এই মানের ক্রিকেটারদের অভাব পূরণ করতে পারে। প্রক্রিয়াটির ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।”

ডমিঙ্গোর ভবিষ্যৎ ভাবনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ অলরাউন্ডাররা। লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের দলে অলরাউন্ডার হিসেবে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর মতো সিনিয়রদের পাশাপাশি আছেন মেহেদি হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। কোচ জানালেন, বিশ্বকাপের পরিকল্পনায়ই এত অলরাউন্ডারকে রাখা হচ্ছে দলে।

“বিশ্বকাপের মাস ছয়েক আগে আমাদের ব্যাটিং অর্ডার নিশ্চিত করতে হবে। এই সিরিজ যেমন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রাপ্তির দিক থেকে, তেমনি দুই বছর পর ব্যাটিং অর্ডার কেমন হবে, সেটি চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার সুযোগও। সবসময়ই সেরা দল খেলানোর ক্ষেত্রে স্মার্ট হতে হবে আমাদের, একই সঙ্গে দলে নড়বড়ে থাকাদের পরখ করার সুযোগও নিতে হবে।”

“মহামারী পরিস্থিতি আমাদের সুযোগ করে দিচ্ছে বড় স্কোয়াড রাখার, টেনিংয়ে ও প্রস্তুতি ম্যাচে অনেককে দেখে নেওয়ার। অলরাউন্ডারদের তাই দলে রাখার ইচ্ছে আছে আমাদের, যেন আমরা বিশ্বকাপে উপযুক্তদের পেতে পারি।”