১২ বছরের মানসিক লড়াই, নির্ঘুম রাত কেটেছে টেন্ডুলকারের

প্রতিভাকে পরিশীলিত করা, পরিপাটি ক্যারিয়ার গড়ে তোলা, প্রত্যাশার প্রতিদান পরিপূর্ণ রূপে দেওয়া, এরকম অনেক কিছুতেই শচিন টেন্ডুলকারকে মনে করা হয় ক্রিকেট বিশ্বে আদর্শ। তবে তার আড়ালের লড়াইয়ের কতটাই বা জানা সবার! টেন্ডুলকার নিজেই এবার যেমন বললেন, ক্যারিয়ারের প্রায় এক যুগ ধরে নিজের মনের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে তাকে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2021, 04:54 AM
Updated : 17 May 2021, 04:54 AM

ভারতের একটি অনলাইন শিক্ষা প্ল্যাটফর্মের আয়োজনে কথোপকথনে রোববার মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রসঙ্গে টেন্ডুলকার শোনালেন তার জীবনের সেই অধ্যায়ের গল্প। ২৪ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের প্রায় অর্ধেক সময়ই তাকে ভুগিয়েছে মানসিক যুদ্ধ।

“ সময়ের সঙ্গে আমি উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম, খেলার জন্য শারীরিক প্রস্তুতির পাশাপাশি মানসিক প্রস্তুতিও গুরুত্বপূর্ণ। আমার ভাবনায়, খেলা শুরু হয়ে যেত আমি মাঠে প্রবেশ করার অনেক আগে থেকেই। উদ্বেগের পর্যায়টা ছিল অনেক বেশি।”

“১০-১২ বছর ধরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে আমাকে এবং ম্যাচের আগে অসংখ্য রাত আমার নির্ঘুম কেটেছে। পরে মানিয়ে নিতে শুরু করি এভাবে যে, এটাও আমার প্রস্তুতির অংশ। এরপর রাতে ঘুম না হলেও স্বভাভাবিক থেকেছি। মনকে প্রফুল্ল রাখতে কিছু একটা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চেয়েছি।”

কিভাবে সেই সময়টা কাটাতেন, সেসবের কিছু নমুনাও শোনালেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যান।

“ব্যাটিংয়ের মতো ভঙ্গি করতাম, টিভি দেখতাম, ভিডিও গেম খেলতাম। এমনকি চা বানানো, নিজের কাপড় ইস্ত্রি করা, এসবও আমাকে সাহায্য করেছে ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হতে। ম্যাচের আগের দিনই পরিপাটি করে ব্যাগ গুছিয়ে নিতাম, আমার বড় ভাই (টেন্ডুলকারের ক্যারিয়ারে যার প্রভাব অনেক) আমাকে এসব শিখিয়েছিলেন। ভারতের হয়ে শেষ ম্যাচটি খেলার আগেও এই রুটিন অনুসরণ করেছি।”

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়া ও সেঞ্চুরির একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান এই ব্যাটসম্যানের মতে, ক্রিকেটের আর দশটা চোটের মতোই দেখা উচিত মানসিক লড়াইকেও।

“ যখন কেউ চোট পায়, ফিজিও-ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখেন যে কোথায় সমস্যা। মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারটিও ঠিক একইরকম। সবাইকেই ভালো-খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। যখন খুবই দুঃসময় আসে, তখনই কাছের মানুষদের পাশে প্রয়োজন হয়।”

“ এখানে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এটা মেনে নেওয়া। শুধু ওই ক্রিকেটার নয়, তার আশপাশের মানুষদেরও এটা বুঝতে হবে। সবাই যখন এটা মেনে নেবে, তখন সমাধানও বের হতে থাকবে।”