বাংলাদেশ দলের স্পন্সর দারাজ, বিসিবির স্বস্তি

সিরিজভিত্তিক স্পন্সরশিপ থেকে বেরিয়ে অবশেষে লম্বা সময়ের জন্য স্পন্সর পেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। নতুন স্পন্সর অনলাইন মার্কেটপ্লেস ‘দারাজ।’ ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিসিবি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2021, 11:13 AM
Updated : 7 April 2021, 11:13 AM

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার এই চুক্তির কথা জানায় বিসিবি। এ দিন থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে চুক্তির মেয়াদ। ২০২৩ সালে ভারতে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আসর বসবে অক্টোবর-নভেম্বরে। মূলত বিশ্বকাপকে ঘিরেই চুক্তির মেয়াদ নভেম্বর পর্যন্ত।

বাংলাদেশের ছেলে ও মেয়েদের জাতীয় দলের পাশাপাশি ‘এ’ দল ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের স্পন্সরও দারাজ। এই প্রতিষ্ঠানেরই সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘হাংরিনাকি’ থাকবে এই দলগুলির ‘কিট’ স্পন্সর হিসেবে।

গত বছরের জানুয়ারিতে ইউনিলিভারের সঙ্গে বিসিবির চুক্তি শেষ হওয়ার পর সিরিজ ভিত্তিক স্পন্সরশিপ নিয়েই চলছিল দল। ওই সময় দীর্ঘমেয়াদী স্পন্সরশিপের জন্য দরপত্র আহ্বান করে প্রত্যাশিত সাড়া পায়নি বিসিবি। লাভ হয়নি তখন সময় বাড়িয়েও। বাধ্য হয়ে সিরিজ ভিত্তিক স্পন্সরশিপের পথ বেছে নিতে হয় বোর্ডকে।

পরে করোনাভাইরাসের প্রকোপে খেলা বন্ধ থাকে লম্বা সময়। স্পন্সর খোঁজার প্রক্রিয়াও থমকে যায়। বিরতির পর খেলা শুরু হলে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ও নিউ জিল্যান্ড সফরেও সিরিজ ভিত্তিক পৃষ্ঠপোষক ছিল দলের।

অবশেষে দীর্ঘমেয়াদী স্পন্সর পাওয়া গেল। কঠিন সময়ে স্পন্সর পেয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন তাদের স্বস্তির কথা।

“অবশ্যই স্বস্তির ব্যাপার। একটা চ্যালেঞ্জ তো ছিলই মহামারীর এই সময়ে। এটা বড় ব্যাপার যে স্পন্সররা এই সময়েও এগিয়ে এসেছেন। আমরা তো দেখছি চারপাশে, বিশেষ করে আইসিসিও এই সময়ে ভুগছে তাদের টার্গের্ট অর্জন করার জন্য। এরকম একটা সময়ে দারাজ এগিয়ে এসেছে, এজন্য আমরা ধন্যবাদ জানাই তাদের।”

মহামারীর কারণে পরিস্থিতি প্রতিকূল তো ছিলই, বাংলাদেশ দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও বাজে। তবে প্রধান নির্বাহী জানালেন, পণ্য হিসেবে ক্রিকেটের আবেদনে তা খুব একটা প্রভাব ফেলেনি।

“পারফরম্যান্স তো আসলে ভালো-খারাপ হয়ই। এখন খারাপ যাচ্ছে, এটা সত্যি। কিন্তু ক্রিকেট বাংলাদেশে ভালো একটি পণ্য, সেটিও সত্যি। আমাদের কাছে মনে হয়, যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কাছে ক্রিকেট একটা আকর্ষণীয় পণ্য। বাংলাদেশ দলের অনুসারী তো অসংখ্য, কাজেই পণ্য হিসেবে এটি লাভজনক।”

প্রধান নির্বাহী জানালেন, দরপত্রের জন্য বিসিবির বেঁধে দেওয়া ন্যূনতম মানদন্ড পূরণ করে লড়াইয়ে ছিল আরও দুটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে ছিল দেশের বাইরের প্রতিষ্ঠানও।

দারাজের সঙ্গে আড়াই বছরের চুক্তি কত টাকায় সেটা অবশ্য খোলাসা করতে নারাজ প্রধান নির্বাহী।

“আমরা স্পন্সরদের সঙ্গে কমিটেড যে টাকার অঙ্ক প্রকাশ করব না। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তো আলাদা বিজনেস পলিসি থাকে।”

ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সাহারার সঙ্গে বিতর্কিত চুক্তির পর ২০১৫ সালে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবির সঙ্গে চুক্তি হয় বিসিবির। সেবার অবশ্য একটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে জিতে পরে রবির হাতে তুলে দেয় স্পন্সরশিপ। আনুষ্ঠানিকভাবে তখনও জানানো হয়নি টাকার অঙ্ক। তবে তা দুই বছরের জন্য ৪২ কোটি টাকার আশেপাশে ছিল বলে জানা গিয়েছিল নানা সূত্র থেকে। পরে ২০১৭ সালে আবার দুই বছরের জন্য রবি চুক্তি করে ৬৪ কোটি টাকায়।

পরে ২০১৮ সালের অগাস্টে ‘প্রাসঙ্গিকতা হারানোর’ কারণ উল্লেখ করে চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় রবি। এরপর স্পন্সর হিসেবে বিসিবি পায় ইউনিলিভারকে। ওই বছরের সেপ্টেম্বর থেকে গত বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৭ মাসের জন্য এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি ছিল ৩৩ কোটি টাকার।

এবার টাকার অঙ্ক না জানালেও নিজাম উদ্দিন চৌধুরি বললেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে হয়তো আরও বেশি মূল্য তারা পেতেন।

“আমাদের ন্যূনতম মানদণ্ড যেহেতু পূরণ হয়েছে, অবশ্যই আমরা খুশি। হয়তো পরিস্থিতি এরকম না হলে আরেকটু বেশি পেতাম। তবে দুনিয়াজুড়েই তো এখন সবাই ধুঁকছে স্পন্সর পেতে।”