পাল্লেকেলে টেস্টের দ্বিতীয় দিন দ্বিতীয় সেশনে ব্যাট-বলের লড়াই জমে উঠল বেশ। চা বিরতিতে প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার রান ৬ উইকেটে ৪২৫ রান।
দুই সেশনে শুক্রবার ৫৬ ওভারে ১৩৪ রান যোগ করতে ৫ উইকেট হারায় লঙ্কানরা।
সহজাত আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান ডিকভেলা ক্রিজে গিয়েই শট খেলতে শুরু করেন। অপরাজিত আছেন তিনি ২৯ বলে ৩১ রান নিয়ে। ১২ রান নিয়ে তার সঙ্গী রমেশ মেন্ডিস। আটে নামলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে মেন্ডিস মূলত ব্যাটিং অলরাউন্ডার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫টি সেঞ্চুরি আছে তার, যার মধ্যে একটি ট্রিপল সেঞ্চুরি।
প্রথম দিনের মতো ব্যাটিং স্বর্গ নয় উইকেট। বাউন্স কিছুটা অসমান এ দিন। নিচু হয়েছে পেসারদের বল। টার্ন ও বাড়তি বাউন্স মিলছে স্পিনারদের। ধীরে হলেও স্পিনারদের জন্য বাড়ছে সুবিধা।
সিরিজে জুড়ে দারুণ বোলিং করা তাসকিন ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন এ দিনও। টানা ভালো বোলিং করার পুরস্কারও পেয়ে যান- সেঞ্চুরিয়ান লাহিরু থিরিমান্নে, অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও পাথুম নিশানকার উইকেট। আলগা করে চাপ সরিয়ে দেননি বাংলাদেশের কোনো বোলারই।
১ উইকেটে ২৯১ রান নিয়ে দিন শুরু করা লঙ্কানরা প্রথম সেশনে ২৬ ওভারে মাত্র ৪৩ রান তুলতে হারায় ৩ উইকেট।
দ্বিতীয় নতুন বলে আগের দিন হয়েছিল স্রেফ ৫ ওভার। বল ছিল বেশ নতুন। তাই দিনের শুরুতে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তিন পেসারকে দিয়ে বোলিং করার মুমিনুল হক।
আগের দিন প্রথম ঘণ্টার পর খেই হারিয়েছিল বাংলাদেশের বোলিং। সাবলীল গতিতে এগিয়ে গিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। এ দিন লাইন-লেংথ ধরে রাখেন সফরকারীরা। তাতেই মেলে সাফল্য।
ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছিলেন থিরিমান্নে। হঠাৎই একটু মনোযোগ হারান। শরীর তাক করে আসা তাসকিনের বল শাফল করে খেলার চেষ্টায় তার গ্লাভস ছুঁয়ে জমা হয় কিপার লিটন দাসের গ্লাভসে।
ভাঙে ওশাদা ফার্নান্দোর সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে ১০৪ রানের জুটি। ১৫ রানে ২৮৯ বলে ১৪০ রান করেন থিরিমান্ন।
দুই বল পরই তাসকিন উইকেট পেতে পারতেন আরেকটি। তার অফ স্টাম্প ঘেঁষা দুর্দান্ত ডেলিভারি ডিফেন্স করার চেষ্টায় পরাস্ত হন ম্যাথিউস। বল যায় লিটনের গ্লাভসে। আবেদন করেননি বোলার, কিপার বা বাংলাদেশের কেউই। কিন্তু আল্ট্রা এজ-এ মেলে ব্যাটে বলের স্পর্শের প্রমাণ।
সেটির চড়া মূল্য অবশ্য দিতে হয়নি। নিজের এক ওভার পরই তাসকিন ফিরিয়ে দেন ম্যাসথিউসকে। ব্যাটের কানা ছুঁয়ে আসা ক্যাচ ঝাঁপিয়ে গ্লাভসে জমান লিটন। শূন্য রানে ‘বেঁচে যাওয়া’ ম্যাথিউস ফিরেন ৫ রানে।
প্রথম টেস্টে দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস খেলা ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে টিকতে দেননি তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনারের অফ স্টাম্পের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে ডিফেন্স করতে চেয়েছিলেন ধনাঞ্জয়া। ব্যাটের কানায় স্পর্শ করেন লিটনের গ্লাভস ছুঁয়ে বল যায় স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে। দুইবারের চেষ্টায় বল মুঠোবন্দি করেন তিনি।
দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ঘণ্টা নিরাপদেই কাটিয়ে দেয় শ্রীলঙ্কা। ওশাদার সঙ্গে জমে যায় পাথুম নিশানকার জুটি।
পানি পানের বিরতির কিছুক্ষণ পর এই জুটি ভাঙতে অধিনায়ক ফেরান তাসকিনকে। হতাশ করেননি এই পেসার। চতুর্থ বলেই বোল্ড করে দেন নিসানকাকে। নিখুঁত লেংথে পিচ করা বল পড়তে গড়বড় করেন নিসানকা। সামনে খেলার বদলে পেছনে খেলতে গিয়ে সামলাতে পারেননি।
চমৎকার বোলিং করলেও পুরস্কার পাচ্ছিলেন না মিরাজ। অবশেষে ওশাদাকে ফিরিয়ে পান প্রথম সাফল্য। সুইপ করার চেষ্টায় বল তার গ্লাভস-প্যাড-ব্যাট ছুঁয়ে উঠে যায় ক্যাচ। ব্যাটসম্যানের চাওয়া বুঝতে পেরে লিটন আগেই সরে যান লেগে, গ্লাভসে জমান সহজ ক্যাচ। শেষ হয় ২২১ বলে ৮১ রানের ইনিংস।
দ্বিতীয় সেশনের বাকি সময়টায় কোনো ক্ষতি হতে দেননি ডিকভেলা ও মেন্ডিস। ডিকভেলার ব্যাটে বেড়েছে রানের গতি।
দ্বিতীয় সেশনে ৩০ ওভারে ৯১ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। সাড়ে চারের কাছাকাছি রান রেটে ৪৩ রান এসেছে সপ্তম উইকেট জুটিতে।