শেষ বলের ছক্কায় মলিন মুস্তাফিজ

নিখুঁত লাইন-লেংথ, সুইং, স্লোয়ারে দুর্দান্ত শুরু করেছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথম ওভারেই পেয়েছিলেন উইকেটের স্বাদ। শেষ পর্যন্ত ছন্দ ধরে রাখতে পারেননি রাজস্থান রয়্যালসের বাঁহাতি এই পেসার। শেষ বলে ছক্কা হজম করে বিবর্ণ হলো তার বোলিং ফিগার।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2021, 04:11 PM
Updated : 20 April 2021, 02:45 AM

মুম্বাইয়ে সোমবার চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে এক উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ। প্রথম তিন ওভারে ২২ রান দেওয়া এই পেসার শেষ ওভারে দেন ১৫ রান।

ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুস্তাফিজরা ম্যাচ হারে ৪৫ রানে। চেন্নাইয়ের দেওয়া ১৮৯ রানের লক্ষ্যে রবীন্দ্র জাদেজা ও মইন আলির দারুণ বোলিংয়ে ১৪৩ রানে থামে রাজস্থান।

মইন ৩ ওভারে ৭ রান দিয়ে নেন তিন উইকেট। ৪ ওভার করা জাদেজার প্রাপ্তি ২৮ রানে দুটি।

গত দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ না পাওয়া মুস্তাফিজ এবার নামেন শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে। চার বল খেলে নিতে পারেননি কোনো রান।

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেওয়া রাজস্থান অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসন ইনিংসের চতুর্থ ওভারে মুস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন। শুরুটা দুর্দান্ত করেন বাঁহাতি পেসার। প্রথম বলে তার ইনসুইংয়ে ফাফ দু প্লেসি ঠিকভাবে ব্যাটে-বলে করতে পারেননি, আসে এক রান।

দ্বিতীয় বলও ছিল একই ধরনের, পরাস্ত হন রুতুরাজ গায়কোয়াড। পরের দুই বলে আসে দুটি সিঙ্গেল। পঞ্চম বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে পুল করতে চেয়েছিলেন গায়কোয়াড। কিন্তু স্লোয়ার কাটারে বল তুলে দেন হাওয়ায়, মিড অফে সহজ ক্যাচ নেন শিভাম দুবে। শেষ বলে আসেনি কোনো রান। ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে মুস্তাফিজের শিকার একটি।

জয়দেব উনাদকাটকে পরের ওভারে ৩ চার ও এক ছক্কা মারেন দু প্লেসি, আসে ১৯ রান। ১৭ বলে ৩৩ করা দক্ষিণ আফ্রিকান এই ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে দেন ক্রিস মরিস।

সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে এসে সুবিধা করতে পারেননি মুস্তাফিজ। ওয়াইড দিয়ে শুরু হয় ওভার। পরে তাকে একটি করে ছক্কা-চার মারেন মইন। ১৩ রান আসে ওই ওভার থেকে।

লেগ স্পিনে রাহুল তেওয়াতিয়া ফিরিয়ে দেন মইনকে। থিতু হয়ে যাওয়া আম্বাতি রায়ডু ও সুরেশ রায়নাকে এক ওভারে ফেরান চেতান সাকারিয়া।

ষোড়শ ওভারে আবার বল হাতে পান মুস্তাফিজ। আঁটসাঁট বোলিংয়ে বেঁধে রাখেন অভিজ্ঞ মহেন্দ্র সিং ধোনি ও জাদেজাকে। অসাধারণ বোলিংয়ে দেন কেবল ৬ রান।

ইনিংসের শেষ ওভারে করেন একটি ‘নো’ বল। বাড়তি বলে হজম করেন ছক্কা। সেই ওভারে রান আউট হন দুই ব্যাটসম্যান।

প্রথম ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন মুস্তাফিজ। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে ২৯ রান দিয়ে নেন দুই উইকেট। এবার একটি উইকেট পেলেও ওভার প্রতি ৯-এর বেশি রান দিলেন তিনি।

রান তাড়ায় চতুর্থ ওভারে মানান ভোহরাকে হারায় রাজস্থান। এক প্রান্ত আগলে থেকে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে লক্ষ্যের দিকে এগোতে থাকেন জস বাটলার। তাকে সঙ্গ দেন দুবে। এই দুই জনের ৪৭ রানের জুটি ভাঙেন রবীন্দ্র জাদেজা। দারুণ এক ডেলিভারিতে ৪৯ রান করা বাটলারকে বোল্ড করার পর এলবিডব্লিউ করে দেন দুবেকে।

মইন আক্রমণে এসে পরপর দুই ওভারে তুলে নেন ডেভিড মিলার, রিয়ান পারাগ ও মরিসের উইকেট। আর এখানেই জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় চেন্নাইয়ের।

তেওয়াতিয়া, উনাদকাটরা কেবল কমিয়েছেন হারের ব্যবধান। অষ্টম উইকেটে তারা গড়েন ৪২ রানের জুটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চেন্নাই সুপার কিংস: ২০ ওভারে ১৮৮/৯ (রুতুরাজ ১০, দু প্লেসি ৩৩, মইন ২৬, রায়না ১৮, রায়ডু ২৭, জাদেজা ৮, ধোনি ১৮, কারান ১৩, ব্রাভো ২০*, শার্দুল ১, দিপক ০*; উনাদকাট ৪-০-৪০-০, সাকারিয়া ৪-০-৩৬-৩, মুস্তাফিজ ৪-০-৩৭-১, মরিস ৪-০-৩৩-২, তেওয়াতিয়া ৩-০-২১-১, পারাগ ১-০-১৬-০)।

রাজস্থান রয়্যালস: ২০ ওভারে ১৪৩/৯ (বাটলার ৪৯, ভোহরা ১৪, স্যামসন ১, দুবে ১৭, মিলার ২, পারাগ ৩, তেওয়াতিয়া ২০, মরিস ০, উনাদকাট ২৪, সাকারিয়া ০*, মুস্তাফিজ ০*; দিপক ৩-০-৩২-০, স্যাম ৪-০-২০-২, শার্দুল ৩-০-২০-০, জাদেজা ৪-০-২৮-২, ব্রাভো ৩-০-২৮-১, মইন ৩-০-৭-৩)।

ফল: চেন্নাই সুপার কিংস ৪৫ রানে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: মইন আলি।