দলের জয়ের ক্ষুধা তীব্র, দাবি মাহমুদউল্লাহর

ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ দলের মানসিকতায় চোখে পড়েনি লড়াইয়ের ইচ্ছা। দলের শরীরী ভাষায় ছিল অসহায় আত্মসমপর্ণের ছাপ। তবে ক্রিকেটারদের ভেতর নাকি জয়ের ক্ষুধা প্রচণ্ড! অন্তত মাহমুদউল্লাহর দাবি এরকমই। ছোট সংস্করণের ক্রিকেটে তার আশা বড়। টি-টোয়েন্টি সিরিজে দল সেরাটা দিতে পারবে বলে আশা বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2021, 11:19 AM
Updated : 27 March 2021, 01:11 PM

৩-০ ব্যবধান যতটা হতাশার, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তার চেয়েও বেশি হতাশার ছিল সম্ভবত বাংলাদেশের হারের ধরন। তিন ম্যাচের দুটিতে কোনোরকম লড়াই করতেও পারেনি বাংলাদেশ। আরেকটিও হেরেছে স্পষ্ট ব্যবধানে। জয়ের কোনো তাড়নাই ফুটে ওঠেনি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স ও শরীরী ভাষায়।

মাহমুদউল্লাহ তবু শোনাচ্ছেন আশার গান। হ্যামিল্টনের ম্যাচ দিয়ে রোববার শুরু হচ্ছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। অধিনায়কের আশা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে দারুণ কিছু উপহার দেবে দল।

“আমরা জানি, এখানকার কন্ডিশন সবসময়ই আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং। এটা আমরা দেখেছি ওয়ানডে সিরিজে, তারা নিজেদের কন্ডিশন খুব ভালোভাবে ব্যবহার করেছে। ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমরা ভালো করিনি। যদিও আমাদের বোলাররা ভালো করেছে, কিন্তু ফিল্ডিংয়ে ভুলের কারণে আমরা ফল নিজেদের পক্ষে নিতে পারিনি।”

“টি-টোয়েন্টিতে আমরা যদি কোনোরকম জড়তা (না নিয়ে)… এবং ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলতে পারি, ফল আমাদের পক্ষে আনা সম্ভব। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের জয়ের ক্ষুধা এখনও তীব্র আছে এবং আমরা মুখিয়ে আছি। আশা করি, কালকে আমরা নিজেদের সেরাটা খেলতে পারব।”

বিশ্রাম পেয়ে নিউ জিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি দলে নেই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন, টিম সাইফার্ট, মিচেল স্যান্টনার, জিমি নিশাম, কাইল জেমিসন ও ট্রেন্ট বোল্ট। চোটের কারণে আগে থেকেই নেই কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। তারপরও তারা দারুণ শক্তিশালী ও অলরাউন্ড দল।

নিউ জিল্যান্ড ক্রিকেটের সাম্প্রতিকতম সেনসেশন ফিন অ্যালেনের অভিষেক হতে পারে এই ম্যাচে। সম্প্রতি ঘরোয়া সুপার স্ম্যাশ টি-টোয়েন্টিতে ১১ ম্যাচে ১৯৩.৩৩ স্ট্রাইক রেট ও ৫৬.৮৮ গড়ে ৫১২ রান করেন ২১ বছর বয়সী এই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান। এছাড়া ডেভন কনওয়ে, মার্ক চাপম্যান, গ্লেন ফিলিপসরা একাই হয়ে উঠতে পারেন নায়ক। বোলিংয়ে চোট কাটিয়ে ফিরেছেন দুই গতি তারকা লকি ফার্গুসন ও অ্যাডাম মিল্ন।

মাহমুদউল্লাহ তবু আত্মবিশ্বাসী। তার মতে, ছোট সংস্করণের ক্রিকেটে শীর্ষ দল ও তলানির দলের ব্যবধানও অনেক কম থাকে।

“আমি মনে করি, টি-টোয়েন্টি এমন একটি সংস্করণ, যেখানে ছোট-বড় দল বলে কিছু নেই। র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল হোক বা নয়-দশ নম্বর, নিজেদের দিনে যদি পারফর্ম করে, দু-একজন ক্রিকেটার যদি অসাধারণ খেলে, ব্যটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে আমরা যদি প্রয়োগ করতে পারি, বাস্তবায়ন যদি ভালোভাবে হয়, আমরা যে কোনো দলকে হারাতে পারি, এটা আমাদের বিশ্বাস। টি-টোয়েন্টি এমন একটি সংস্করণ, একটা দিনের খেলা, ওইদিনে যে ভালো খেলবে, তাদের পক্ষেই ভালো করা সম্ভব।”

ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের সবচেয়ে দৃষ্টিকটু ছিল ফিল্ডিং। ক্যাচ পড়েছে দেদার, মিস ফিল্ডিং হয়েছে অসংখ্যবার। এই জায়গায় কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয় মাহমুদউল্লাহকেও। তার ভুলও কম নয়। টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে সেই তিনিই বাতলে দিলেন এই কন্ডিশনে ভালো ফিল্ডিংয়ের উপায়।

“আমার মনে হয়, ম্যাচ সচেতনতা সবসময় গুরুত্বপূর্ণ এই ধরনের কন্ডিশনে, যেখানে সবসময় বাতাস থাকবে, অনেক সময় উঁচু ক্যাচ বা ফ্ল্যাট ক্যাচগুলি…যেহেতু বলগুলি অনেক দ্রুত ট্র্যাভেল করে এখানে, ওটার জন্য প্রস্তুত থাকা গুরুত্বপূর্ণ। যদি প্রতিটি ফিল্ডার সবসময় সতর্ক থাকি, সেটা আমি হই বা অন্য কেউ, যে সুযোগ এলে ধরবই, ছোট ছোট সুযোগগুলো যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি, আমরা আশা করি পার্থক্য গড়তে পারব।” 

রোববার ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায়।