টেস্ট ক্রিকেটের ‘স্বাদ’ পেয়ে রোমাঞ্চিত শরিফুল

পাঁচটি দিন যেন স্বপ্নময় জগতে বিচরণ ছিল শরিফুল ইসলামের। ড্রেসিং রুমের আবহে বুঁদ হয়েছেন। সতীর্থদের প্রয়োজনে বারবার মাঠে ছুটে গেছেন। কখনও কখনও কোচদের বার্তাবাহক হয়ে ডানা মেলেছেন মাঠময়। সব মিলিয়ে প্রথম টেস্টে এতটাই একাত্ম ছিলেন, বাঁহাতি এই পেসারের মনেই হয়নি তিনি একাদশের বাইরে। তার মনে হচ্ছিল, খেলছেন তিনিও!

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 April 2021, 10:47 AM
Updated : 27 April 2021, 01:17 PM

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের স্বাদ এরই মধ্যে পেয়েছেন শরিফুল। দেশের হয়ে খেলেছেন তিনটি টি-টোয়েন্টি। সবশেষ নিউ জিল্যান্ড সফরে অভিষেকে ভালো না করলেও পরের দুই ম্যাচে তার বোলিং ছিল নজরকাড়া। এগিয়ে চলার ধারাবাহিকতায় ১৯ বছর বয়সী পেসার সঙ্গী হয়েছে শ্রীলঙ্কা সফরের বাংলাদেশ দলে, প্রথমবার আছেন টেস্ট দলেও।

এতেই তিনি সুযোগ পান টেস্ট ক্রিকেটকে কাছ থেকে দেখার ও অনুভব করার। সেই রোমাঞ্চ তাকে আন্দোলিত করছে টেস্ট শেষ হওয়ার দুই দিন পরও। বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায় মঙ্গলবার তরুণ পেসার বললেন, ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণের স্বাদ একরকম পাওয়া হয়ে গেছে তার।

“ প্রথমবারের মতো ১৪ জনে ছিলাম। এত কাছ থেকে টেস্ট খেলা কখনও দেখিনি। আমার জন্য রোমাঞ্চকর ছিল। টেস্ট খেলা আসলে মজার খেলা। প্রতি সেশনে ‘মুভমেন্ট’ বদল হয়, ম্যাসেজ পাঠানো হয়। আমি খুবই রোমাঞ্চিত ছিলাম, মনে হয়নি যে ম্যাচের বাইরে আছি। মনে হচ্ছিল যে ম্যাচ খেলছি। সবসময় যাওয়া-আসার ভেতর, ইনফরমেশনের ভেতর ছিলাম।”

নিজে পেসার বলেই হয়তো পেসারদের পারফরম্যান্স তাকে ছুঁয়ে গেছে বেশি। বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন, পাল্লেকেলের নিষ্প্রাণ উইকেটে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে নিজেদের কতটা নিংড়ে দিতে হয়েছে তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেনদের। তাদের দেখে নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন শরিফুল।

“তাসকিন ভাই লম্বা স্পেল করেছেন। অনেক ওভার করেছেন। তাসকিন ভাই, ইবাদত ভাই, রাহি ভাই… তাসকিন ভাই, ইবাদত ভাই অনেক জোরে বল করেছেন। সেটা দেখে ভালো লেগেছে যে, এত গরমে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একই গতিতে এত জোরে বল করা… টেস্ট খেলা এমনই যে নিজের শতভাগ দিতে হয়। তারা চেষ্টা করেছেন শতভাগ দেওয়ার। যদি কখনও সুযোগ পাই, আমিও চেষ্টা করব।”

আপাতত সেই সুযোগের আশায়ই দিন গুনছেন শরিফুল। তার ক্রিকেট গুরু, বাংলাদেশের হয়ে তিন টেস্ট খেলা সাবেক পেসার আলমগীর কবিরের কাছ থেকে অনেক শুনেছেন টেস্ট ক্রিকেটের গল্প। ১৯ বছর বয়সী পেসার সেভাবেই হৃদয়ে এঁকেছেন টেস্টের স্বপ্ন।

“আমি যখন খেলা শুরু করেছি, তখন থেকেই চিন্তা ছিল যে তিনটি ফরম্যাটই খেলব। যদি আমি টেস্ট খেলি কখনও, নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। আমার কোচ, যার কাছে আমি শিখেছি, অনুশীলন করেছি, উনি টেস্ট ক্রিকেটার ছিলেন। উনি বলেছিলেন, টেস্ট ক্রিকেট হলো সর্বোচ্চ মানের খেলা। ওইখানে খেলতে পারলে ভালো হবে। কখনও সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব।”

বেশ কিছু দিন ধরেই দলের সঙ্গে আছেন শরিফুল। কাজে লাগাচ্ছেন পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের কাছ থেকে নতুন কিছু শেখার সুযোগ। এখন অপেক্ষা মাঠে সেগুলো প্রয়োগের।

“অনেক ভালো অনুশীল করছি আমরা এখন। সবাই মিলে বাড়তি জিম করছি, স্পট বোলিং করছি। ওটিস বোলিংয়ের গ্রিপ ও সবকিছু শেখাচ্ছে। যদি কখনও খেলি, যেগুলো শিখেছি, ম্যাচে বাস্তবায়ন করে দেখানোর চেষ্টা করব। দলের জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করব।”

আগামী বৃহস্পতিবার পাল্লেকেলেতেই শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।