সেই মরিসই রাজস্থানের জয়ের নায়ক

টি-টোয়েন্টি ম্যাচের প্রথম ৩৮ ওভারে ছক্কা মোটে তিনটি। পরের ১০ বলে কিনা সেখানে ৪ ছক্কা! ব্যাটসম্যান একজন-ক্রিস মরিস। এই অলরাউন্ডারের শেষের ঝড়ে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছে রাজস্থান রয়্যালস।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 April 2021, 06:25 PM
Updated : 15 April 2021, 07:26 PM

আগের ম্যাচে শেষের আগের বলে সিঙ্গেল না নিয়ে মরিসকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন অধিনায়ক। পরে সাঞ্জু স্যামসন ২ বলে ৫ রানের সমীকরণ মেলাতে না পারায় ওই ঘটনা নিয়ে হয় তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। সেই মরিস এবার দেখালেন তার সামর্থ্য।

মুস্তাফিজুর রহমান, জয়দেব উনাদকাটদের দারুণ বোলিংয়ে দিল্লি থামে ১৪৭ রানে। সেই রানও কঠিন হয়ে যায় রাজস্থানের জন্য। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন দাঁড়ায় ২৭ রান। মরিসের ১৮ বলে ৩৬ রানের সুবাদে সেটি পেরিয়ে যায় তারা ২ বল বাকি থাকতে। আসরে পায় নিজেদের প্রথম জয়, ৩ উইকেটে।

উইকেটে বল গ্রিপ করেছে। সেটা দারুণভাবে কাজে লাগিয়েছেন দুই দলের বোলাররাই। দিল্লির ইনিংসে ছক্কা নেই একটিও। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে আইপিএলে ২০ ওভার স্থায়ী ছক্কাহীন দলীয় ইনিংসের ঘটনা এটিই প্রথম।

রান তাড়ায় রাজস্থানের শুরুটা ভালো হয়নি। তৃতীয় ওভারে ওকসের তিন বলের মধ্যে বিদায় নেন দুই ওপেনার মানান ভোহরা ও জস বাটলার। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান স্যামসন টেকেন কেবল তিন বল। তাদের মতো দুই অঙ্কে যেতে পারেননি শিভাম দুবে ও রিয়ান পারাগও।

দশম ওভারে ৪২ রানে নেই ৫ উইকেট। দলকে এরপর টানেন ডেভিড মিলার। তাকে সঙ্গ দেন রাহুল তেওয়াতিয়া। তিনি বিদায় নেন ৪৮ রানের জুটি গড়ে।

চোটে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়া বেন স্টোকসের জায়গায় সুযোগ পাওয়া মিলার ফিফটি স্পর্শ করেন ৪০ বলে। ১৬তম ওভারে আভেশ খানকে ছক্কায় ওড়ান তিনি টানা দুই বলে। প্রথমটি ম্যাচেরই প্রথম! টানা তৃতীয় ছক্কার চেষ্টায় লং অনে ধরা পড়েন দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান (৪৩ বলে ৬২)।

১৭তম ওভারে ওকসকে একটি ছক্কা মারেন উনাদকাট। পরের ওভারে দারুণ বোলিংয়ে টম কারান দেন কেবল ৭ রান। এরপরই শেষ দুই ওভারে ২৭ রানের ওই সমীকরণ। মরিস উইকেটে তখন ৮ বলে ৭ রান করে।

রাবাদার প্রথম বল ছক্কায় ওড়ান তিনি ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে। পঞ্চম বলে আরেকটি ছক্কা, এবার হুক শটে। ওভার থেকে আসে ১৫ রান।

শেষ ওভারে চাই ১২। কারানের প্রথম বলে মরিস নেন দুই রান। পরের বল ডিপ স্কয়ার লেগ দিয়ে আছড়ে ফেলেন গ্যালারিতে। তৃতীয় বলে নিতে পারেননি রান। চতুর্থ বল ফুলটস পেয়ে প্রায় একই জায়গা দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন মরিস।

ম্যাচের প্রথম ভাগে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩ উইকেট, পরে ৭ বলে একটি ছক্কায় অপরাজিত ১১, ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন উনাদকাট।

আসরে প্রথম ম্যাচ খেলতে বাঁহাতি এই পেসার তার প্রথম তিন ওভারে ফিরিয়ে দেন পৃথ্বী শ, শিখর ধাওয়ান ও অজিঙ্কা রাহানেকে। পাওয়ার প্লেতে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে দিল্লি তুলতে পারে কেবল ৩৬ রান।

এরপর মুস্তাফিজদের দারুণ বোলিংয়ে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো দিল্লি শেষ পর্যন্ত দেড়শও ছুঁতে পারেনি। সেই ম্যাচের শেষটায় যে এতটা উত্তেজনা ছড়াবে, তা কে জানত! 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দিল্লি ক্যাপিটালস: ২০ ওভারে ১৪৭/৮ (পৃথ্বী ২, ধাওয়ান ৯, রাহানে ৮, পান্ত ৫১, স্টয়নিস ০, যাদব ২০, টম কারান ২১, ওকস ১৫*, অশ্বিন ৭, রাবাদা ৯; শাকারিয়া ৪-০-৩৩-০, উনাদকাট ৪-০-১৫-৩, মরিস ৩-০-২৭-১, মুস্তাফিজ ৪-০-২৯-২, পারাগ ২-০-১৬-০, তেওয়াতিয়া ৩-০-২৭-০)

রাজস্থান রয়্যালস: ১৯.৪ ওভারে ১৫০/৭ (বাটলার ২, ভোহরা ৯, স্যামসন ৪, দুবে ২, মিলার ৬২, পারাগ ২, তেওয়াতিয়া ১৯, মরিস ৩৬*, উনাদকাট ১১*; ওকস ৪-০-২২-২, আভেশ ৪-০-৩২-৩, রাবাদা ৪-০-৩০-২, অশ্বিন ৩-০-১৪-০, টম কারান ৩.৪-০-৩৫-০, স্টয়নিস ১-০-১৫-০)

ফল: রাজস্থান রয়্যালস ৩ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: জয়দেব উনাদকাট।