টেস্ট ইতিহাসে ৪০০ উইকেটের স্বাদ পাওয়া ১০ পেসারের একজন অ্যামব্রোস। নিজের দিনে তার চেয়ে ভয়ঙ্কর ফাস্ট বোলার ক্রিকেটে ছিল কমই। দারুণ আগ্রাসী ছিলেন তিনি, অসাধারণ সব স্পেল উপহার দিয়েছেন। ছন্দে থাকা অ্যামব্রোসকে সামলানো কঠিন ছিল সেরা ব্যাটসম্যানদের জন্যও। কোর্টনি ওয়ালশের সঙ্গে তার জুটি ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা ফাস্ট বোলিং জুটিগুলোর একটি।
ফাস্ট বোলিংয়ের রসায়ন তাই যথেষ্টই জানা অ্যামব্রোসের। একটি ইউটিউব ক্রিকেট শো-তে তিনিই বললেন, বুমরাহর বোলিংয়ের মুগ্ধ দর্শক তিনি।
“ ভারতের এখন দারুণ কিছু ফাস্ট বোলার আছে। আমি জাসপ্রিত বুমরাহর বড় ভক্ত। আমার দেখা অন্য সব বোলারের চেয়ে সে অনেক দিক থেকেই আলাদা। সে দারুণ কার্যকর এবং সামনে তাকে আরও ভালো করতে দেখতে মুখিয়ে আছি আমি।”
এক যুগের সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারে ২২৫ ওয়ানডে উইকেটের পাশাপাশি ৯৮ টেস্ট খেলে ৪০৫ উইকেট অ্যামব্রোসের। বুমরাহ কি সেই উচ্চতা ছুঁতে পারবেন? না পারার কারণ দেখেন না অ্যামব্রোস।
“ যদি সে সুস্থ ও ফিট থাকে, লম্বা সময় খেললে সে অবশ্যই পারে। সে বল সিম করাতে পারে, সুইং করাতে পারে এবং দুর্দান্ত সব ইয়র্কার করতে পারে। লম্বা সময় যদি সে নিজেকে ধরে রাখতে পারে, আমি নিশ্চিত সে পারবে (৪০০ উইকেট নিতে)।”
লম্বা ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে বড় বাধা হতে পারে বুমরাহর বোলিং অ্যাকশন। ছোট রান আপেই অনেক জোরে বল করেন তিনি, কাঁধ ও পিঠের ওপর ধকল যায় অনেক। এর মধ্যেই বেশ কবার চোটে পড়েছেন তিনি। এছাড়াও এখন সব সংস্করণ খেলে নিজেকে ফিট রাখাও কঠিন। টেস্টের চেয়ে সীমিত ওভার ও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে ঝোঁক বেশি থাকাটা অস্বাভাবিক নয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজেরই আরেক কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার মাইকেল হোল্ডিং তো আগেই বলেছেন, অ্যাকশনের কারণে চোট নিয়ে ভুগতে হবে বুমরাহকে। অ্যামব্রোস অবশ্য আশার ছবিও দেখালেন বুমরাহর জন্য।
“ ফাস্ট বোলিংয়ের ক্ষেত্রে, মূল ব্যাপারটি হলো ছন্দ। বল ডেলিভারির আগে ভালো রিদম গড়ে তুলতে হয়। বুমরাহর রান আপ ছোট্ট, প্রায় হেঁটেই যায়, ডেলিভারির আগে কয়েক পদক্ষেপ হালকা দৌড়ায় স্রেফ। তার মানে, শরীরের ওপর অনেকটা ধকল যায় ওর।”
“ তবে যদি সে যথেষ্ট শক্ত থাকতে পারে, আমার মনে হয় সে ঠিক থাকতে পারবে। স্রেফ সংক্ষিপ্ত রান আপের জন্য যথেষ্ট শক্ত থাকতে হবে তাকে। যদি তা করতে পারে, সে অনেক দূর যাবে।”
টি-টোয়েন্টি দিয়ে আলোচনায় আসার পর টেস্ট ক্যারিয়ারের শুরু থেকে এই সংস্করণেও নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছেন বুমরাহ। তবে চোট, অন্যান্য সংস্করণ খেলার কারণে বিশ্রাম মিলিয়ে ৩ বছরে খেলতে পেরেছেন ১৯ টেস্ট, উইকেট নিয়েছেন ৮৩টি।