আবিদের দ্বিশতক, নুমানের ৩ রানের আক্ষেপ

দ্বিতীয় দিনের শুরুতে দারুণ লড়াই করল জিম্বাবুয়ে। এক প্রান্ত আগলে রাখা আবিদ আলি এদিনও পথ দেখালেন পাকিস্তানকে। লড়াকু ব্যাটিংয়ে করলেন ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি। নয়ে নেমে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়ে আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেন নুমান আলি। তাদের ব্যাটে পাঁচশ ছাড়ানো সংগ্রহ নিয়ে ইনিংস ঘোষণার পর জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরেছে পাকিস্তান।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2021, 04:07 PM
Updated : 8 May 2021, 04:07 PM

সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন ৮ উইকেটে ৫১০ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। ৪ উইকেটে ৫২ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে জিম্বাবুয়ে। আগের টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে হারা স্বাগতিকরা ৪৫৮ রানে পিছিয়ে।

পাকিস্তানকে বিশাল সংগ্রহ এনে দেওয়ার মূল কারিগর আবিদ ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে করেন ২১৫ রান। তার অপরাজিত ৪০৭ বলের ইনিংসে চার ২৯টি।

অষ্টম উইকেটে আবিদের সঙ্গে দেড়শ ছাড়ানো জুটি গড়েন নুমান।  পাকিস্তানের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্টে নয়ে নেমে সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও পারেননি তিনি। ১০৪ বলে ৫ ছক্কা ও ৯ চারে ফিরেন ৯৭ রান করে।

হারারে স্পোর্টস ক্লাবের মন্থর উইকেটে দিনের শুরুটা ভালো হয়নি পাকিস্তানের। চার উইকেটে ২৬৪ রান নিয়ে খেলতে নামা দলটি দ্রুত হারায় নাইটওয়াচম্যান সাজিদ খানকে।

দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মোহাম্মদ রিজওয়ানও। বাঁহাতি স্পিনার টেন্ডাই চিসোরোকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়ে মিডঅনে ধরা পড়েন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। পরের ওভারেই হাসান আলিকে ফিরিয়ে দেন অভিষিক্ত লুক জঙ্গুয়ে।

এক প্রান্ত আগলে রেখে আস্থার সঙ্গে খেলতে থাকেন আগের দিন সেঞ্চুরি করা আবিদ। দারুণ ব্যাটিংয়ে ৩১৭ বলে স্পর্শ করেন দেড়শ। নুমানকে নিয়ে কাটিয়ে দেন প্রথম সেশনের বাকি অংশ।

দ্বিতীয় সেশনেও এই দুই জনের জুটি ভাঙতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। তাদের ব্যাটে ছুটতে থাকে পাকিস্তান।

মিল্টন শুম্বাকে চার মেরে ৩৯৩ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিতে পা রাখেন আবিদ। তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া নুমান প্রথম ফিফটি স্পর্শ করেন ৮৬ বলে।

অষ্টম উইকেটে দুইজনের জুটির রান একশ পেরিয়ে আরও সামনের দিকে যেতে থাকে। ফিফটির পর তাণ্ডব চালান নুমান। ৫৯ রানে জীবনও পান একবার। শুম্বার ওভারে দুই চার ও এক ছক্কায় নেন ১৮ রান। পরে ব্লেসিং মুজারাবানিকে ওড়ান আরেকটি ছক্কায়।

দ্রুত প্রথম সেঞ্চুরির দিকে এগোতে থাকেন নুমান। চা বিরতির পর অবশ্য টিকতে পারেননি আর। ছুঁতে পারেননি কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্ক। চিসোরোর বলে স্টাম্পড হয়ে যান ৯৭ রানে। সঙ্গে সঙ্গেই প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। 

আবিদ-নুমানের জুটিতে আসে ১৬৯ রান, অষ্টম উইকেটে পাকিস্তানের যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। আর নুমানের ইনিংসও দলটির হয়ে নয় নম্বরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

অভিষেকের জন্য কত লম্বা সময় অপেক্ষা। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেকের দেড় যুগ পর সুযোগ পেলেন টেস্টে। তবে উইকেটের জন্য মোটেও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হলো না। নিজের প্রথম ওভারেই তারিসাই মুসাকান্দাকে এলবিডব্লিউ করে দেন তাবিশ খান।

শূন্য রানে ভাঙে জিম্বাবুয়ের শুরুর জুটি। মাটি কামড়ে পড়ে থেকে শুরুর ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন রেজিস চাকাভা ও কেভিন কাসুজা। কিন্তু থিতু হয়ে ফিরে যান কাসুজা। আগের টেস্টের মতো এবারও তিনি হাসান আলির শিকার। ব্যাটের কানায় লেগে বোল্ড হন এই ওপেনার।

ব্রেন্ডন টেইলরকে টিকতে দেননি শাহিন শাহ আফ্রিদি। এই পেসারের বাড়তি বাউন্সে কট বিহাইন্ড হন জিম্বাবুয়ের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক। শুম্বাও ফেরেন উইকেটে জমে গিয়ে।

সাজঘরে ফেরা জিম্বাবুয়ের চার ব্যাটসম্যানের একজনও যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। চাপে পড়া দলের এক প্রান্ত আগলে রেখেছেন চাকাভা। ২৮ রানে ব্যাট করছেন তিনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১৪৭.১ ওভারে ৫১০/৮ ইনিংস ঘোষণা (আগের দিন ২৬৮/৪) (আবিদ ২১৫*, সাজিদ ২০, রিজওয়ান ২১, হাসান ০, নুমান ৯৭; মুজারাবানি ২৯-৬-৮২-৩, এনগারাভা ২৪-৫-৫৮-১, জঙ্গুয়ে ১৭-১-৬৮-১, টিরিপানো ২২-৫-৮৩-১, চিসোরো ৪০.১-৭-১৩১-২, শুম্বা ১৫-১-৭৩-০)।

জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৩০ ওভারে ৫২/৪ (কাসুজা ৪, মুসাকান্দা ০, চাকাভা ২৮*, টেইলর ৯, শুম্বা ২, চিসোরো ১*; আফ্রিদি ৯-৩-১৬-১, তাবিশ ১০-২-২২-১, হাসান ৬-৩-৭-১, নুমান ২-২-০-০, সাজিদ ৩-৩-০-১)।