গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডেতে দুর্দান্ত একটা সিরিজ কাটানোর পর টানা দুই সিরিজে ব্যর্থ লিটন। চলতি বছরের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে হাসেনি তার ব্যাট। ৬ ম্যাচ মিলিয়ে করেন কেবল ৭৬ রান, সর্বোচ্চ ২২।
সৌম্যর অবস্থাও তথৈবচ। সবশেষ ১৫ ওয়ানডে ইনিংসে তার ফিফটি মোটে ১টি। এই সময় দলে তার ভূমিকাও বদলেছে ক্রমাগত। জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেন ফিনিশারের ভূমিকায়। সেই সিরিজে এক ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ মেলে, আউট হয়ে যান ৭ রান করে। পরে নিউ জিল্যান্ডে ব্যাট করেন তিন নম্বরে। সেখানে তিন ম্যাচ মিলিয়ে করেন কেবল ৩৩ রান।
সাকিব আল হাসান ফেরায় শ্রীলঙ্কা সিরিজে তিনে সুযোগ নেই অন্য কারও। তামিমের ওপেনিং সঙ্গী হওয়ার লড়াই থাকবে লিটন ও সৌম্যর।
সুযোগ যেখানেই আসুক, শুক্রবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক জানালেন, দুই জনই যেন ধারাবাহিকভাবে ভালো করে, এটুকুই তার চাওয়া।
“লিটন, সৌম্যর ব্যাপারে আমার আশা, তারা এই সিরিজে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে। আমার ধারণা, এই দুজনের অনেক বেশি সম্ভাবনা আছে, তাদেরকে এখন ডেলিভার শুরু করতে হবে।”
“এটাও বলছি না, তারা কিছু করেনি, কিছু তো করেছেই। তবে তাদের কাছ থেকে যদি আরও বড় কিছু আসে, দলের জন্য এর থেকে ভালো কিছু হতে পারে না। আপনি-আমি সবাই জানি সৌম্য-লিটন কেমন… যদি অমন দুয়েকটা বড় পারফরম্যান্স এই সিরিজে পাই, তাহলে কাজটা সহজ হয়ে যায়।”
সৌম্য-লিটনদের নিবেদন, ভাবনায় কোনো গলদ দেখছেন না তামিম। তিনি বললেন, দুই জনই কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। নিজেদের ভুলটা তারা ভালো করেই জানেন, তাই তাদের নিয়ে ধৈর্য হারাচ্ছেন না অধিনায়ক।
“বারবারই বলেছি, যদি একজন ক্রিকেটারের চিন্তাধারায় ঘাটতি থাকে, তাহলে তাকে কিছু বলা বা বুঝানোটা সহজ। আমার ধারণা তারাও সেটা অনুভব করে যে, আরও ধারাবাহিক হতে হবে, বড় রান করতে হবে। তারা এটা জানে তারা ভুল করছে, এবং এটা নিয়ে আমি খুশি। কারণ অনেক সময়, আপনি যদি ভুল করে নাই জানেন, তাহলে ঝামেলা। তারা এটা বুঝতে পারে।”
লিটন, সৌম্যর জন্য জন্য উদাহরণ আছে দলেই। তামিম চান এই দুই জন হয়ে উঠুক মুশফিকের মতো নির্ভরযোগ্য।
গত পাঁচ বছরে তিন সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটসম্যান মুশফিক। ১৪২ ইনিংসে ৪২-এর একটু বেশি গড়ে করেছেন ৫ হাজার ৩৮ রান। পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস তার ৩৬টি। পাঁচ হাজারের কাছাকাছি আছেন তামিমও। চার হাজার রান নেই আর কারও।
এই সময়ে ১০০ ইনিংসে ২৭.৭৬ গড়ে লিটনের রান ২ হাজার ৬৬৫। ১০১ ইনিংসে সৌম্যর রান ২ হাজার ৪৫২। লিটনের পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস ১৭টি, সৌম্যর একটি কম। দলকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিতে এই দুই জনের ব্যাটে তামিম চাইলেন মুশফিকের মতো ধারাবাহাকিতা।
“আমি নিশ্চিত, তারা এর থেকে বেরিয়ে আসবে। আমরা কিছু ঝলক দেখেছি, সৌম্য-লিটনের কাছ থেকে। এখন যদি ওরা মুশফিকের মতো ধারাবাহিক পারফর্ম করা শুরু করে, তাহলে আমরা ওয়ানডেতে ঘরে-বাইরে দারুণ একটা দল হয়ে উঠতে পারব।”