‘ক্লিক-লাইকের লোভে সবাই কোহলিকে সেরা বলে’

বিরাট কোহলি ও কেন উইলিয়ামসনের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? মাইকেল ভনের মতে, পার্থক্য কেবলই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী সংখ্যা আর বিজ্ঞাপনের আয়ে। ব্যাটসম্যানশিপে এই দুজনকে পাশাপাশিই রাখেন সাবেক এই ইংল্যান্ড অধিনায়ক। ভনের মতে, উইলিয়ামসন ভারতের হলে সবাই তাকেই বিশ্বসেরা বলে মানত।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2021, 03:43 AM
Updated : 15 May 2021, 03:43 AM

আগামী মাসেই আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ইংল্যান্ডে মুখোমুখি হবে ভারত ও নিউ জিল্যান্ড। এটি যেমন হবে টেস্টের সেরা দলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই, তেমনি লড়াই একটি হবে সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের দুজনের মধ্যেও। সেই দুজন আবার দুই দলের নেতৃত্বেও।

আইসিসি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে গত ডিসেম্বর থেকে টানা এক নম্বরে আছেন উইলিয়ামসন। আগে দীর্ঘদিন এক নম্বরে থাকা কোহলি এখন নেমে গেছেন পাঁচে। তবে অনেকের চোখে ব্যাটসম্যান হিসেবে এগিয়ে কোহলিই। বিশেষ করে, আলোচনা যখন তিন সংস্করণ মিলিয়ে, কোহলিকে সেরা মানেন ক্রিকেট অনুসারী থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞদের বড় অংশ।

সেই অংশে অবশ্য নেই ভন। বরাবরই চাঁচাছোলা ও বিতর্কিত মন্তব্য করতে জুড়ি নেই তার। নিউ জিল্যান্ডের স্পার্ক স্পোর্ট-এ সাক্ষাৎকারে সাবেক এই ব্যাটসম্যান বললেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জোয়ার কোহলির পক্ষে হলেও ব্যাটসম্যান হিসেবে পিছিয়ে নেই উইলিয়ামসন।

বিরাট কোহলি ও কেন উইলিয়ামসন। ছবি : বিসিসিআই।

“ কেন উইলিয়ামসন যদি ভারতীয় হতো, সে হতো বিশ্বের সেরা ক্রিকেটার। কিন্তু সে এখন সেরা নয়, কারণ বিরাট কোহলি সেরা নয়, এটা বলার সুযোগই নেই। (কোহলিকে সেরা না বললে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধুয়ে ফেলা হবে।”

“ সবাই বিরাটকে সেরা বলে নিশ্চিতভাবেই স্রেফ বেশি ক্লিক ও লাইক পাওয়ার খাতিরে, বেশি অনুসারী পাওয়ার জন্য। কিন্তু সব সংস্করণ মিলিয়েই, কেন উইলিয়ামসন সমানভাবেই সেরা। যেভাবে সে খেলে, তার ধীরস্থির আচরণ, সৌম্য ভাবমূর্তি, তার বিনয় এবং নিশ্চুপ থেকে যেভাবে নিজের কাজ করে যায়… (সব মিলিয়েই)।”

ভারতের মতো জনবহুল দেশে ক্রিকেটের তুমুল জনপ্রিয়তা, বিজ্ঞাপনের বিশাল বাজার, তারকাখ্যাতি, এসব কারণেই কোহলিকে এগিয়ে রাখা হয় বলে মনে করেন ইংল্যান্ডকে ৫১ টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়া ভন।

“ কেন উইলিয়ামসনও দারুণ সাফল্য পেয়েছে। এমন নয় যে নিউ জিল্যান্ডের আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি বলেই এসব বলছি। বরং তিন সংস্করণ মিলিয়েই গ্রেট ক্রিকেটারদের মধ্যে একজন উইলিয়ামসন এবং নিশ্চিতভাবেই সে কোহলির সমমানের। ব্যাপারটি স্রেফ হলো, তার ইনস্টাগ্রামে ১০ কোটি অনুসারী নেই, বিজ্ঞাপন থেকে সে ৩-৪ কোটি ডলার বা প্রতি বছর কোহলি যা পায়, ততটা আয় করে না।”  

পরিসংখ্যানে টেস্টে উইলিয়ামসনকে কিছুটা এগিয়ে রাখা গেলেও অন্য দুই সংস্করণে বেশ এগিয়ে কোহলি। ৯১ টেস্টে ২৭ সেঞ্চুরিতে কোহলির রান ৭ হাজার ৪৯০, গড় ৫২.৩৭। উইলিয়ামসনের গড় সেখানে ৫৪.৩১। ৮৩ টেস্ট খেলে ২৪ সেঞ্চুরিতে কিউই অধিনায়কের রান ৭ হাজার ১১৫।

ওয়ানডেতে ১৫১ ম্যাচে ১৩ সেঞ্চুরিতে উইলিয়ামসনের রান ৬ হাজার ১৭৩, গড় ৪৭.৪৮। কোহলির পারফরম্যান্স এই সংস্করণে অবিশ্বাস্য। ব্যাটিং ৫৯.০৭। ২৫৪ ম্যাচে ৪৩ সেঞ্চুরিতে ভারতীয় অধিনায়কের রান ১২ হাজার ১৬৯। স্ট্রাইক রেট উইলিয়ামসনের ৮১.৭৫, কোহলির ৯৩.১৭।

টি-টোয়েন্টিতেও কোহলির ব্যাটিং গড় চোখধাঁধানো, ৫২.৬৫। ম্যাচ ৯০টি খেলে তার রান ৩ হাজার ১৫৯। স্ট্রাইক রেট ১৩৯.০৪। এই সংস্করণে উইলিয়ামসন পিছিয়ে অনেকটাই। ৬৭ ম্যাচে তার রান ১ হাজার ৮০৫। গড় ৩১.৬৬, স্ট্রাইক রেট ১২৫.০৮।