বাংলাদেশের আলোকিত দিনের শেষ আলোর স্বল্পতায়

স্টেডিয়ামে ফ্লাড লাইট আছে, কিন্তু তা ব্যবহার করা যাবে না! সিরিজ শুরুর আগে ‘প্লেয়িং কন্ডিশন’-এ আছে এটিই। আলোকস্বল্পতায় তাই থমকে গেল বাংলাদেশের অগ্রগতি। তার আগে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হকের অসাধারণ জুটিতে টানা দ্বিতীয় দিন দাপটে কাটাল দল।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 April 2021, 12:18 PM
Updated : 22 April 2021, 05:27 PM

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাল্লেকেলে টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৪৭৪।

শেষ সেশনে হালকা বৃষ্টির পর কালো মেঘে ঢেকে যায় আকাশ। পর্যাপ্ত আলো না থাকায় ২৫ ওভার আগেই শেষ হয় দিনের খেলা।

দুর্দান্ত টেম্পারামেন্টের ছাপ রেখে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির ইনিংসটি ১৬৩ রানে নিয়ে থামেন শান্ত। দেশের বাইরে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিতে মুমিনুল করেন ১২৭ রান।

ম্যাচের প্রথম দিনে গড়া শান্ত ও মুমিনুলের দেড়শ রানের জুটি এ দিন স্পর্শ করে রেকর্ড উচ্চতা। তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ২৪২ রানের জুটি গড়েন দুজন।

১২৬ রান নিয়ে সকালে দিন শুরু করেন শান্ত, ৬৪ রান নিয়ে মুমিনুল। আগের দিন বেশ এলোমেলো বল করা লঙ্কান পেসাররা দ্বিতীয় দিনে ছিলেন অনেকটা গোছানো। লাইন-লেংথ আঁটসাঁট রেখে রান আটকানোর ছঁক নিয়ে নামেন তারা। শট খেলার সুযোগ খুব বেশি দেননি। শান্ত ও মুমিনুলও ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে।

প্রথম সেশনে কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ তোলে ৭৬ রান। এই সেশনেই মুমিনুল দেখা পান দেশের বাইরে আরাধ্য প্রথম সেঞ্চুরির।

২২৪ বল খেলে তিনি পা রাখেন তিন অঙ্কে। একাদশ সেঞ্চুরিটি তার ক্যারিয়ারের মন্থরতম শতকও।

একটু পরই শান্ত ছাড়িয়ে যান দেড়শ। লাঞ্চের পরও দারুণ খেলে দুজনের জুটি ছাড়িয়ে যায় তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশের আগের রেকর্ড ২৩৬ রানকে।

শান্তকে ফিরিয়ে ২৪২ রানে জুটি ভাঙার পর সতীর্থদের সঙ্গে বোলার লাহিরু কুমারার উল্লাস। ছবি : শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট।

আগের দিন শান্ত ২৮ রানে একবার জীবন পেলেও আর কোনো সত্যিকারের সুযোগ দেননি দুজনের কেউই।

৮৫ ওভারের বেশি উইকেটে কাটানো এই জুটি শেষ পর্যন্ত থামে শান্তর বিদায়ে। লাহিরু কুমারার বলটি পিচ করে একটু থেমে আসে, শান্তর ড্রাইভে বল সরাসরি যায় বোলারের হাতে।

৩৭৮ বলে ১৭ চার ও ১ ছক্কায় ১৬৩ রানে শেষ হয় শান্তর দারুণ অভিযান।

পরে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে মুমিনুলের জুটিও জমে উঠছিল। তবে দীর্ঘ হয়নি। অফ স্টাম্পের বাইরে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার ফ্লাইটেড বলে শরীরের একটু দূরে ড্রাইভ খেলেন মুমিনুল। একটু টার্ন করে ব্যাটের কানা ছুঁয়ে ক্যাচ যায় প্রথম স্লিপে।

৩০৪ বলে তার ১২৭ রানের ইনিংসে চার ১১টি। টেস্ট ক্যারিয়ারে এই প্রথম ৩০০ বল তিনি খেলতে পারলেন।

এরপর মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের জুটিতেও ৫০ রান এসে যায়। অনিয়মিত বোলার দিমুথ করুনারত্নের বলে একটি স্কুপ করে বাউন্ডারি ছাড়া দ্রুত রান তোলার তাড়া খুব একটা দেখা যায়নি তার ব্যাটিংয়ে। লিটন অবশ্য শট খেলেন কিছু।

দিন শেষে মুশফিক অপরাজিত ১০৭ বলে ৪৩ রানে, ৩৯ বলে ২৫ রানে লিটন।

এ দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তৃতীয় দিনে খেলা শুরু হবে ১৫ মিনিট আগে। চেষ্টা করা হবে দিনে ৯৮ ওভার খেলা চালানোর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫৫ ওভারে ৪৭৪/৪ (আগের দিন ৩০২/২) (শান্ত ১৬৩, মুমিনুল ১২৭, মুশফিক ৪৩*, লিটন ২৫*; লাকমল ৩১-১২-৭৪-০, বিশ্ব ২৮-৮-৭৫-২, কুমারা ২৮-৪-৮৮-১, ম্যাথিউস ৭-১-১৪-০, ধনাঞ্জয়া ২৭-১-১১২-১, হাসারাঙ্গা ৩৩-২-৯৪-০, করুনারত্নে ১-০-৫-০)।