ম্যাক্সওয়েলের ছক্কাবিহীন মৌসুম ছিল গত আইপিএলের সবচেয়ে আলোচিত ব্যাপারগুলোর একটি। হরহামেশাই যিনি বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে গুঁড়িয়ে দেন যে কোনো বোলিং আক্রমণ, গত আইপিএলে তিনি ১১ ম্যাচ খেলে একটি ছক্কাও মারতে পারেননি!
এবার প্রথম ম্যাচেই ম্যাক্সওয়েল ধরা দিলেন আপন চেহারায়। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে শুক্রবার রান তাড়ায় ২ উইকেটের জয়ে তিনি খেলেন ২৮ বলে ৩৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। আইপিএলে ছক্কার ভুলে যাওয়া স্বাদও পান আবার।
এ দিনও প্রথম ১৫ বলে ছক্কা পাননি তিনি। রান তখন ছিল ১৮। পরে পান্ডিয়ার বলে বিশাল ওই ছক্কায় কাটে খরা, আইপিএলে যেটি ছিল ১৭১ বল পর তার প্রথম ছয়। বিশাল সেই ছক্কা দেখে উইকেটে সঙ্গী বিরাট কোহলি পর্যন্ত অভিভূত হয়ে যান। বেঙ্গালোর অধিনায়ক বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না এত বড় ছক্কা!
প্রথমটির হাত ধরে আরেকটি চলে আসে দ্রুতই। পরের ওভারেই লেগ স্পিনার রাহুল চাহারের বলে সুইচ হিটে দ্বিতীয় ছক্কা মারেন ম্যাক্সওয়েল। তার এই ইনিংস ও কোহলির সঙ্গে ৫২ রানের জুটি বেঙ্গালোরকে এগিয়ে নেয় জয়ের পথে।
ম্যাচের পর সতীর্থ পেসার হার্শাল প্যাটেলের সঙ্গে কথোপকথনে ম্যাক্সওয়েল চওড়া হাসিতে জানান ছক্কা খরা কাটানোর অনুভূতি।
“ অবশ্যই খুব ভালো লেগেছে। গত বছর একটিও মারতে পারিনি (ছক্কা)। বিরাটকে এটা বলছিলামও যে গতবছর কোনো ছক্কা মারতে পারিনি। অবশেষে মাঝব্যাটে একটি লাগাতে পেরে বড় বোঝা নেমে গেছে।”
শুধু ছক্কা খরাই নয়, গত আইপিএলে ম্যাক্সওয়েলের সামগ্রিক ব্যর্থতাও ছিল তুমুল আলোচিত। কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে ১১ ইনিংসে মাত্র ১০১.৮৮ স্ট্রাইক-রেটে করেছিলেন ১০৮ রান।
ব্যর্থতার সঙ্গে তার পারিশ্রমিকের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে বারবার। ১০ কোটি ৭৫ লাখ রুপি তো চাট্টিখানি কথা নয়! হতাশ পাঞ্জাব ছেড়ে দেয় তাকে। অমন ব্যর্থতার পরও এবার তাকে ১৪ কোটি ২৫ লাখ রুপিতে দলে নেয় বেঙ্গালোর।
এবার তাই চাপ ছিল আরও বেশি। শুরুটা ভালো করতে পেরে ম্যাক্সওয়েলের কণ্ঠে ছিল স্বস্তি।
“ ভালো শুরু করাটা জরুরি ছিল। আরেকপ্রান্তে অধিনায়ক থাকায় কাজটা সহজ হয়েছে। আমার পরে আরও কয়েকজন ছিল যারা ঝড় তুলতে পারে। সব মিলিয়ে ভালো করতে পেরে ভালো লাগছে। দল জয় দিয়ে শুরু করেছে, এটাও দারুণ।”
ম্যাক্সওয়েলের পাশাপাশি এ দিন বেঙ্গালোরের আরেক মহাতারকা এবি ডি ভিলিয়ার্স খেলেন ২৭ বলে ৪৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। অধিনায়ক কোহলি করেন ২৯ বলে ৩৩। ম্যাচের সেরা অবশ্য তারা কেউই নন। ২৭ রানে ৫ উইকেট নেওয়ার পর শেষ বলে জয়সূচক রান করে ম্যান অব দা ম্যাচ পেসার হার্শাল প্যাটেল। আইপিএলের সব আসর মিলিয়ে মুম্বাইয়ের বিপক্ষে এই প্রথম ৫ উইকেট পেলেন কোনো বোলার।