শ্রীলঙ্কার প্রথম জুটিই ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ

“প্রথম ঘণ্টা বোলারদের দাও, বাকি দিনটা নিজের করে নাও”-টেস্ট ক্রিকেটের চিরায়ত সেই কথাটি যেন আরেকবার সত্য প্রমাণ করছেন দিমুথ করুনারত্নে ও লাহিরু থিরিমান্নে। শুরুর অস্বস্তির সময়টুকু দাঁতে দাঁত চেপে পার করে দিয়ে পরে অনায়াসেই রান বাড়াচ্ছেন শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার। দুই সেশনেও একটি উইকেটের দেখা পায়নি বাংলাদেশ।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 April 2021, 09:34 AM
Updated : 29 April 2021, 09:34 AM

পাল্লেকেলে টেস্টের প্রথম দিনে চা বিরতিতে শ্রীলঙ্কার রান ৫৮ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৮৮।

করুনারত্নে ও থিরিমান্নের এটি টানা তৃতীয় শতরানের উদ্বোধনী জুটি। টেস্ট ইতিহাসে এই কীর্তি গড়া একাদশ জুটি তারা, শ্রীলঙ্কার প্রথম।

আগের টেস্টে ২৪৪ রানের ইনিংসের পর এবারও সেঞ্চুরি হয়ে গেছে করুনারত্নের। দ্বাদশ টেস্ট সেঞ্চুরিতে লঙ্কান অধিনায়ক অপরাজিত ১৭৫ বলে ১০৬ রান করে। ইনিংসের শুরুর দিকে পা রেখেছেন তিনি ৫ হাজার রানে, যে মাইলফলকে তিনি দশম শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান।

থিরিমান্নে অপেক্ষায় তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি। খেলছেন ১৭৪ বলে ৮০ রান নিয়ে।

প্রথম সেশনে তবু সুযোগ সৃষ্টি করতে পেরেছিল বাংলাদেশ। দুবার ক্যাচ দেন করুনারত্নে, থিরিমান্নেও ক্যাচমতো দেন। কিন্তু পরের সেশনে দুজন ছিলেন প্রায় নিখুঁত। রানও এসেছে দ্রুততায়, ওভারপ্রতি প্রায় চার করে।

লাঞ্চের আগে ২৭ ওভারে আসে ৬৬ রান। দ্বিতীয় সেশনে ৩১ ওভারে ১২২।

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে কেবল তাসকিন আহমেদ ছিলেন একটু উজ্জ্বল। প্রথম সেশনে তার বলেই আসে তিনটি সুযোগ। ২৮ রানে মিড অফে ক্যাচ করুনারত্নে। কিন্তু শুরুতে বুঝে উঠতে একটু দেরি করায় বলের কাছে সময়মতো যেতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। দুই বল পরই স্লিপে তুলনামূলক সহজ ক্যাচ হাতে জমাতে ব্যর্থ হন নাজমুল হোসেন শান্ত।

উইকেটের অপেক্ষায় বোংলাদেশের ফিল্ডাররা, শেষ হয়নি সেই অপেক্ষা। ছবি: শ্রীলঙ্কা।

একটু পর তাসকিনের বলেই থিরিমান্নের শট গালি দিয়ে বল বেরিয়ে যায় বাউন্ডারিতে। মেহেদী হাসান মিরাজ ঝাঁপিয়েও পারেননি। অনেক কঠিন, তবে সুযোগ অবশ্যই।

পাল্লেকেলের উইকেট এই ম্যাচে প্রায় ন্যাড়া, নেই ঘাসের লেশমাত্র। ম্যাচের শুরুতে তাই উইকেট আগের টেস্টের চেয়েও আরও বেশি ব্যাটিং সহায়ক। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত জানাতে খুব দেরি হয়নি করুনারত্নের।

বাংলাদেশের শুরুটা ছিল আশা জাগানিয়া। তাসকিনের করা ম্যাচের দ্বিতীয় ওভারেই এলবিডব্লিউর আবেদন হয় দুটি। বেশ অস্বস্তিতে ফেলেন তিনি করুনারত্নেকে। প্রথম ঘণ্টাজুড়েই সেই দৃশ্য দেখা যায় নিয়মিত। তাসকিন, আবু জায়েদ চৌধুরি, অভিষিক্ত শরিফুল ইসলাম বেশ কবারই বিপাকে ফেলেন দুই লঙ্কান ওপেনারকে।

প্রথম ঘণ্টায় কট বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়ে একটি রিভিউও হারায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ঘণ্টার শুরু থেকেই দিশা হারায় বাংলাদেশের বোলিং। আলগা হয় লঙ্কানদের চাপ। বাউন্ডারি আসতে থাকে নিয়মিত।

তাসকিন দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে সুযোগ সৃষ্টি করেন। আগের টেস্টে দারুণ বোলিংয়ের ধারাবাহিকতা এই ম্যাচেও বয়ে আনেন। গতির পাশাপাশি মুভমেন্টও কিছু আদায় করেন তিনি। কিন্তু পাশে পাননি সতীর্থদের।

লাঞ্চের পর না ভালো হয়েছে বাংলাদেশের বোলিং, না ফিল্ডিং। পেস-স্পিন কিছুই কার্যকর হয়নি। শরীরী ভাষাও পড়তে থাকে ক্রমে। করুনারত্নে ও থিরিমান্নে আরামে এগোতে থাকেন।

পঞ্চাশ ছুঁতে ১১১ বল লাগে করুনারত্নের। ফিফটি থেকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যান কেবল ৫৪ বলেই!

থিরিমান্নের ফিফটি আসে ১০২ বলে।

দুজনের জুটি পেরিয়ে যায় নিজেদের আগের সর্বোচ্চ ১৬১ রান। ছুটছেন তারা নতুন মাইলফলকের দিকে। বাড়ছে বাংলাদেশের হতাশা।