সেঞ্চুরির দুয়ারে নাসির, ব্যর্থ নাঈম

টুর্নামেন্ট শুরুর আগের দিন নাসির হোসেন বলেছিলেন, জাতীয় লিগে রানের বন্যা বইয়ে দিতে চান। তার ব্যাটে মিলছে সেই আভাস। দাঁড়িয়ে আছেন সেঞ্চুরির দুয়ারে। ব্যাটিং বিপর্যয়ে বিপদে পড়া দলকে নিরাপদ জায়গায় নিতে লড়াই করছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। ভালো করতে পারেননি নাঈম ইসলাম, আরিফুল হকরা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 March 2021, 12:44 PM
Updated : 23 March 2021, 02:55 PM

প্রথম স্তরের এই ম্যাচের দ্বিতীয় দিন ঢাকাকে ৩৬৫ রানে থামিয়ে রংপুর দিন শেষ করেছে ৭ উইকেটে ১৯৪ রানে। এখনও ১৭১ রানে পিছিয়ে আছে রংপুর।

নাসির দিন শেষ করেছেন ৯৩ রানে অপরাজিত থেকে। তার ১৮৫ বলের ইনিংসে ১১টি চারের সঙ্গে ছক্কা ২টি।

গত কিছুদিন তিনি শিরোনামে ছিলেন মাঠের বাইরের খবরে। এছাড়া গত মৌসুমের আগে তার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয় তিনটি! লম্বা সময় পর মাঠে ফিরলেও আবার কোভিড বিরতির পর দেশের কোনো টুর্নামেন্টে খেলতে পারেননি হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট ও ফিটনেস সমস্যায়। সেই চোটের আতঙ্ক পুরোপুরি কাটেনি, বলেছিলেন লিগ শুরুর আগের দিন। তবে, প্রথম রাউন্ডেই রান পাওয়ায় নিশ্চিতভাবে বাড়বে তার আত্মবিশ্বাস।

বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে মঙ্গলবার ৮ উইকেটে ২৯৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিনে ব্যাটিংয়ে নেমে আরও ৬৮ রান যোগ করে ঢাকা।

আরাফাত সানি জুনিয়র ও সুমন খানের ৬৩ রানের নবম উইকেট জুটিতে দলটির রান স্পর্শ করে সাড়ে তিনশ। ৪৯ বলে ৩ চারে ২৪ রান করা সুমনকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন নাসির। সালাউদ্দিন শাকিলকে বোল্ড করে ইনিংসের ইতি টানেন নাঈম। ৮৪ বলে ৬ চারে ৪২ রানে অপরাজিত ছিলেন সানি জুনিয়র।

প্রথম দিন ৪ উইকেট পাওয়া আলাউদ্দিন বাবু ধরতে পারেনি আর কোনো শিকার।

ব্যাটিংয়ে রংপুরের শুরুটা ছিল সাবধানী। জাহিদ জাবেদ ও তানবীর হায়দার কাটিয়ে দেন আট ওভার। এরপরই হঠাৎ এলোমেলো হয়ে যায় দলটি। ১৯ থেকে ২২, ৩ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের সঙ্গে বিদায় নেন তিনে নামা সোহরাওয়ার্দী শুভ।

তানবীরকে কট বিহাইন্ড করে শুরুর জুটি ভাঙেন নাজমুল ইসলাম অপু। এই বাঁহাতি স্পিনারের বলেই এলবিডব্লিউ হন জাহিদ। শুভাগত হোমের অফ স্পিনে এলবিডব্লিউ সোহরাওয়ার্দীও।

এরপরই উইকেটে আসেন নাসির। একটু পর আবার জোড়া ধাক্কা খায় রংপুর। পেসার সুমন নিজের পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে দেন নাঈম ও আরিফুলকে। নাঈম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে, আরিফুল শর্ড থ্যার্ড ম্যানে। দুই অঙ্কে যেতে পারেননি কেউই।

৪১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন ভীষণ বিপদে রংপুর। মাহমুদুল হাসানের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়েন নাসির। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দুজন এগিয়ে নেন দলকে।

৮২ বলে স্পর্শ করে জুটির পঞ্চাশ। নাসির ফিফটি পূর্ণ করেন ১১ বলে। মাহমুদুলের বিদায়ে ভাঙে ১৭০ বলে ৮৪ রানের জুটি। অফ স্পিনার সানি জুনিয়রের বলে এলবিডব্লিউ হওয়া ব্যাটসম্যান ৭৮ বলে ৪টি চারে করেন ২৭ রান।

এরপর বেশিক্ষণ টেকেননি আকবর আলী। ২০ বলে ১০ রান করে নাজমুলের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন এই কিপার ব্যাটসম্যান।

আলাউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছেন নাসির। ৫২ বলে ৩৮ রানের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন আছেন দুজন।

৬৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে এ দিন ঢাকার সেরা বোলার নাজমুল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা বিভাগ ১ম ইনিংস: (আগের দিন ২৯৭/৮) ১০৬.৩ ওভারে ৩৬৫ (সানি জুনিয়র ৪২, সুমন ২৪, সালাউদ্দিন ১০; আলাউদ্দিন ১৬-২-৪৬-৪, মুকিদুল ১৪-৩-৪৩-১, আরিফুল ৪-১-৯-০, সোহরাওয়ার্দী ২৬-২-৮০-১, রিশাদ ১৩-০-৫৯-০, মাহমুদুল ২৩-৪-৭৮-২, তানবীর ৫-০-১৮-০, নাসির ৫-১-১০-১, নাঈম ০.১-০-১-১)

রংপুর ১ম ইনিংস: ৭১ ওভারে ১৯৪/৭ (জাহিদ ১৫, তানবীর ৫, সোহরাওয়ার্দী ১, নাঈম ৬, নাসির ৯৩*, আরিফুল ৩, মাহমুদুল ২৭, আকবর ১০, আলাউদ্দিন ১২*; সুমন ১১-৬-২৩-২, সালাউদ্দিন ৯-৩-১২-০, নাজমুল ২৮-৫-৬৯-৩, শুভাগত ৮-২-২৭-১, সানি জুনিয়র ১০-৪-২২-১, সাইফ ৪-০-১৮-০, তানবীর ১-০-৪-০)