সেঞ্চুরির পর নাসিরের ৪ উইকেট

প্রত্যাবর্তনের মঞ্চ হিসেবে জাতীয় ক্রিকেটকে বেছে নেওয়া নাসির হোসেন আলো ছড়ালেন অলরাউন্ড নৈপুণ্যে। প্রথমে লড়াকু সেঞ্চুরিতে দলকে টানার পর ভালো করেছেন বোলিংয়েও। চার উইকেট নিয়ে ঢাকা বিভাগকে কম রানে থামিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন রংপুর বিভাগের আশা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2021, 01:04 PM
Updated : 24 March 2021, 03:03 PM

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে জমে উঠেছে জাতীয় লিগের প্রথম স্তরের ম্যাচ। জয়ের জন্য শেষ দিনে ২২৯ রান চাই রংপুরের, ঢাকার চাই ৮ উইকেট।

নাসিরের সেঞ্চুরির পরও ১৩৫ রানের লিড পায় ঢাকা। ১৫ উইকেট পতনের দিনে প্রতিপক্ষকে ১২৮ রানে থামিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে রংপুর। উইকেট থেকে বোলাররা বেশ সহায়তা পাওয়ায় এরপরও কাজটা কঠিন হতে পারে নাসিরদের জন্য।

একটুর জন্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেটের স্বাদ পাননি নাসির। ২৫২ বলে চার ছক্কা ও ১১ চারে ১১৫ রান করার পর এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার ২১ রানে নেন ৪ উইকেট।

৭ উইকেটে ১৯৪ রানে দিন শুরু করা রংপুর বুধবার প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ২৩০ রানে।

আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান শুরুতে ছিলেন সাবধানী। তবে নিজের দোষে আউট হন আলাউদ্দিন বাবু। নাজমুল ইসলাম অপুর স্টাম্প সোজা বলে অহেতুক স্লগ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন তিনি। তখনও সেঞ্চুরি থেকে ৪ রান দূরে ছিলেন নাসির।

৯৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি থেকে ১ রান দূরে বাঁহাতি স্পিনার নাজমুলকে সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হতে বসেছিলেন। পরের বলেই ফ্লিক করে সিঙ্গেল নিয়ে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। ২১৮ বলে পৌঁছান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অষ্টম সেঞ্চুরিতে।

এরপর বেশিদূর এগোয়নি রংপুরের ইনিংস। রিশাদ হোসেনকে কট বিহাইন্ড করার পর নাসিরকে বোল্ড করে দেন সালাউদ্দিন শাকিল।

শতরানের লিড পাওয়া ঢাকা প্রতিপক্ষের স্পিনে দাঁড়াতেই পারেনি দ্বিতীয় ইনিংসে।

দুই ওপেনার আব্দুল মজিদ ও রনি তালুকদার আউট হন থিতু হয়ে। মজিদকে কট বিহাইন্ড করার পর প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরি করা সাইফ হাসান ও মাইদুল ইসলাম অঙ্কনকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন সোহরাওয়ার্দী শুভ। সাইফ এবার ১৫ বল খেলে করতে পারেন কেবল ২।

রনিকে ফেরানোর পর তাইবুর রহমানের প্রতিরোধ ভাঙেন মাহমুদুল। নাদিফ চৌধুরীকে ফিরিয়ে শিকার শুরু করেন নাসির। ৮০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে তখন ভীষণ বিপদে ঢাকা।

নাসিরের ছোবল এড়িয়ে আরাফাত সানি জুনিয়রের লড়াকু ব্যাটিংয়ে ১২৮ পর্যন্ত যেতে পারে ঢাকা। দলের শেষ ৪৮ রানের ৪০ রানই তরুণ এই অলরাউন্ডারের।

শুভাগত হোম চৌধুরিকে ফেরানোর পর সুমন খানকে স্টাম্পড করেন নাসির। রান আউটে কাটা পড়েন নাজমুল। সালাউদ্দিনকে ফিরিয়ে ৪৫.৫ ওভারে ঢাকাকে গুটিয়ে দেন নাসির। ৩৬ বলে তিনটি করে ছক্কা ও চারে ৪০ রানে অপরাজিত থাকেন সানি জুনিয়র।   

বাঁহাতি স্পিনার সোহরাওয়ার্দী শুভ ২৬ রানে নেন তিন উইকেট। অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মাহমুদুল ২ উইকেট নেন ৩৯ রানে।

২৬৪ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়ায় শেষ বেলায় দ্রুত দুই ওপেনারকে হারিয়েছে রংপুর। তানবীর হায়দারকে সানি জুনিয়র বোল্ড করার পর জাহিদ জাবেদকে এলবিডব্লিউ করেছেন নাজমুল।

প্রমোশন পেয়ে চারে নামা মাহমুদুলকে নিয়ে বাকি সময় নিরাপদে কাটিয়ে দেন সোহরাওয়ার্দী। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা ১ম ইনিংস: ৩৬৫

রংপুর ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১৯৪/৭) ৯৩.৪ ওভারে ২৩০ (নাসির ১১৫, আলাউদ্দিন ২২, রিশাদ ২, মুকিদুল ০*; সুমন ১৫-৬-৩১-২, সালাউদ্দিন ১২.৪-৬-১২-২, নাজমুল ৩৯-৯-৮৯-৪, শুভাগত ৮-২-২৭-১, সানি জুনিয়র ১৪-৫-২৮-১, সাইফ ৪-০-১৮-০, তাইবুর ১-০-৪-০)

ঢাকা ১ম ইনিংস: ৪৫.৫ ওভারে ১২৮ (মজিদ ১২, রনি ২১, সাইফ ২, মাহিদুল ৪, তাইবুর ১৫, শুভাগত ১৯, নাদিফ ৫, সানি জুনিয়র ৪০*, সুমন ৩, নাজমুল ০, সালাউদ্দিন ০ ; আলাউদ্দিন ৩-১-৪-০, মুকিদুল ৩-০-৯-০, সোহরাওয়ার্দী ১১-৩-২৬-৩, মাহমুদুল ১৬-২-৩৯-২, নাঈম ২-০-১৭-০, নাসির ৯.৫-১-২১-৪, তানবীর ১-০-৭-০)

রংপুর ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৬৪) ১৭ ওভারে ৩৫/২ (জাহিদ ৫, তানবীর ৫, সোহরাওয়ার্দী ১২*, মাহমুদুল ৪*; সুমন ২-১-৩-০, নাজমুল ৭-২-৯-১, আরাফাত জুনিয়র ৪-০-৮-১, শুভাগত ৩-০-৪-০, সাইফ ১-০-২-০)