বিতর্কিত রান আউটে দুইশ হাতছাড়া, ফখর বললেন ‘আমারই দোষ’

কেবলই ক্রিকেটীয় কারণ, কিংবা দুর্ভাগ্য, নাকি প্রতারণার শিকার? ডাবল সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে ফখর জামানের রান আউট নিয়ে চলছে আলোচনার ঝড়। ‘ফেক ফিল্ডিং’-এর দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে কুইন্টন ডি কককে। তবে এই দক্ষিণ আফ্রিকান কিপারের দায় দেখছেন না স্বয়ং ফখর। পাকিস্তানি ওপেনার দায় নিচ্ছেন নিজের কাঁধেই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 April 2021, 04:52 AM
Updated : 5 April 2021, 08:02 AM

জোহানেসবার্গে রোববার দক্ষিণ আফ্রিকা-পাকিস্তান দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ফখরের অবিস্মরণীয় ইনিংস শেষ হয় বিতর্কিতভাবে। অসাধারণ খেলে বিরুদ্ধ স্রোতে দলকে এগিয়ে নিয়ে অবিশ্বাস্য এক জয়ের স্বপ্ন দেখান বাঁহাতি ওপেনার। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পেরে ওঠেননি। তবে দারুণ একটি ব্যক্তিগত মাইলফলকের হাতছানি ছিল তার সামনে।

৩৪২ রান তাড়ায় শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৩১ রান, ফখর তখন অপরাজিত ১৯২ রানে। স্ট্রাইকে ছিলেন ফখরই। প্রথম বলেই দ্বিতীয় রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হন তিনি।

বিতর্ক জাগায় তার রান আউট হওয়ার ধরন। বল লং অফে পাঠিয়ে দ্বিতীয় রান নিচ্ছিলেন ফখর। দক্ষিণ আফ্রিকার কিপার ডি কক ফিল্ডারের দিকে আঙুল উঁচিয়ে দেখান নন-স্ট্রাইক প্রান্তে থ্রো করতে। সেটা দেখেই হোক বা অন্য কারণে, ফখর দৌড়ের গতি একটু কমিয়ে দেন। পেছন ফিরে সঙ্গী ব্যাটসম্যানের দিকেও তাকান। কিন্তু ফিল্ডারের থ্রো ছুটে আসে স্ট্রাইক প্রান্তে, ফখরের দিকেই। শেষ মুহূর্তে খেয়াল করে ফখর দ্রুত ক্রিজে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন বটে। তবে থ্রো সরাসরি স্টাম্পে লাগে আগেই।

১৮ চার ও ১০ ছক্কায় ১৫৫ বলে ১৯৩ রানে রান আউট ফখর। রান তাড়ায় প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির ইতিহাস গড়তে পারেননি অল্পের জন্য। যেটি হতো তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি।

একসময় ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করতে মাঠে ফিল্ডাররা ইচ্ছা করে ডাইভ দেওয়া বা থ্রো করার ভঙ্গি করতেন। এটা থামাতেই ২০১৭ সালে ‘ফেক ফিল্ডিং’ আইন করা হয়। যে আইনে বলা আছে, কথা বা কাজ দিয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাটসম্যানকে ভিন্নমুখী বা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা কিংবা বাধার সৃষ্টি করলে তা অন্যায্য হবে। সেক্ষেত্রে শাস্তি হিসেবে ব্যাটিং দলের সঙ্গে ৫ রান যোগ হয় এবং বলটি হয় ‘ডেড।’

মাঠের আম্পায়াররা ফখরের এই ঘটনার পর ব্যবস্থা নেননি। ডি কক ইচ্ছাকৃতভাবেই অমন করেছেন কিনা, তা বোঝাও কঠিন। কারণ কিপাররা হরহামেশাই এভাবে নির্দেশনা দেন ফিল্ডারদের। ম্যাচ শেষে সব ছাপিয়ে এটি নিয়েই চলতে থাকে আলোচনা।

তবে ফখর নিজে ডি কককে কাঠগড়ায় তোলেননি।

“দোষ আমারই ছিল, আরেকপ্রান্তে হারিস রউফকে দেখতেই ব্যস্ত ছিলাম আমি। আমার মনে হয়েছিল, সে ক্রিজ থেকে একটু দেরিতে বেরিয়েছে, কাজেই বিপদে পড়বে সে। বাকিটা ম্যাচ রেফারির দেখার দায়িত্ব। তবে আমি মনে করি না কুইন্টনের দোষ আছে।”

তবে ব্যাপারটি যে এতটা জলবৎ তরলং ছিল না, সেটি কিছুটা পরিষ্কার দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার মন্তব্যে।

“কুইনি (ডি কক) বেশ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়েছে। কেউ কেউ হয়তো এটি নিয়ে সমালোচনা করতে পারে যে খেলাটির চেতনার সঙ্গে যায় না। তবে আমাদের জন্য উইকেটটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। জামান (ফখর) লক্ষ্যের কাছে এগিয়ে যাচ্ছিল। হ্যাঁ, কুইনি বেশ চতুর ছিল এখানে।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে আলোচনা। বর্তমান-সাবেক ক্রিকেটাররা থেকে শুরু করে অনেকে জানাচ্ছেন নিজের অভিমত।