পাকিস্তানকে অপেক্ষায় রাখল জিম্বাবুয়ের শেষ জুটি

তৃতীয় দিনেও নেই বোলারদের জন্য বাড়তি তেমন কোনো সুবিধা। কিন্তু হাসান আলি, শাহিন শাহ আফ্রিদিদের বোলিং আর জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং দেখে সেটা বোঝার কোনো উপায় নেই। ব্যাটসম্যানরা যেন গেলেন আর এলেন।  তাদের ব্যর্থতায় টানা দ্বিতীয় টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারের দুয়ারে স্বাগতিকরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 May 2021, 04:40 PM
Updated : 9 May 2021, 04:40 PM

১৫ উইকেট পতনের দিনে রোববারই ম্যাচ শেষ করার আশা জাগিয়েছিল পাকিস্তান। তবে তাদের অপেক্ষায় রেখেছে জিম্বাবুয়ের শেষ উইকেট জুটি।  

প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানে গুটিয়ে যাওয়া স্বাগতিকরা ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি এবারও। দিন শেষ করেছে ৯ উইকেটে ২২০ রানে। ইনিংস ব্যবধান হার এড়াতে তাদের এখনো প্রয়োজন ১৫৮ রান।

জিম্বাবুয়ের ৯ উইকেট পড়ে যাওয়ায় দিনের নির্ধারিত সময়ের পরও বাড়তি আধা ঘণ্টা সময় বাড়ানো হয়। কিন্তু চার ওভার পরই আলোকস্বল্পতায় দিনের খেলার সমাপ্তি টানেন আম্পায়াররা। সফরকারীরা ভাঙতে ব্যর্থ হয় লুক জঙ্গুয়ে ও ব্লেসিং মুজারাবানির প্রতিরোধ। ৫ ওভার কাটিয়ে দেন এই দুই জনে।

প্রথম ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে দেড়শর আগে থামিয়ে দেওয়ার মূল কারিগর হাসান ২৭ রান দিয়ে নেন ৫ উইকেট। আগের টেস্টেই ৩৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন ডানহাতি এই পেসার।

বাঁহাতি স্পিনে নুমান আলি দ্বিতীয় ইনিংসে এখনও পর্যন্ত ৮৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট। দিনের শেষ দিকে আগুন ঝরানো বোলিংয়ে আফ্রিদির প্রাপ্তি চারটি।

হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে ৪ উইকেটে ৫২ রান নিয়ে রোববার দিন শুরু করা জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস শেষ হয়ে যায় প্রথম সেশনেই। এ দিন কেবল ৮০ রান যোগ করতেই শেষ ৬ উইকেট হারায় তারা। ইনিংসে দলটির নেই কোনো পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি।

দিনের চতুর্থ বলেই হাসান ফিরিয়ে দেন টেন্ডাই চিসোরোকে। এদিন আর দলকে বেশিদূর টানতে পারেননি আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান রেজিস চাকাভা। হাসানের বাড়তি বাউন্সে ড্রাইভ করতে গিয়ে ক্যাচ দেন প্রথম স্লিপে।

হাসানের তোপে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। রয় কাইয়াকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন তিনি।

৩৭৮ রানে পিছিয়ে থাকা জিম্বাবুয়েকে আবার ব্যাটিংয়ে পাঠায় পাকিস্তান। ইনিংসের শুরুতে ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা। তারিসাই মুসাকান্দাকে কট বিহাইন্ড করেন আফ্রিদি।

এবারও দলের হাল ধরেন চাকাভা। কেভিন কাসুজাকে নিয়ে গড়েন প্রতিরোধ। নুমানের স্পিনে কাসুজা বোল্ড হলে ভাঙে ৫০ রানের জুটি।

নুমানকে পরপর দুটি চার মেরে রানের খাতা খোলেন ব্রেন্ডন টেইলর। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দ্রুত বাড়াতে থাকেন রান। ১০ চারে ৩১ বলে ৪৯ রান করা জিম্বাবুয়ের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ককে থামিয়ে দেন আফ্রিদি। ভাঙে ৭৯ রানের জুটি।

একটা সময় জিম্বাবুয়ের রান ছিল ২ উইকেটে ১৪২। দলটি আশা জাগিয়েছিল লড়াইয়ের। কিন্তু টেইলরের আউটের পর আর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি তারা।  

এক প্রান্ত আগলে রাখা চাকাভাবে থামান নুমান। ম্যাচে জিম্বাবুয়ের হয়ে একমাত্র ফিফটি করা চাকাভার ৮০ রানের ইনিংসে ১৩টি চারের সঙ্গে ছক্কা দুটি।

পরে মিল্টন শুম্বা, টিরিপানো ও কাইয়ার উইকেট নিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন নুমান। শেষ বেলায় জ্বলে উঠেন আফ্রিদি। পরপর দুই বলে বোল্ড করে দেন চিসোরো ও রিচার্ড এনগারাভাকে।

আলো কমতে থাকায় দুই প্রান্তেই স্পিন দিয়ে এদিনই ম্যাচ শেষ করতে চেয়েছিলেন বাবর আজম। কিন্তু ভাঙা যায়নি শেষ জুটির প্রতিরোধ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৫১০/৮ ইনিংস ঘোষণা।

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৬০.৪ ওভারে ১৩২ (আগের দিন ৫২/৪) (চাকাভা ৩৩, চিসোরো ১, জঙ্গুয়ে ১৯, টিরিপানো ২৩, কাইয়া ১১, এনগারাভা ১৫*, মুজারাবানি ৭; আফ্রিদি ১৪-৪-৩৪-১, তাবিশ ১৫-৮-২২-১, হাসান ১৩-৪-২৭-৫, নুমান ৬-৩-৩-০, সাজিদ ১২.৪-৬-৩৯-২)।

জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস: ৬৩ ওভারে ২২০/৯ (কাসুজা ২২, মুসাকান্দা ৮, চাকাভা ৮০, টেইলর ৪৯, শুম্বা ১৬, জঙ্গুয়ে ৩১*, টিরিপানো ০, কাইয়া ০, চিসোরো ৮, এনগারাভা ০, মুজারাবানি ০*; আফ্রিদি ১৭-৫-৪৫-৪, তাবিশ ৯-২-৪২-০, হাসান ১০-৭-৯-০, সাজিদ ৬-১-৩২-০, নুমান ২১-৩-৮৬-৫)।