এমন কিছুর অভিজ্ঞতা আগে হয়নি বাংলাদেশ কোচের

বৃষ্টির মধ্যেই খেলতে হয়েছে। খেলা বন্ধ হওয়ার পর আবার বৃষ্টি থামার আগেই খেলা শুরু হয়ে গেছে। রান তাড়া শুরুর সময়ও লক্ষ্য জানা ছিল না। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে এরকম অদ্ভুতুড়ে অনেক কিছুর মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে বাংলাদেশ দলকে। কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বললেন, এমন কিছু তিনি আগে কখনও দেখেননি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2021, 01:23 PM
Updated : 30 March 2021, 02:09 PM

নেপিয়ারে মঙ্গলবার ম্যাচটিতে নিউ জিল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের সময় বৃষ্টি বাগড়া দেয় দুই দফায়। একবার খেলা বন্ধ থাকে ২৫ মিনিট। ওভার কাটা পড়েনি তখন। আরেকবার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয় ১৭.৫ ওভারের পর। নিউ জিল্যান্ডের রান ছিল ৫ উইকেটে ১৭৩। কিউইরা এরপর আর ব্যাটিংয়ে নামতে পারেনি।

রান তাড়ায় ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন (ডিএলএস) পদ্ধতিতে বাংলাদেশের লক্ষ্য চূড়ান্ত করা নিয়ে বাঁধে বিপত্তি। নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেটের অফিসিয়াল টুইটারে জানানো হয়, ১৬ ওভারে বাংলাদেশকে করতে হবে ১৪৮। টিভি ধারাভাষ্যকাররাও একই লক্ষ্যের কথা জানান। পাশাপাশি অবশ্য এটাও বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে তারা নিশ্চিত নন লক্ষ্য নিয়ে।

বাংলাদেশের ইনিংসে ১.৩ ওভার হওয়ার পর আবার থামে খেলা। লক্ষ্য নিয়ে সংশয় যে তখনও দূর হয়নি! বাংলাদেশ কোচ ডমিঙ্গোকে দেখা যায় ম্যাচ রেফারির সঙ্গে কথা বলতে। বেশ কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকার পর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়, ১৬ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য ১৭০।

এই লক্ষ্যও শেষ পর্যন্ত ঠিক থাকেনি। বাংলাদেশের ইনিংস চলার সময় আবার জানানো হয়, লক্ষ্য ১৭১। বাংলাদেশ অবশ্য শুরুতে বলা ১৪৮ রানের লক্ষ্যও ছুঁতে পারেনি। থমকে যায় ১৪২ রানে।

ম্যাচের পর ডমিঙ্গোর সংবাদ সম্মেলনে এসব নিয়েই প্রশ্ন হলো বেশি। বাংলাদেশ কোচ বললেন, নতুন কিছুর স্বাক্ষী হলেন তিনি।

“আমার মনে হয় না, আগে এমন কোনো ম্যাচে ছিলাম, যেখানে ব্যাটিংয়ে নামার সময় ব্যাটসম্যানরা জানে না লক্ষ্য কত। জানা নেই ডাকওয়ার্থ-লুইসে লক্ষ্য কত। কারও কোনো ধারণা ছিল না, ৫ ওভারে আমাদের কত দরকার বা ৬ ওভারে। কোনো ম্যাচে এরকম দেখিনি।”

“আমার মনে হয় না, লক্ষ্য চূড়ান্ত হওয়ার আগে বা কোন পর্যায়ে আমাদের কত রান দরকার, সেটা নিশ্চিত হওয়ার আগে খেলা শুরু করা ঠিক হয়েছে। আমার মনে হয় না, ব্যাপারটি যথেষ্ট ভালো ছিল।”

লক্ষ্য চূড়ান্ত না হওয়ার পরও কেন খেলা শুরু হলো, সেটির কারণ জানালেন ডমিঙ্গো। যদিও তিনি সেই ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত নন।

“তারা প্রিন্ট আউটের জন্য অপেক্ষা করছিল। হিসাব-নিকাশ চলছিল। কিন্তু খেলা শুরু করার জন্য আর অপেক্ষা করতে পারছিল না, কারণ সময় চলে যাচ্ছিল। সব মিলিয়ে ব্যাপারটি হতাশার।”

“তারা যখন অপেক্ষা করছিলই, তাহলে খেলা শুরু করার প্রয়োজন ছিল না। আমাকে তারা বলেছে যে সাধারণ ইনিংসের ২-১ বল হতে হতেই এটা বের করে ফেলতে পারে। কিন্তু এখানে তারা পারেনি, এজন্য দেরি হচ্ছিল। আরও অনেক কিছু হচ্ছিল। অজুহাত দিচ্ছি না, তবে খুবই হতাশাজনক আমাদের জন্য।”

বাংলাদেশের জন্য হতাশার ঘটনা হয়েছে বোলিংয়ের সময়ও। টিপটিপ বৃষ্টির মধ্যেই মাঠে নামতে হয়েছে দলকে, বৃষ্টিতে খেলা দ্বিতীয় দফা বন্ধ হওয়ার আগে অনেকটা সময় বৃষ্টির মধ্যে বোলিং-ফিল্ডিং করতে হয়েছে। এমন কিছুও ডমিঙ্গো দেখেননি আগে।

“এত বৃষ্টির মধ্যে এতটা সময় ধরে কোনো দলকে ফিল্ডিং করতে দেখিনি আগে। বল ভেজা ছিল, পিছলে যাচ্ছিল। কোনো অজুহাত দিচ্ছি না। কিন্তু কন্ডিশন থেকে শুরু করে সবকিছুই যেন আজ আমাদের বিপক্ষে ছিল। এর আগে আমি এটাও দেখিনি যে বৃষ্টির মধ্যে কোনো দলকে মাঠে নামতে হচ্ছে। আগে জানতাম, বৃষ্টি না থামলে কাভার সরানো হয় না, খেলা আবার শুরু করা যায় না। জানি না নিয়ম বদলেছে কিনা।”

ডিএলএস স্কোর নিয়ে সংশয়ের কথা ম্যাচ শেষে বললেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও।

“শুরুতে একটু সংশয় ছিল। আমরা জানতাম না ৫ ওভারে কত করতে হবে বা ডিএলএস স্কোর ক্রমাগত বদলাচ্ছিল স্কোরকার্ডে। সংশয় ছিল। তবে খেলায় এরকম হতে পারে।”

এই সিরিজ থেকে বিশ্রাম পাওয়া নিউ জিল্যান্ডের অলরাউন্ডার জিমি নিশামও টুইটারে জানালেন নিজের বিস্ময়ের কথা।

“লক্ষ্য কত, এটা না জেনেই কিভাবে রান তাড়া শুরু করা সম্ভব? পাগলাটে ব্যাপার।”