‘আমি এতই খারাপ!’ নিজেকে নিয়ে সংশয়ে কুলদিপ

সময়ের চাকা কত দ্রুত ঘুরতে থাকে, কুলদিপ যাদব তা এখন টের পাচ্ছেন ভালোভাবেই। খুব বেশি দিন হয়নি, বোলিং বৈচিত্র দিয়ে তিনি ছিলেন আলোচনায়। এখন সেই তিনিই হাপিত্যেশ করছেন একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতে। বাইরে বসে থাকতে থাকতে নিজেকে নিয়েও তার তৈরি হয়েছে সংশয়। বাঁহাতি এই রিস্ট স্পিনার লড়ছেন আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 May 2021, 06:38 AM
Updated : 12 May 2021, 06:38 AM

সামনে ইংল্যান্ড সফরের জন্য ভারতের ২০ সদস্যের বিশাল দলে জায়গা হয়নি কুলদিপের। স্থগিত হওয়া আইপিএলেও তিনি সুযোগ পাননি খেলার, কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাত ম্যাচের সবকটিতে ছিলেন একাদশের বাইরে।

ম্যাচ খেলতে না পারার সংকট তার আরও আগে থেকেই শুরু। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনি টেস্টে ইনিংসে ৫ উইকেট শিকারের পরও পরের টেস্ট খেলতে তার অপেক্ষা করতে হয় দুই বছর!

গত ফেব্রুয়ারিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই টেস্টে তৃতীয় স্পিনার হিসেবে খেলে বোলিংয়ের সুযোগ পান কম। প্রথম ইনিংসে ছয় ওভার মোটে বল করে উইকেট পাননি, দ্বিতীয় ইনিংসে ছয় ওভারে পান দুটি উইকেট। এরপর আবার বাদ।

পরে ইংলিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দুটি ম্যাচে অবশ্য সুযোগ পান। কিন্তু দুই ম্যাচেই ছিলেন খরুচে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কুলদিপ বললেন, আত্মবিশ্বাস তলানিতে চলে যাওয়াতেই তার এই অবস্থা।

“ যতটা প্রত্যাশা ছিল, তত ম্যাচ খেলার সুযোগ পাইনি। আত্মবিশ্বাস ছিল অনেক কম। টানা খেলতে থাকলে, ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস ভালো থাকে। বাইরে বসে থাকলে কাজটা আরও কঠিন হয়ে ওঠে। দুই বছর পর গত ফেব্রুয়ারিতে যখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্ট খেললাম, ভীষণ চাপ অনুভব করেছি তখন।”

“কোভিডের কারণে এমনিতেই সব থমকে ছিল, সব মিলিয়ে এক বছরে পরিস্থিতি অনেক কঠিন হয়ে ওঠে। সময়টা মোটেও ভালো ছিল না।”

আইপিএলে কলকাতার হয়েও যখন সুযোগ পাচ্ছিলেন না, বিশেষ করে চেন্নাইয়ের টার্নিং উইকেটেও, নিজেকে বোঝানো কুলদিপের জন্য ছিল কঠিন।

“ বিশেষ করে, যখন আইপিএল দল কলকাতা নাইট রাইডার্সেও জায়গা পেলাম না, বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলাম, ‘আমি কি এতটাই খারাপ!’ এটা টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত। তাদের কাছে কারণ জানতে চাওয়া তাই ভুল হতো।”

“ আইপিএলে এমনকি চেন্নাইয়েও আমার সুযোগ হয়নি, যেখানে উইকেট ছিল টার্নিং। হতাশ হয়েছি, কিন্তু কিছু করার ছিল না। জৈব-সুরক্ষা বলয়ের জীবনও সবাইকে চ্যালেঞ্জে ফেলে দিয়েছে। যখন খেলার সুযোগ হয় না, কিছুই ভালো লাগে না।”

ম্যাচ খেলার অপেক্ষায় নিজের সামর্থ্য নিয়েই মাঝেমধ্যে দোলাচলে পড়ে যান, বললেন ২৬ বছর বয়সী এই স্পিনার।

“কখনও কখনও আমার মনে হয়েছে, ‘হচ্ছেটা কী!’ সময়টা কঠিন ছিল। কখনও কখনও মন বলে, ‘আমি আর আগের কুলদিপ নেই। আবার কখনও মনে হয়, ‘না, আগের মতোই আছি এবং সুযোগের অপেক্ষা করব।’

“ কোনো কোনো দিন পানি টেনে এবং বেঞ্চে বসে থেকে মনে হয়, এটিই উপযুক্ত জায়গা, সেরা জায়গায় আছি। আবার কোনো কোনো দিন মনে হয়, আমার তো এখানে থাকার কথা নয়। নিজেকে সবসময় উজ্জীবিত করার চেষ্টা করি, খুশি থাকতে চাই এবং অনুভব করি যে বোলিং ভালো করছি। কিন্তু নিজেকে নিয়ে সংশয় থেকে যায় কোথাও। সবসময়ই এরকম হয়, নিজেকে প্রশ্ন করতে শুরু করি।”